ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

স্বল্প ব্যয়ে বেশি ফলন মিষ্টি কুমড়ায়

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৯
স্বল্প ব্যয়ে বেশি ফলন মিষ্টি কুমড়ায় বিক্রির জন্য হাটে উঠানো মিষ্টি কুমড়া

বগুড়া: বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী মহাস্থান হাটের বড় একটি অংশজুড়ে এখন দেখা মিলবে কাঁচা-পাকা মিষ্টি কুমড়ার। বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক লাগোয়া এই হাটের মহাসড়কের পূর্ব-পশ্চিমপ্রান্ত ঘেঁষেই প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয়ে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে জমজমাট কুমড়ার বিকিকিনি।

একই জমিতে অন্য ফসলের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে এসব কুমড়া চাষ করেন কৃষকরা। আবার অনেক কৃষক এগুলো এককভাবে চাষ করেন।

এক্ষেত্রে অবশ্য ফলনও বেশি পাওয়া যায়।
 
আমজাদ হোসেন, পেশায় কৃষক। তার মতো অনেক কৃষকই এ হাটে কুমড়া বিক্রি করতে আসেন। কারণ এ হাটে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বড় ও মাঝারি মানের ব্যাপারি আসেন। চাহিদা অনুযায়ী তারা বিপুল সংখ্যক কুমড়া কিনে থাকেন। এতে দামও তুলনামূলক ভালো পাওয়া যায়। এছাড়া ব্যাপারির অভাবে ক্ষেতের ফসল নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয় না। তাছাড়া স্থানীয় ব্যাপারিও কম নেই।
 
সবজি চাষি সামসুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, কুমড়া চাষ অনেক লাভজনক। অল্প ব্যয়ে ফলন বেশি পাওয়া যায়। সে অনুযায়ী লাভও ভালো হয়। এই ফসল চাষের সুবিধাজনক দিক হলো এটি সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। এতে অন্য ফসলও হয়। আবার বাড়তি হিসেবে কুমড়াও হয়।
 
বুলু মিয়া নামের আরেক চাষি বাংলানিউজকে জানান, তিনি আলুর জমিতে সাথী ফসল হিসেবে কুমড়া লাগিয়েছিলেন। আলু বিক্রি বেশ আগেই শেষ করেছেন। এখন জমিতে কুমড়া রয়েছে। সেই কুমড়া বাজারে বিক্রি করছেন।
 
এসব চাষিরা বাংলানিউজকে জানান, বগুড়ায় দিনদিন কুমড়ার চাষ বাড়ছে। এক্ষেত্রে চাষিরা বর্তমানে বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের কুমড়া চাষকে প্রাধ্যন দিয়ে থাকেন। কেননা এসব জাতের গাছ থেকে ফলন বেশি পাওয়া যায়। কুমড়ার আকারও অনেক বড় হয়। আর বাজারে বড় আকারের কুমড়ার দামও বেশি পাওয়া যায়।
 
মহাস্থানহাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে পাইকারি দর হিসেবে প্রতি পিস ৭-৮ কেজি ওজনের একেকটি মিষ্টি কুমড়া ৫৫-৬০ টাকা হিসেবে বিক্রি হয়। আবার মাঝারি আকারের কুমড়ার দাম একটু কম। পাইকারি হিসেবে দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের একেকটি মিষ্টি কুমড়া ১২-১৪ টাকা করে বিক্রি হয়।
 
ব্যাপারি শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এই হাট থেকে বর্তমানে প্রতিদিন রাজধানী ঢাকা ছাড়াও সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ২০ ট্রাকের মতো মিষ্টি কুমড়া ব্যাপারিরা কিনে নিয়ে যান। এছাড়া বগুড়াসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরেও এ হাটে এসে ব্যাপারিরা মিষ্টি কুমড়া কিনে থাকেন।
 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বাবলু সূত্রধর বাংলানিউজকে জানান, মিষ্টি কুমড়া চাষের জন্য এখানকার মাটি ও আবহাওয়া অত্যন্ত উপযোগী। এছাড়া অত্যন্ত স্বল্প খরচে চাষিরা সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষ করতে পারেন। মিষ্টি কুমড়ার ফলনও বেশি হয়। অবশ্য অনেক চাষিই আবার এককভাবে এই ফসল চাষ করে থাকেন।
 
সময়ের ব্যবধানে ও প্রয়োজনীয়তা সামনে রেখে চাষিরা এই জেলায় মিষ্টি কুমড়ার চাষ দিনদিন বাড়াচ্ছেন। এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ থেকেই কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান কৃষিবিদ বাবলু সূত্রধর।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৯
এমবিএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।