ঢাকা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিটি ইস্যুর ক্ষেত্রে বাজার দরের সঙ্গে প্রকৃত সম্পদমূল্য (এনএভি) সমন্বয় করে মার্জিন ঋণ নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। এই পদ্ধতিতেই আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অতিরিক্ত ঋণ সমন্বয় করতে হবে।
রোববার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এবং মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে এসইসি’র বাজার পর্যলোচনা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এই পদ্ধতি অনুযায়ী, শেয়ারের বাজারমূল্যের সঙ্গে সম্পদমূল্য যোগ করে দুই দিয়ে ভাগ করার পর যে অঙ্ক দাঁড়ায় ওই পরিমাণ ঋণ সুবিধা পাবে বিনিয়োগকারীরা।
সভায় শেয়ারের এনএভি ও বাজারমূল্যের ভিত্তিতে শেয়ারের মার্জিন ঋণ নির্ধারণের জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোন কোম্পানির শেয়ারের বিপরীতে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো কী পরিমাণ ঋণ দিতে পারবে- ডিএসই প্রতি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে (সাধারণভাবে বৃহস্পতিবার) তা নির্ধারণ করবে। ডিএসই’র দেওয়া এই হিসাবের ভিত্তিতে মার্চেন্ট ব্যাংকার এবং দুই স্টক এক্সচেঞ্জের আওতাধীন ব্রোকারেজ হাউসগুলো গ্রাহকদের ঋণ দেবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মার্চেন্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে মার্জিন ঋণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে ঘোষিত নির্দেশনা শিথিল করে ঋণের হার পুনর্নিধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
তারা মার্জিন ঋণ সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করে বলেন, এই নিয়ম কার্যকর হলে গ্রাহকদের পোর্টফোলিও থেকে বিপুল সংখ্যক শেয়ার বাধ্যতামূলক বিক্রি (ফোর্স সেল) করতে হবে। এতে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস নামতে পারে।
এজন্য তারা এই পদ্ধতি কার্যকর করার সময় বাড়ানোর দাবি জানান।
অন্যদিকে, এসইসি কর্মকর্তারা বলেন, বাজারের ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। উৎপাদনশীল খাত থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ শেয়ারবাজারে চলে আসায় জাতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে শেয়াজারে বড় ধরনের সংশোধন শুরু হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপর্যয় এড়াতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থেই মার্জিন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে এনইভিভিত্তিক হিসাব কার্যকর করতে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে উপস্থিত ডিএসই ও সিএসই নেতারা এসইসি’র সিদ্ধান্তের পক্ষে তাদের অভিমত দেন। শেষ পর্যন্ত এসইসি’র পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এনএভিভিত্তিক হিসাব পদ্ধতি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত হয়।
এসইসি’র মুখপাত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কবীর ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘এনএভি ও বাজারমূল্যের ভিত্তিতে মার্জিন হিসাব করে মার্চেন্ট ব্যাংকার এবং ব্রোকার হাউজ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গ্রাহকদের ঋণ সমন্বয় করবে। কোনো গ্রাহক অতিরিক্ত ঋণ গ্রহণ করে থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ওই সময়ের মধ্যে গ্রাহককে নগদ টাকা জমা দিয়ে ঋণ সমন্বয় করার অনুরোধ (মার্জিন কল) জানাবে। কোনো গ্রাহক অতিরিক্ত টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হলে ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১০