ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সংকট কাটাতে পেঁয়াজ চাষ বাড়াতে চায় কৃষি বিভাগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২০
সংকট কাটাতে পেঁয়াজ চাষ বাড়াতে চায় কৃষি বিভাগ

রাজশাহী: ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর থেকেই অস্থির হয়ে উঠেছিল দেশের পেঁয়াজের বাজার। কয়েকদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়।

আবার ভারত অল্প কিছু পেঁয়াজ রপ্তানি করবে, এই খবরে দাম কিছুটা কমেও। গত বছর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণার পর দাম রেকর্ড ৩শ টাকা ছাড়িয়েছিল।

পরিসংখ্যান বলছে- বিগত কয়েক বছর ধরে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসেই দেশে পেঁয়াজের সংকট দেখা দিচ্ছে। তাই সংকট মোকাবিলায় এবার পেঁয়াজ চাষে গুরুত্ব দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। সরকার ও কৃষি মন্ত্রণালয় দেশব্যাপী পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়াতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে। যা বাস্তবায়ন হলে আগামী দুই বছরের মধ্যে পেঁয়াজ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে আশা করা হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীতে পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়াতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীতে তাহিরপুরি জাতের পেঁয়াজ চাষ সবচেয়ে বেশি হয়। চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ১৬ হাজার ৭৯১ হেক্টর জমিতে তাহিরপুরি জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ছিল ১৬ দশমিক ৭৩ টন। মোট উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৮২ হাজার ৭৯৯ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে আগামী মৌসুমে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে উৎপাদিত পেঁয়াজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় বিক্রি করতে পারবেন কৃষকেরা।  

বর্তমানে পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে দফায় দফায় কৃষকদের সঙ্গে উঠান বৈঠক, সমাবেশ ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষকরা যাতে পেঁয়াজের ভালো ফলন পান সেই লক্ষ্যে সার, সেচসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সার, কীটনাশক ও সহজ শর্তে ঋণসহ প্রান্তিক কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।  

এদিকে কৃষকরা বলছেন, কৃষি বিভাগ থেকে পেঁয়াজ চাষ প্রশিক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় উৎপাদিত পেঁয়াজ যদি সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে কেনে তাহলে পেঁয়াজ চাষ আরও বাড়বে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার মথুরা গ্রামের কৃষক নূরুল আমিন বলেন, প্রতিবছর পেঁয়াজের চাষ করি। গত বছর এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছিলাম। কিন্তু ভরা মৌসুমে আমরা তেমন নায্য দাম পাইনি। এবছর কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে আরও দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করবো। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম ভালো আছে। বীজ হিসেবে পেঁয়াজ বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যায়।  

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আগামী মৌসুমে জেলায় পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে পেঁয়াজ লাগানোর জন্য উঠান বৈঠক ও বিভিন্ন সমাবেশের মাধ্যমে তাদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কৃষকরা যাতে পেঁয়াজের ভালো ফলন পান সেজন্য সার, সেচ ও কীটনাশক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হচ্ছে।  

বর্তমান বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর চাহিদা ও ভালো দাম থাকায় কৃষকরাও ধান, গম, ভুট্টা ও শীতকালীন সবজির পর পেঁয়াজ চাষেই বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে ধারণা দেন রাজশাহী কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২০
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।