ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা হলেও আপাতত চালের দাম বাড়ার কারণ নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৪ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২০
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা হলেও আপাতত চালের দাম বাড়ার কারণ নেই চাল। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে শুরু হওয়া বন্যায় রোববার (২৮ জুন) পর্যন্ত ১২ জেলা কবলিত হয়েছে। নতুন করে দুটি নদীসহ মোট ৯টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করোনা ও এই বন্যার পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে চালের দাম বাড়ার ঘটনা ঘটছে। কিন্তু বন্যা হলেও এ মুহূর্তে দেশে যে পরিমাণ চালের মজুদ আছে তাতে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

তাদের মতে, দেশে এখন যে পরিমাণ চাল রয়েছে তাতে আগামী এক মাসে এর দাম বাড়বে না, বরং কমবে। তবে বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে পরবর্তী সময়ে এ অবস্থার ভিন্নতা ঘটতে পারে।

এদিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর বৃহৎ চালপট্টি বাবু বাজার, শ্যামবাজারে চালের দাম না বাড়লেও ছোট-বড় অন্য অনেক মার্কেটের দোকানগুলোতে চালের দাম বাড়তি রাখা হচ্ছে, বিশেষ করে মোটা চালের ক্ষেত্রে।

রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও ও কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রির দোকানগুলোতে দেখা যায় প্রতি কেজি গুটিচাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকায়, যা দুই দিন আগেও ৩৯ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল। এছাড়া কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি পায়জাম চাল ৪৬ টাকা ও স্বর্ণ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৩ টাকায়। দাম বেড়ে আঠাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকায়, আতপ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৬ টাকায়। এছাড়া সরকারি চালেরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ৪২ টাকায়।

এখনও আগের দামে বিক্রি হচ্ছে কেবল চিকন চাল। এসব বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। নাজির চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৬ টাকায়।

দাম বাড়া প্রসঙ্গে কারওয়ান বাজারের পাইকার চাল ব্যবসায়ী ও শাপলা রাইসের মালিক নোমান বাংলানিউজকে বলেন, গত কিছুদিন ধরে মোটা চালের বাজার বাড়তি রয়েছে। এখন ত্রাণ বিতরণের কারণে মোটা চালের চাহিদা বেড়েছে, কিন্তু সেই তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বাড়তি।

অন্যদিকে এখন চালের দাম বাড়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে বাবু বাজার ও কদমতলি বাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, এখন কেনে চালের দাম বাড়বে? এখন দাম বাড়ার পরিবেশ হয়নি, বরং দাম কমেছে। গত দুই দিন ধরে সব ধরনের চালে কেজি প্রতি এক টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে।

মোটা চালেরও দাম বাড়ার কথা নয় জানিয়ে তিনি বলেন, মোটা চালের চাহিদা কম, তাছাড়া অন্য চালেরও ক্রেতা খুব বেশি নেই। তাই দাম বাড়ার প্রশ্নই ওঠে না। বাজারে ক্রেতা নেই, কেন দাম বাড়বে? যারা দাম বাড়াচ্ছে কেনো বাড়াচ্ছে জানি না।

তবে বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে আগামীতে চালের দামে হেরফের হতে পারে উল্লেখ করে নিজাম উদ্দিন বলেন, দেশে চালের মজুদ দেখে বোঝা যায় আগামী এক মাসে দাম বাড়বে না, কমবে আরও। চিন্তা বন্যা নিয়ে। দেখতে হবে এটা কতোদিন থাকে, তাতে কী পরিস্থিতি হয় ফসলের। যদি ফসলের ক্ষতি হয়, তবে আগামীতে বাজারের অবস্থা কী হবে তা বলতে পারবো না।

নিজাম উদ্দিনের কথা অনুসারে সরেজমিনে বাবু বাজার ও কদমতলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, মোটা কিংবা চিকন কোনো চালেরই দাম বাড়েনি সেখানে। বরং গত দু’দিন ধরে সব চালের দাম কিছুটা কমেছে।

এখন পর্যন্ত দেশের ১২ জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, সিলেট ও সুনামগঞ্জ।

আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ও মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকুলে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমা পার হতে পারে। এমন হলে নতুন করে রাজবাড়ী, মুন্সীগঞ্জ জেলাও যুক্ত হবে বন্যাকবলিত জেলার তালিকায়। তাছাড়া ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা, ধরলা, সুরমা, কুশিয়ারা, যদুকাটার পানিও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২০
ইএআর/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।