ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

৮.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন কঠিন হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২০
৮.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন কঠিন হবে কোভিড-১৯ ও বাংলাদেশের শ্রম বাজারের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক ওয়েবিনার

ঢাকা: বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কম হলে এবং রোগ সংক্রমণের হার উচ্চ থাকলে ৮.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন কঠিন হবে বলে অভিমত দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা।

শনিবার (১৮ জুলাই) ‘কোভিড-১৯ ও বাংলাদেশের শ্রম বাজারের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সানেম সংযোগের ষষ্ঠ পর্বে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে ড. সায়মা হক বিদিশা বর্তমান অবস্থার একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরে এসব কথা বলেন।

কোভিড-১৯ উত্তর চ্যালেঞ্জগুলোকে চিহ্নিত করে ড. সায়েমা বলেন, চলমান মহামারির প্রেক্ষাপটে কর্মসংস্থানের জন্য উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলোর সাথে স্থানীয় চাহিদা ও বৈশ্বিক চাহিদায় হ্রাস, দেশফেরত প্রবাসী শ্রমিকদের ফলে সৃষ্ট শ্রম প্রবাহ, উৎপাদন কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতা এবং বেসরকারি বিনিয়োগের ধীর গতিকে সম্পর্কিত করা যায়।

তিনি বলেন, মজুরিভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রধান বাধা হচ্ছে দেশীয় অর্থায়নের অভাব, বৈশ্বিক মন্দা, রপ্তানি চাহিদা ও বাণিজ্য আত্মবিশ্বাসে ধস। অন্যদিকে আত্মকর্মসংস্থান তৈরিতে প্রধান বাধা দেশীয় চাহিদার শ্লথ গতি, পুঁজি সংকট, অর্থায়ন পাওয়া ও অনানুষ্ঠিকতা।

এসব চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় কিছু প্রস্তাব দেন ড. সায়মা হক। যেমন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণের শর্ত শিথিল করা ও সুদের হার কমানো, প্রণোদনা প্যাকেজ ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ না করে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিতরণ, দেশ-ফেরত প্রবাসী, নারী উদ্যোক্তা ও তরুণদের জন্য আলাদা ঋণের ব্যবস্থা করা।

ড. বিদিশার প্রবন্ধ নিয়ে আলোচনায় সানেমের চেয়ারম্যান ড. বজলুল হক খন্দকার বলেন, মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক নীতি অন্য দেশের তুলনায় শক্তিশালী নয়।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশের শ্রম বাজার নিয়ে গবেষণায় তথ্যের সংকট একটি বিরাট সমস্যা। দেশের সামনে এখন তিনটি চ্যালেঞ্জ: কোভিড-১৯ রোগের বিস্তার ঠেকানো, কর্মসংস্থান ও জীবিকা, এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধার।

অর্থনীতি সচল করার পর থেকে এটির গতি ধীরে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে, এতে হয়তো পুরোপুরি অনুকূল অবস্থানে পৌঁছানো যাবে না।

ড. মনসুর আরও বলেন, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি হবে না যদি না মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি না হয়। অন্যদিকে সরকারি খাতে বিনিয়োগ হলেও, সম্পদ ও সামর্থ্য নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যায়।

ড. সেলিম রায়হান তার বক্তব্যে বিশ্লেষণ করে দেখান যে, প্রবৃদ্ধি হলেও, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। তিনি বলেন, শ্রমবাজারের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী না।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) অধ্যাপক শামসুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুয়োমো পুটিয়ানেন।

আলোচক ছিলেন পলিসি রিসার্চ ইনিস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, সানেমের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন।

ওয়েবিনারটিতে প্রায় ৬০ জন গবেষক, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষক, উন্নয়ন কর্মী, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২০
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।