ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঢাকা-কক্সবাজার রুটে বুলেট ট্রেন চলাচলে সমীক্ষা

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৯
ঢাকা-কক্সবাজার রুটে বুলেট ট্রেন চলাচলে সমীক্ষা

ঢাকা: ঢাকা-কক্সবাজার রুটে দ্রুতগামী বুলেট ট্রেন পরিচালনা করা যায় কি-না, এ বিষয়ে একটা সমীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

শুক্রবার (১৪ জুন) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ থাকা এবার প্রথমবারের মতো কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন করেন শেখ হাসিনা।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর হয়ে বাজেটের বক্তৃতার একাংশ পড়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার রেলওয়েকে একটি সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এখাতের উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। রেলওয়ের সার্বিক উন্নয়নে সরকার ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬-৪৫ পর্যন্ত ৩০ বছরব্যাপী মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। এই সময়ে ২৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

‘প্রস্তাবিত বাজেটে ১১২০টি নতুন যাত্রীবাহী রেলকোচ এবং ১১১০ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল রেল ট্র্যাক নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫২ কিলোমিটার নতুন রেল ট্র্যাক নির্মাণের পাশাপাশি ১০০টি রেল ইঞ্জিন কেনা হবে। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে দ্রুতগামী বুলেট ট্রেন পরিচালনা করা যায় কি-না, এ বিষয়ে একটা সমীক্ষা করা হবে। ’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রেলপথে ৩টা মেজর ব্রিজ নির্মাণ, তিনটি রেলওয়ে ওয়ার্কশপ নির্মাণ করা হবে। রেলের সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ই-টিকিটিং চালুর ফলে যাত্রীদের রেলভ্রমণ যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি মোবাইল অ্যাপস প্রবর্তনের ফলে বর্তমানে অতি সহজেই যাত্রীরা রেলের অবস্থান সম্পর্কে সহজে জানতে পারেন। ’

কিছু সংস্থার পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়ায় বলা হচ্ছে, প্রস্তাবিত বাজেটে স্বচ্ছল ও উচ্চ আয়ের মানুষকে বেশি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।  

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ছবি: পিআইডিএ ধরনের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে একজন সাংবাদিকের একটি প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা কী গবেষণা করেন আমি জানি না। এতো সমালোচনা করেও আবার বলবে, আমরা কথা বলতে পারি না। আমার কথা হচ্ছে, সাধারণ মানুষ খুশি কি-না। তারা লাভবান হচ্ছে কি-না, এটাই দেখার বিষয়। আজকে আমাদের এগারোতম বাজেট। এটা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট। এর সুফল সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাবে। আর ভালো না লাগার বিষয়টা জানি না কী হবে, তবে দেশের জন্য তারা কী আনতে পারছেন তা জানি না।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করা এবং স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছানোই আমাদের লক্ষ্য। আমি মনে করি আমরা এক্ষেত্রে যথেষ্ট সফল। আগে বিশ্বদরবারে ভিক্ষুকের জাত বলতো, এখন আর কেউ এটা বলতে পারে না। এটাই বড় অর্জন। এমন অর্জন সত্ত্বেও সমালোচনা। আসলে ‘ভালো না লাগা পার্টি’র কিছুই ভালো লাগে না। যারা সমালোচনা করে, করে যাক। ভালো কিছু বললে গ্রহণ করবো, মন্দ কিছু বললে ধর্তব্যে নেবো না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রাম যেন উন্নত হয়, সেখানকার মানুষ যেন শহরের মানুষের সুবিধা পায়, সেজন্য আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ কর্মসূচির আলোকে পল্লী এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে দেশজুড়ে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার নতুন সড়ক এবং ৩০ হাজার ৫০০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। সেজন্য এখাতে আগামী অর্থবছরে ৬৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।  

দেশের বেকার যুবসমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।  

কৃষিখাতে সরকারের ভর্তুকি-প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও প্রণোদনা থাকবে। কৃষি ভুর্তকি, ঋণ ও কৃষিপণ্য রফতানির ক্ষেত্রে প্রণোদনাও থাকবে।

তিনি জানান, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে এবারের বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

২০২৩-২৪ সালের মধ্যে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১০ শতাংশ ধরে সেভাবে সরকার কাজ করছে বলেও জানান সরকারপ্রধান।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবির প্রেক্ষিতে বন্ধ থাকা এমপিওভুক্তির কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। স্বাস্থ্য উন্নয়নের মাধ্যমে চিকিৎসা ও অন্যান্য সামাজিক সুবিধা নিশ্চিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৮টি মেডিকেল কলেজে নিউক্লিয়ার মেডিসিন ইনস্টিটিউট খোলা হবে।

দেশের প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আমরা অর্জন করবো, সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।

‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শীর্ষক এবারের বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এ বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৯
এমআইএস/জিসিসি/এমএ/এইচএ/

আরও পড়ুন
** ‘ভালো না লাগা পার্টি’র কিছুই ভালো লাগে না
** অনলাইন নিউজপোর্টাল নিবন্ধনের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর
** ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ বাস্তবায়নে ৬৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা
** ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি যুবকের কর্মসংস্থান করা হবে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।