ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভারতের বন্যার প্রভাব হিলির পেঁয়াজে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৯
ভারতের বন্যার প্রভাব হিলির পেঁয়াজে

দিনাজপুর: ভারতের কয়েকটি অঞ্চলে সৃষ্ট বন্যার কারণে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কমে গেছে। ফলে প্রতিদিনই হু-হু করে দাম বাড়ায় অস্থির হয়ে উঠেছে ভারতীয় পেঁয়াজের বাজার। গত ৩/৪দিনে দাম বেড়ে বন্দরের আড়তে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটি পাইকারি বেচা-কেনা হচ্ছে ৩৩-৩৫ টাকায়। যা গত ১০/১২ দিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়ে গেছে ১৪-১৫ টাকা করে।

বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত ভারত থেকে কোনো পেঁয়াজ বোঝাই ভারতীয় ট্রাক বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। তবে অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক আসা স্বাভাবিক ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের পেঁয়াজ উৎপাদন অঞ্চলগুলোতে সাম্প্রতিক বন্যায় পেঁয়াজের মাঠ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দেশে পেঁয়াজ আমদানি কমে যাচ্ছে। আবার ঈদুল আজহার কারণে হিলি বন্দর ৮ দিন ধরে বন্ধ থাকায় দেশে একটুকুও পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। সবমিলে দেশে ভারতীয় পেঁয়াজের সংকট দেখা দেওয়ায় দাম বাড়তে শুরু করেছে।

বন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মোর্শেদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ভারতের মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন প্রদেশে বন্যা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে বন্যার কারণে ফসলের মাঠ ডুবে যাওয়ায় পেঁয়াজের আবাদ নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য সেখানে পেঁয়াজের সংকট চলছে। দামও বেড়ে গেছে।

মোর্শেদুর রহমান আরও জানান, গত মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের রপ্তানিকারক জমির খান আমাকে জানিয়েছেন পেঁয়াজ উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই বাংলাদেশে কম পরিমাণে পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে, এজন্য দাম বেশি লাগবে। তিনি প্রতি কেজি ২৫ রুপি করে চেয়েছেন। এরপর ভারতীয় ট্রাকে করে সেখান থেকে আনতে প্রতি কেজিতে পড়বে ৬ রুপি। তাতে বাংলাদেশে আনতে (বাংলাদেশি টাকায়) ৩৮-৪০ টাকা খরচ হবে। বাধ্য হয়ে ওই দামে কিনতে হচ্ছে। তবে বেশি দামের পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসতে এখনো ৩/৪দিন সময় লাগবে।

এদিকে হিলিতে পেঁয়াজ কিনতে আসা রংপুরের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, গত রোববার ৩১-৩২ টাকা দরে কিনেছি। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) আবার ৩৫ টাকায় দাম উঠে। বেশি দামে কেনার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। এতে করে ভোক্তাদের সঙ্গে বচসা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। আবার দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহও কমে আসছে।

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার ২৩টি ট্রাকে ৫২১ মেট্রিক টন, গত সোমবার ২০টি ট্রাকে ৪৭২ মেট্রিক টন এবং মঙ্গলবার ১৭টি ট্রাকে ৩২৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এই বন্দরের মাধ্যমে আমদানি হয়ে দেশে আসে।

বন্দরের আরেক ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী বাংলানিউজকে জানান, অন্যান্য দিনের তুলনায় খুবই কম সংখ্যার পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক হিলি বন্দর দিয়ে দেশে আসছে। ঈদের পর থেকে এবং ভারতে বন্যার কারণে এ অবস্থা চলছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। একারণে ধারণা করা হচ্ছে ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা অনুযায়ী আমদানি হচ্ছে না। তাই বাজারে সরবরাহ কমে আসায় দাম বাড়ছে। ঈদের আগে এ মানের পেঁয়াজ ২০-২২ টাকায় বেচা-কেনা হয়েছে।

বাংলাহিলি বাজারের খুচরা রেজাউল করিম গামা বাংলানিউজকে জানান, আমরা বাছাই করা মধ্যম সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি করি। বর্তমানে এ ধরনের পেঁয়াজ ২/৩ দিন ধরে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় এখানে বিক্রি হয় না।  

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।