ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বন্ধ হয়নি পলিথিনের ব্যবহার, প্রকাশ্যেই চলছে বেচাকেনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯
বন্ধ হয়নি পলিথিনের ব্যবহার, প্রকাশ্যেই চলছে বেচাকেনা বন্ধ হয়নি পলিথিন বেচাকেনা। ছবি: জিএম মুজিবুর রহমান

ঢাকা: মাটির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি চাষাবাদেও বাধা তৈরি করে পলিথিন। এ জন্য প্রায় দেড় যুগ আগে এর উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে সরকার। এরপরও বন্ধ হয়নি ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার, বরং প্রতিনিয়তই তা বেড়ে চলেছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে খ্যাতনামা শপিং মলেও অবাধে চলছে এর ব্যবহার। খাবারের হোটেলে, চাল, ডাল, মাছ, মাংস থেকে শুরু করে সবজি বেচাকেনাতেও ব্যবহৃত হচ্ছে পলিথিন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় এর উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ হচ্ছে প্রকাশ্যে, প্রশাসনের সামনেই। রাজধানীর কারওয়ান বাজারেই পলিথিনের পাইকারি বাজারের পাশাপাশি গড়ে উঠেছে অসংখ্য খুচরা দোকান, যেন দেখার কেউ নেই।

তবে প্রশাসন বলছে, তাদের অভিযান চলছে। এটি আরও জোরদার করা হচ্ছে, অচিরেই বন্ধ হবে নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রি।

সরেজমিনে দেখা যায়, কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে প্রায় ২০টি পলিথিনের পাইকারি দোকানে প্রকাশ্যেই চলছে বেচাকেনা। পাশাপাশি, খুচরা দোকান গড়ে উঠেছে আরও কয়েকশ’। দেশের এ বৃহৎ পাইকারি সবজি বাজারের প্রতিটি পণ্য সরবরাহেই চলছে পলিথিনের ব্যবহার। ব্যবহৃত হচ্ছে চাল, ডাল, তেল, মাছ, মাংসের পাশাপাশি হোটেলের খাবার আনা-নেওয়াতেও।  

কোনোভাবেই যেন থামানো যাচ্ছে না পলিথিনের ব্যবহার। অথচ, ক্ষতিকর এ জিনিসের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছিল ২০০২ সালেই। এটি বাস্তবায়নে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর ৬(ক) ধারাটি সংযোজন করা হয়। আইনের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি নিষিদ্ধ পলিথিন সামগ্রী উৎপাদন, আমদানি বা বাজারজাত করেন, তাহলে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা, এমনকি উভয় দণ্ডও হতে পারে।
কারওয়ান বাজারে প্রকাশ্যেই চলছে পলিথিন বেচাকেনা।  ছবি: জিএম মুজিবুর রহমানতবে, আইনের তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের সামনেই দেদারসে চলছে নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রি ও পরিবহন। দোকানিরা বলছেন, ক্রেতার চাহিদা আর অন্য মালামাল বিক্রির জন্যই পলিথিন রাখা হয়। তাদের মতে, প্লাস্টিকের বিভিন্ন আইটেমের সঙ্গে পলিথিন না রাখলে অন্য মালামাল বিক্রি হবে না। অনেকেই আবার পলিথিন কিনতে চকবাজার বা অন্য বাজারের দিকে ঝুঁকবেন। তাই, ক্রেতা হাতে রাখতেই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন বিক্রি করেন তারা। এজন্য জরিমানার মুখোমুখিও হতে হয়েছে কয়েকবার।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি পলিথিন বিক্রেতা রুবেল বাংলানিউজকে বলেন, এখন প্রতিটি পণ্য সরবরাহেই পলিথিন ব্যবহার করা হয়। পলিথিন না রাখলে ক্রেতারা প্লাস্টিকের কাপ, বাটি কিনতে আসে না। এটা থাকলেই অন্য মালামাল বিক্রি হয়।  

প্রশাসনের পক্ষ থেকে পলিথিন বিক্রিতে বিধিনিষেধ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা তো থাকবেই। তারপরও ঝুঁকি নিয়েই বিক্রি করতে হয়, অভিযান হলে দোকান বন্ধ করে দেই। এখানে বেশ কয়েকবার জরিমানাও করা হয়েছে।  

রুবেলের মতো একই কথা জানান বিডি প্লাস্টিক এজেন্ট, আলম ট্রেডার্স, বসির স্টোর, জমজম প্যাকেজিং, সৈকর প্যাকেজিংসহ অন্য দোকানের বিক্রয় প্রতিনিধিরাও।

এদিকে, ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার কমাতে প্রশাসনের পক্ষে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি- এমন কিছু বিক্রি বন্ধ করা হবে।

এ বিষয়ে কারওয়ান বাজারের (অঞ্চল-৫) দায়িত্বে থাকা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কারওয়ান বাজারে পলিথিন পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে- এটা সত্য। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ক্ষতিকর পণ্য বিক্রি বন্ধে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে। আশা করছি, শিগগিরই নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার কমে আসবে, এটি বিক্রিও বন্ধ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
ইএআর/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।