বাঞ্ছারামপুর: বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময়ই দেশের সাধারণ, গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়ায়। দরিদ্র বিপন্ন মানুষের জন্য সারা বছরই নানা কার্যক্রম চালায় বসুন্ধরা গ্রুপ।
শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১শ ১৬টি গ্রামের ২৫ হাজার দরিদ্র, অসহায় ও দুস্থ মানুষের মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে যাকাতের কাপড় বিতরণ করা হয়। ১৯৮৯ সাল থেকে প্রতি বছরই রমজানের ঈদকে সামনে রেখে যাকাতের কাপড় বিতরণ করে থাকে বসুন্ধরা গ্রুপ।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১শ ১৬টি গ্রামকে মোট ১১টি কেন্দ্রে ভাগ করে শনিবার সকাল ৭টায় শুরু হয় দিনভর নতুন কাপড় সংগ্রহের জন্য টোকেন বিতরণ।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান (শাহ আলম)-এর পৈত্রিক ভিটা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দূর্গারামপুর থেকে যাকাতের কাপড় বিতরণ শুরু করা হয়। চলে শেষ দুপুর পর্যন্ত।
বসুন্ধরা গ্রুপের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (অর্থ) মো. ময়নাল হোসেন চৌধুরী উপস্থিত থেকে কাপড় বিতরণ, পরিচালন ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নিজেও বেশ কিছু কাপড় গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বিতরণ করেন।
তিনি কাপড় বিতরণ প্রসঙ্গে বলেন, “ইসলাম ধর্মে স্পষ্ট করে বারবার উল্লেখ আছে, সামর্থ্য অনুযায়ী যাকাত বিতরণ করার। তিনি বলেন, “ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে যাকাত প্রদান একটি। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান প্রতিবছরই মুসলমান হিসেবে তার কর্তব্য পালনের তাগিদে সামর্থ্য অনুযায়ী যাকাতের কাপড় বিতরণ করেন। ”
তিনি আরো বলেন, “এ উপজেলার কৃতী সন্তান হিসেবে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান তার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে উপজেলায় একটি দাখিল ও একটি আলিম মাদ্রাসা, ২টি নতুন মসজিদ নির্মাণ করেছেন।
অপরদিকে, দরিদ্র ও অতিদরিদ্রদের মাঝে সুদমুক্ত-সার্ভিস চার্জহীন কোটি টাকার ওপর ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে হাজার হাজার পরিবারকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। এ কাজ বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ”
মো. ময়নাল হোসেন চৌধুরী বলেন, “বসুন্ধরা গ্রুপ এ উপজেলার বেকারত্ব ও দারিদ্র্য দূর করতে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ৭ হাজারেরও বেশি বেকার তরুণ-তরুণীকে কর্মসংস্থানের স্থায়ী সুযোগ করে দিয়েছে। ভবিষতে আরো দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ”
যাকাতের কাপড় বিতরণের জন্য ১১টি নির্ধারিত বিতরণেকেন্দ্রের মধ্যে ৭টি কেন্দ্র সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়- গ্রামের অসহায়, গরিব ও দুস্থ নারী-পুরুষ দল বেঁধে বিপুল উৎসাহের সাথে কাপড় নেয়ার জন্য নির্ধারিত কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন। এদের মধ্যে বয়োবৃদ্ধ নারীই বেশি।
শনিবার সকাল ৮টার দিকে দূর্গারামপুর, পাড়াতলী, পাহাড়িয়াকান্দি, বড়কান্দি, ছবুরকান্দি, উজানচর, ছলিমাবাদ কেন্দ্রে প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়। প্রতিটি কেন্দ্রে ভিড় সামলাতে শুভ সংঘের সদস্য ও সিকিউরিটি গার্ডদের রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়।
যাকাতের কাপড় নিতে ৫ কিলোমিটার দূরের গ্রাম কালিকাপুর থেকে সেহরি খেয়ে লাঠিভর করে হেঁটে উজানচর বিতরণকেন্দ্রে ভোর ৫টায় লাইনে দাঁড়ান মৃত কালা মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৭২)। হাতে নতুন শাড়ি পেয়ে খুশি আর আনন্দে শাহ আলম সাহেবের (বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ আকবর সোবহানকে এলাকাবাসী শাহ আলম নামেই বেশি জানে) জন্য দুহাত তুলে দোয়া করেন তিনি।
দশদোনা গ্রামের আফাজউদ্দিন মিয়া (৫৮) বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন-পত্তি (প্রতি) বছরের লাহান এ বছরও নয়া কাপড় পাইয়া খুব খুশি। আল্লাহ্ শাহ আলম বেটাকে হায়াত-দারাজ করুক, বালা মুছিবত থাইক্যা দূরে রাখুক। মনে অইতাছে, আগেই ঈদ আইস্যা গেছে। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১০