ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

৮০ শতাংশ ব্যাংক পুরনো ব্যবসায় সীমাবদ্ধ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
৮০ শতাংশ ব্যাংক পুরনো ব্যবসায় সীমাবদ্ধ

ঢাকা: দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর ৮০ শতাংশই পুরনো ব্যবসার মডেলে সীমাবদ্ধ। ২০১৮ সালে নতুন মডেলে ঋণ বিতরণ করছে মাত্র ২০ শতাংশ ব্যাংক।

২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে নতুন নতুন খাতে ঋণ বিতরণে ব্যাংকাররা নেতিবাচক আচরণ করেছেন। ব্যাংকগুলোকে পুরনো ব্যবসার মডেল থেকে বেরিয়ে আসতে আরও বেশি সাবধান হতে হবে।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে শুরু হওয়া দুদিনের ‘বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলন-২০১৯’ উপস্থাপন করা ২০১৮ সালের ব্যাংকিং কার্যক্রম পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) মহাপরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবছর ৯ শতাংশ সুদে কৃষি ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। দেশের ব্যাংকিংখাতের তারল্য সংকটের প্রভাব পড়ছে কৃষি ঋণ বিতরণে। ২০১৮ সালে দেশে মোট বিতরণকৃত ঋণের খেলাপি ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ। প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা আটকে আছে অর্থঋণ আদালতের মামলায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক ব্যাংকের ঋণ অন্য ব্যাংকের অধিগ্রহণ করতে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। অধিগ্রহণ করা অধিকাংশ ঋণ খেলাপি। কারণ ব্যাংকগুলো অযোগ্য ঋণ গ্রহিতাদের টাকা দিয়েছে।

ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণের সময় গ্রহিতার কাছ থেকে যে জামানত নেয়, তা প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দেখানো হয়। কারণ ব্যাংকাররা জামানত মূল্যায়নের জন্য দায়ী হন না।

বৃহৎ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ নিয়ে অন্যখাতে ব্যবহার করছে। এতে প্রকৃত ব্যবসা পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত মূলধন সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে খেলাপি ঋণ গ্রহিতারা এক ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে অন্য ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করছে। ব্যাংকের কর্পোরেট সুশাসন উন্নয়নের মাধ্যমে তারল্য ব্যবস্থাপনা সাহায্য করতে পারে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির।

তিনি বলেন, গত বছর আমরা রপ্তানিতে পিছিয়ে পড়েছি। তৈরি পোশাক ছাড়া আমাদের উল্লেখযোগ্য আর কোনো পণ্য রপ্তানি বাড়ছে না। রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য আমাদের নতুন নতুন বাজার তৈরি করতে হবে। আজকের ব্যাংকিং সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে। এধরনের সম্মেলন ব্যাংকিংখাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪ শতাংশ ব্যাংক এখনো অনলাইন ব্যাংকিং চালু করেনি। আর্থিক অর্ন্তভূক্তিতে মোবাইল ব্যাংকিং বিপ্লব ঘটিয়েছে। এজেন্ট ব্যাংকিং বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে। স্মার্টফোনের মাধ্যমে ই-কেওয়াইসি সম্পূর্ণ করে এজেন্ট ব্যাংকিং টেকসইভাবে অগ্রসর হচ্ছে।

এবারের বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে চারটি প্লেনারি সেশনে ২৫টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে। প্রথমদিনে ১২টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। দ্বিতীয়দিন উপস্থাপন করা হবে ১৩টি প্রবন্ধ। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, ব্যাংকার, গবেষক এবং শিক্ষার্থীরা এসব সেশনের আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন। দুই দিনের সম্মেলনে দেশি-বিদেশি প্রায় হাজার খানেক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত থাকবেন।  

২০১২ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের ব্যাংকিংখাতের সবচেয়ে বড় এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করছে বিআইবিএম। ব্যাংক, আর্থিকখাত এবং অর্থনীতির সমসাময়িক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অষ্টমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে ব্যাংকিং সম্মেলন।

সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইবিএম’র প্রফেসর ও ব্যাংকিং সম্মেলন আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান শাহ মো. আহসান হাবীব।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
এসই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।