ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

উন্মুক্ত বাজারে অনীহা ব্যবসায়ীদের, শঙ্কা বিশিষ্টজনের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৩ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২০
উন্মুক্ত বাজারে অনীহা ব্যবসায়ীদের, শঙ্কা বিশিষ্টজনের

ঢাকা: কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে দেশের হাট-বাজারগুলো খোলা স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় সরকার। গত ১২ এপ্রিল এ সংক্রান্ত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে কাঁচাবাজারগুলো উন্মুক্ত ও খোলা স্থানে স্থানান্তরের জন্য সব জেলা প্রশাসক, জেলা-উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। এর পর পরই পুলিশের সহায়তায় বাজারগুলো খোলা স্থানে বসে।

রাজধানীর দুই সিটির অনেক বাজারকে সরিয়ে নেওয়া হয় পার্শ্ববর্তী খোলা স্থান বা মাঠে। তবে যতদিন গড়াচ্ছে ততই অহীহা তৈরি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

বিক্রি নেই এমন অজুহাতে উন্মুক্ত বাজার থেকে অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা আগের স্থানে সরিয়ে নিয়েছে দোকান। এতে শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না মোটেও। এ নিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ছোঁয়াচে রোগ কোভিড-১৯ এর বিস্তার নিয়ে।

এর আগে নয়াবাজার নবাব ইউসুফ মার্কেট কাঁচাবাজারটি আরমানিটোলা খেলার মাঠে, খিলগাঁও কাঁচাবাজার পাশের শাহজাহানপুর মৈত্রী মাঠে, মালিবাগ কাঁচাবাজার জনপথ সড়কে, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার পাশের মূল সড়কে, কারওয়ানবাজার খুচরা বাজার তেজগাঁও বিজ্ঞান কলেজের সামনের সড়কে বসিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ছোট-বড় আরও অনেক বাজার খোলা স্থানে সরানো হয়।

তবে দিন যত যাচ্ছে এসব অস্থায়ী বাজার থেকে দোকানিরা চলে যাচ্ছেন আগের স্থানে। অনেকে যাচ্ছেন পজিশন হারানোর ভয়ে। অথচ দিন দিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, তবুও মানা হচ্ছে না নিয়ম। বাজারে এর আগে ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক আর হাতে গ্লাভস পরতে দেখা গেলেও এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। নেই হাত ধোয়ার কোনো ব্যবস্থা কিংবা শারীরিক দূরত্ব।

সোহেল নামে কারওয়ানবাজারের এক খুচরা বিক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, খোলা স্থানের অস্থায়ী বাজারে ক্রেতা থাকে না, জিনিসপত্র বিক্রি হয় না। তাছাড়া কারওয়ানবাজার থেকে তেজগাঁও বিজ্ঞান কলেজে কে আসবে বাজার করতে? তাই আগের স্থানে (কারওয়ান বাজার) আবার চলে এসেছি। এখানে ক্রেতা বেশি, বিক্রিও ভালো।

একই কথা বলেন খিলগাঁও বাজারের মুরগি বিক্রেতা হাসিবুল। তিনি বলেন, খিলগাঁও মৈত্রী বাজার মাঠে বিক্রি কম হয়, তাই এখানে (খিলগাঁও বাজার) চলে এসেছি। অনেকের নিজ পজিশন (ব্যবসার স্থান) হারিয়ে গেছে, অন্যরা বসেছে।  

ব্যাংক কর্মকর্তা সুমন নামে এ বাজারের এক ক্রেতা বলেন, উন্মুক্ত স্থানে ভালো ছিল। কিন্তু কেন এখানে তারা এলো বুঝতে পারছি না। বাজারে শারীরিক দূরত্ব নেই, এতে করোনা ঝুঁকি বাড়বে।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. রাসেল সাবরিন বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি আদেশবলে তাদের (ব্যবসায়ী) খোলা উন্মুক্ত স্থানে নেওয়া হয়েছে। তাদেরতো মূল বাজারে চলে যাবার কথা বলা হয়নি, কেন যাবেন তারা। তারা যেতে চাইলে মেয়র বরাবর দরখাস্ত করতে হবে। সরকারি আদেশবলে তারা যেতে পারবেন।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বিপদ আরও বাড়তে পারে। আমাদের অপ্রয়োজনীয় চলাচল, ঘোরাঘুরি বন্ধ করতে হবে। আমি নিজেকে নিরাপদে রাখতে না পারলে এর মাধ্যমে প্রচুর মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে, অনেকের মৃত্যু ঘটবে। এ অসুস্থতার কারণে মানুষের মধ্যে ভালো থাকার যে অনুভূতি সেটা নষ্ট হয়ে যাবে। তাই শারীরিক দূরত্ব মানতেই হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২০
ইএআর/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।