ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

দেশে ৫৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কোনো অ্যাকাউন্ট নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
দেশে ৫৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কোনো অ্যাকাউন্ট নেই ‘ফিনান্সিয়াল হেলথ অ্যান্ড ইটস রিলেভেন্স ইন দ্য ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক আইথ্রি রিজিওনাল লার্নিং ইভেন্ট।

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশ মানুষ একটি নিবন্ধিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মালিক। আর ৫৩ শতাংশ মানুষের কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। ৩৪ শতাংশ মানুষ ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন করেন। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষ তাদের পরিবারের এক কিলোমিটারের মধ্যে আর্থিক পরিষেবা এক্সেস পয়েন্ট সম্পর্কে সচেতন ছিলেন।

ইন্টারমিডিয়ার সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ফিনান্সিয়াল হেলথ অ্যান্ড ইটস রিলেভেন্স ইন দ্য ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক আইথ্রি রিজিওনাল লার্নিং ইভেন্টে এ তথ্য জানা যায়।

বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ৯ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ কোনো অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানে অর্থ সঞ্চয় করেন। তাদের মধ্যে ৯ দশমিক ২ শতাংশ জনগণ কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেন অথবা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে থাকেন।

আলোচকরা বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক সংলাপ বিগত ১০ বছর ধরে আলোচনায় ছিল। আর্থিক সক্ষমতার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সর্বোত্তম উপায়ে সম্ভাব্য গ্রাহকদের কীভাবে যুক্ত করা যায়, যাতে গ্রাহক এবং সেবাদাতা উভয়ের প্রয়োজন মিটবে, সে বিষয়টি মুখ্য ছিল। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ১০০ শতাংশ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অর্জন করলেও বাংলাদেশি আর্থিক পরিষেবাগুলো পেতে অ্যাকাউন্টের ব্যবহার বাড়েনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ ৬০টি ব্যাংক কাজ করছে। আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মানুষের ব্যয়, সঞ্চয়, ঋণ বিতরণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ডিজিটাল মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অবদানও অনেক।

তিনি বলেন, আমাদের দেশকে উন্নয়নশীল দেশ পরিণত করতে হলে প্রত্যেকের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এতে বীমার বিকল্প নেই। তবে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের বীমা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। ক্ষুদ্র বীমায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। শতকরা এক শতাংশ মানুষ বীমার আওতায় রয়েছে। বীমার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বন্যাকবলিত দেশ। শস্যবীমা, স্বাস্থ্যবীমা, ভ্রমণবীমা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইনোভেটিভ আইডিয়া নিয়ে আসতে পারলে এক্ষেত্রে সফল হওয়া যাবে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের ২৫ শতাংশ মানুষকে বিভিন্ন বীমার আওতায় আনা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা ডিজিটাল হয়েছি। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালে আমেরিকাকেও পেছনে ফেলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে সব সূচকের শীর্ষে থাকবে বাংলাদেশ।

এমএসসির গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর গ্রাহাম এ এন রাইট বাংলাদেশের আইথ্রি প্রোগ্রামের আওতায় পরিচালিত বেশ কিছু আঞ্চলিক গবেষণার ফল উপস্থাপন করেন। মেটলাইফ ফাউন্ডেশনের এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক কৃষ্ণা ঠাকুর গ্লোবাল সাউথ আর্থিক স্বাস্থ্যের ভূমিকা এবং এর প্রাসঙ্গিকতা বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের জেনারেল ম্যানেজার মো. মেজবাউল হক, ডিএফআইডি বাংলাদেশের টিম লিডার মহেশ্বর মিশরা, মেটলাইফ বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ হাম্মাদুল করিম, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের সিইও সেলিম আর এফ হুসাইন, বিকাশ লিমিটেডের সিইও কামাল কাদির প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ব্যাংকার, মাইক্রোফিনান্স প্রতিষ্ঠানের নেতা, ফিনটেক উদ্যোক্তা, মোবাইলে আর্থিকসেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ৭০ জন বিশেষজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০
পিএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।