ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম, কমেছে বিক্রিও

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২০
বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম, কমেছে বিক্রিও

মাদারীপুর: ঈদের দিন মাংস আর পোলাওয়ের আবেদন ধনী-গরীব নির্বিশেষে সবার থাকে। দরিদ্র পরিবারগুলো অন্তত ঈদের দিনের জন্য হলেও পোলাওয়ের সঙ্গে মাংসের ব্যবস্থা করে থাকে। গরুর মাংসের ‘বিলাসী’ দামের কাছে অসহায় দরিদ্র ও নিম্ম আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা অনুযায়ী পছন্দ ব্রয়লার মুরগি। কম দামে পরিমাণে বেশি মাংস হওয়ায় একটি পরিবারের মাংসের চাহিদা মেটে এই মুরগিতে। তবে অন্যবারের চেয়ে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। 

ঈদকে সামনে রেখে ব্রয়লার মুরগির দাম অনেকটাই আকাশ ছোঁয়া। ফলে এক শ্রেণির মানুষ হতাশা প্রকাশ করেন মুরগির বাজার নিয়ে।

মাদারীপুরের বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজি প্রতি বয়লার মুরগি (সাদা) বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা করে। একেকটি মুরগির ওজন দেড় কেজির উপরে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার অনেকটাই বাইরে চলে গেছে ব্রয়লার মুরগি। দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা।

দোকানে মুরগি কিনতে আসা হাসান মৃধা নামে এক ভ্যানচালক বাংলানিউজকে বলেন, ফার্মের মুরগির মাংস দিয়ে যে একবেলা ভাত খাবো, সেই সুযোগও এখন আর দেখি না। আগে যেখানে কেজি প্রতি ১১০-১২০ টাকায় মুরগি কিনতাম, সেখানে এক কেজির দাম ১৭০-১৮০ টাকা। দেড় কেজির নিচে কোনো মুরগি পাওয়া যায় না। ফার্মের মুরগিতে মাংস বেশি হওয়ায় সবাই পরিমাণ মতো খেতে পারে।

দিনমজুর সালাম বলেন, ঈদের দিন মাংসের আশা সবাই করে। কিন্তু এবার মুরগির যে দাম তাতে মাংসের চিন্তা করাই দুষ্কর!

অপর এক ক্রেতা বলেন, ব্রয়লারের দাম অনেক বেড়েছে। তাই সোনালী মুরগি কিনেছি। সোনালী ২২০ টাকা কেজি। কিন্তু সোনালী মুরগির ওজন একেকটা ৮০০-৯০০ গ্রাম। রান্না করলে পোষায় না।

স্থানীয় দোকানিদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, এ বছর বয়লার (সাদা) মুরগির সংকট দেখা দিয়েছে। ফার্মেও মুরগির সংখ্যা কম। দাম বেশি। তবে সোনালী মুরগি পর্যাপ্ত রয়েছে। এই মুরগির দাম আগের মতোই।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন বাজারের মুরগির দোকানে ব্রয়লার মুরগির সংখ্যা কম। সেই তুলনায় সোনালী, পাকিস্তানি আর লেয়ার (ডিম পাড়া শেষে বিক্রি করা হয়) মুরগির সংখ্যা বেশি। তবে সাধারণ মানুষের কাছে বয়লার মুরগি জনপ্রিয়। কারণ দামের তুলনায় মাংসের পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়। অন্যদিকে, সোনালী, পাকিস্তানি আর লেয়ার মুরগির দাম স্বাভাবিক রয়েছে।

শিবচরের উৎরাইল নয়াবাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আহসান বাংলানিউজকে বলেন, সাদা মুরগির (বয়লার) দাম বেড়েছে। একারণে কম এনেছি। এতো দাম দিয়ে এই মুরগি অনেকেই কিনতে চাইবে না। ১৮০ টাকা করে বিক্রির করতে হচ্ছে ফার্মের মুরগি। অন্যদিকে, সোনালী বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা। তবে এই মুরগি এক কেজির নিচে হয়।

তিনি আরও বলেন, এ বছর দাম বেশি হওয়ায় বিক্রিও অনেক কম। ফার্মের মুরগির দাম এতো বেশি হলে গরিব মানুষ কিনবে কিভাবে।

গরুর মাংস ৫৫০ টাকা করে কেজি বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বাজারে। একটু সচ্ছল যারা তারা অনায়াসেই গরুর মাংস কিনতে পারছে। দরিদ্র ও নিম্ম আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তদের পছন্দের শীর্ষে থাকা বয়লার মুরগির দাম চলতি বছর অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে এই শ্রেণির মানুষ। একদিকে করোনায় জনজীবন স্থবির, আয়-রোজগারও থমকে গেছে। অন্যদিকে, ঈদকে সামনে রেখে মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় ঈদের দিনের মাংস-পোলাওয়ের যোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।