ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্যাংকিং

রিজার্ভের অর্থ ফেরতে ফিলিপাইনের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৬ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৯
রিজার্ভের অর্থ ফেরতে ফিলিপাইনের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হবে

ঢাকা: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত দিতে ফিলিপাইনের ওপর চাপ সৃষ্টির করা হবে বলে জানিয়েছে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি)। একইসঙ্গে অর্থপাচাররোধে তদারকি আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।

ফিলিপাইন এপিজির সদস্য দেশ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগ করতে পারে। এছাড়া মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন পুরোপুরি পালন করা হলে রিজার্ভের টাকা ব্যাংকের বাইরে যেতো না।

এতে প্রমাণ হয় ফিলিপাইনে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন পরিপালনে বেশ দুর্বলতা ছিল।  

অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে তথ্য জানা গেছে।

রোববার (০৭ জুলাই) অর্থ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে দিকনির্দেশনা এবং নীতিপ্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির সঙ্গে এপিজির পরিচালক ডেভিট শ্যানন ও মোস্তফা আকবরের বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান প্রমুখ।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন বৈশ্বিক সূচকে ২০১৬ সালে যে অবস্থানে ছিল এখনো সে অবস্থানেই রয়েছে। কখনো এক্ষেত্রে খারাপ অবস্থানে ছিল না বাংলাদেশ। আগের তুলনায় এখন বাংলাদেশের অবস্থা ভালো না হলেও খারাপ হয়নি উল্লেখ করেন আইনমন্ত্রী।  

বৈঠকে আইনমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরাসরি তেমন কোনো মানিল্ডারিং হয় না। তবে আমদানি ও রফতানিতে ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে টাকা চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু কিছু জায়গায় ঘাটতি রয়েছে। এ জায়গাগুলো আমরা রিকভারি করার চেষ্টা করছি। এরই অংশ হিসেবে আমরা আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে শতভাগ পণ্য স্ক্যানিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছি।

তিনি বলেন, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিতে অর্থায়ন আমাদের একেবারে শূন্যের কোটায়। এপিজিও এতে একমত প্রকাশ করেছে। কারণ তাদের কাছেও বাংলাদেশে সন্ত্রাসে অর্থায়নের কোনো প্রমাণ নেই। তারপরও এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিজে থেকেই প্রতিটি ঘরে ঘরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনা বৃদ্ধির কাজ করছি।

এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান বলেন, রিজার্ভ চুরির বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বলছে, যেসব দেশে মানি লন্ডারিং বিষয়গুলো পুরোপুরি পরিপালন না হয় সেসব দেশে এধরনের ঘটনা বেশি হয়। ফিলিপাইন সে রকম একটি দেশ। তবে টাকা ফেরত আনার বিষয়টি এপিজি দেখবে।

আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান বলেন, এপিজিসহ আন্তর্জাতিক এ ধরনের সংগঠগুলোর চাপেই সুইস ব্যাংক তথ্য দিচ্ছে। তাদের উপরও চাপ রয়েছে। তাদের আইনে অনেক দুর্বলতা রয়েছে, সেগুলোও তারা এ্যামেনমেন্ট করবে।

সুইস ব্যাংকের অর্থ ফেরত আনতে তাদের সঙ্গে এমওইউ হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের আইনে অনেক দুর্বলতা রয়েছে। সুতরাং এমওইউ করলেও আইন সংশোধন না করে তারা টাকা দিতে পারে না। এপিজি দেখবে তাদের আইনগুলো আন্তর্জাতিকমানে কিনা। এছাড়া মানি লন্ডারিংয়ে এখন আমরা কোনো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় নেই।

জানা গেছে, চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত আনতে গত ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে এ মামলা করা হয়। এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের জরুরি বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মামলা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৯ 
জিসিজি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।