ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

নতুন কমিশনে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে

এস এম এ কালাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২০
নতুন কমিশনে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে পুঁজিবাজার লোগো

ঢাকা: দীর্ঘ মন্দার পর ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। টানা ১০ (২৬ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট) কার্যদিবস পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান হয়েছে।

নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তাদের শক্তিশালী অবস্থানের কারণে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে। আস্থা ফিরে পাওয়ায় বাজারে তারল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

একাধিক বিনিয়োগকারী, স্টেকহোল্ডার অর্থনীতিবিদ বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এমনটি জানিয়েছেন।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, গত এক দশকে আগের কমিশন একাধিক পদক্ষেপ নিলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে সক্ষম হননি। শুধু তাই নয় খাইরুল কমিশন বাজার মনিটরিংয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তাদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ছিল না। তবে নতুন কমিশন শুরু থেকেই বাজার স্থিতিশীলতায় শক্তিশালী অবস্থান নেওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। এতে করে প্রতিনিয়ত বাজারে তারল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করেন তারা।

এ ব্যাপারে বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, গত এক দশকে খায়রুল কমিশনের ব্যর্থতার কারণে বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছিল। তবে নতুন এই কমিশন গঠন হওয়ার পর থেকেই বাজার স্থিতিশীলতায় শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারা বাজারে তারল্য বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাদের প্রতিটি পদক্ষেপে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ছে। তাই পুঁজিবাজারে বর্তমানে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময় এখন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তারল্য নয় আস্থা সংকটের কারণে বাজারে গতি ফিরছিল না বলে মনে করেন ইবিএল সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী আতাউল্লাহ নাইম।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে আস্থার সংকট চরমভাবে দেখা দিয়েছিল। গত এক দশকে আগের কমিশন বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে।  

তিনি আরো বলেন, বাজারে চলমান যে সূচকের উত্থান সেটি স্বাভাবিক। বাজার পড়তে পড়তে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। নতুন এই চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ায় পুঁজিবাজারে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে বিনিয়োগকারীরা।

বাজারে শেয়ারের দাম অনেকটাই কমে গিয়েছিল এখন টানা বাড়ছে এটি একেবারেই স্বাভাবিক। তবে শেয়ারের দাম কমানো বা বাড়ানো এটা বিএসইসি কাজ নয় কিন্তু নতুন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একাধিক সাহসী দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করায় পুঁজিবাজারে ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসছে বলে জানালেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৬-১৭ সালে অনেক বিনিয়োগকারী বাজারে এসেছিল কিন্তু তারা ধোকা খেয়েছে। সে সময় কিছু দুর্বল কোম্পানি বাজারে আসায় তারা সেগুলোতে বিনিয়োগ করে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হন। এতে করে আস্থার সংকট দেখা দেয় যেটা চলমান ছিল। তবে নতুন কমিশনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ বিশেষ করে বড় কোম্পানিকে জরিমানা, ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, পরিচালকদের দুই শতাংশ শেয়ার ধারণের টাইম দিয়ে দেওয়া এবং দুষ্ট চক্রের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ায় বাজারে বিনিয়োগকারীরা আসছেন। একই সঙ্গে তারল্য বাড়ছে বলে তিনি জানান।

এদিকে শেয়ারের দাম এতটাই কমে গিয়েছিল যে টানা উত্থানেও আশানুরূপ স্থানে পৌঁছায়নি বলে মনে করেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ।  

তিনি বলেন, বাজারে আস্থা ও তারল্য সংকট চলছিল। শেয়ারের দাম পড়তে পড়তে একেবারেই তলানীতে গিয়ে ঠেকেছিল। তবে নতুন কমিশন আসার পর বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে তিনি মনে করেন।

এদিকে টানা ১০ (২৬ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট) কার্যদিবসে ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স ৪৬৫ এবং সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২৬৭ পয়েন্ট। একই সঙ্গে এই ১০ কার্যদিবসের উভয় পুঁজিবাজারে গড় লেনদেন বেড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২০
এসএমএকে/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।