ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

৩৮১ পোশাক শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত, মৃত্যু ৪ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
৩৮১ পোশাক শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত, মৃত্যু ৪ 

ঢাকা: দেশে করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) শনাক্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অন্য সব শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি করোনার থাবা থেকে রক্ষা পায়নি দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশ আসা পোশাকখাত।

এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাক শিল্প খাতের ৩৮১ জন শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণ গেছে ৪ জন শ্রমিকের।

আক্রান্ত শ্রমিকের চিকিৎসা চলছে কারখানা মালিকের অর্থায়নে।

এদিকে শ্রমিকদের করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য দেশে চালু হয়েছে ‘স্টেট অব দ্যা আর্ট কোভিড-১৯ ল্যাব’। আরও কয়েকটি চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। অনেক কারখানা আইসোলেশন খুলেছে, তবে জায়গা স্বল্পতায় ছোট কারখানা শ্রমিকের চিকিৎসা চলছে নিজ নিজ বাসায়।

শ্রমিক নেতারা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে। এটা মানা না হলে শ্রমিক মৃত্যু বলা যাবে না এটা হত্যার শামিল হবে। শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, করোনাকালে প্রতিটি কারখানায় মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। কারখানায় হাত ধোয়া, শারীরিক দূরুত্ব মানার পাশাপাশি জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এর আগে গত ৪ জুন আশুলিয়ায় ‘স্টেট অব দ্যা আর্ট কোভিড-১৯ ল্যাব’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেছিলেন, প্রতিদিন আমরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শ্রমিকদের তথ্য সংগ্রহ করছি। তাদের সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসার সব ব্যয় বহন করছে মালিকপক্ষ।

শিল্প পুলিশের তথ্যমতে, তৈরি পোশাক খাতের ১৫০টি কারখানায় ৩৮১জন পোশাক শ্রমিক এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২০২ জন শ্রমিক আর মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।

বিজিএমইএ’র ৬৫টি কারখানায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২১৪ জন, সুস্থ হয়েছেন ৭৭ জন আর মারা গেছেন ৪ জন। বিকেএমইএ’র ৩১টি কারখানায় ৯৩ জন আক্রান্ত, সুস্থ হয়েছেন ৭০ জন। বিটিএমএ’র ৩টি কারখানায় ৪ জন আক্রান্তেরর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন দু’জন। বেপজার ৫১টি কারখানায় ৭০ জন আক্রান্ত, এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫২ জন।

এছাড়া পোশাক কারখানা ছাড়া অন্য ২৪টি কারখানায় ৩৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মারা গেছেন একজন।

শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতিটি কারখানায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ও সুস্থদের তথ্য প্রতিদিন হালনাগাদ করছি। এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাক শিল্পে ৩৮১ জন শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণ গেছে ৪ জন শ্রমিকের।

শ্রমিক নেতা আবুল হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে, শুধু হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করলেই হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে এবং কোনো শ্রমিকের মৃত্যু হলে এটা হত্যার শামিল হবে।

তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই উৎপাদনে আছে কারখানা- এমন দাবি পোশাক শিল্প উদ্যোক্তাদের। এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র পরিচালক ফজলে শামিম এহসান বাংলানিউজকে বলেন, কারখানায় প্রবেশের আগে প্রতিটি শ্রমিকের হাত ধোয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাদের থার্মাল দিয়ে তাপমাত্রা মেপে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কারখানায় প্রবেশ করতে হচ্ছে। প্রবেশপথে তাদের শরীরে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে, কারখানার ফ্লারেও জীবাণুনাশক ছিঁটানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, এরপরও যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ব্যয়ভার মালিকরা বহন করছেন। অনেকে কারখানায় আইসোলেশনের ব্যবস্থা করেছেন, যাদের ছোট কারখানা তারা শ্রমিকদের বাসায় রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
ইএআর/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।