ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শেয়ারবাজার

‘পুঁজিবাজারের জন্য উল্টো হয় এমন কিছু করবো না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৯
‘পুঁজিবাজারের জন্য উল্টো হয় এমন কিছু করবো না’ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এনবিআর’র প্রাক-বাজেট আলোচনা

ঢাকা: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, আমরা দেখেছি কখনও বাজেট প্রকাশের পরে পুঁজিবাজার চাঙ্গা হয় আবার কখনও বাজেটের পর উল্টোটাও হতো। তবে এবার এই ধরনের কিছু আমরা করবো না।

মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর কার্যালয়ে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।  

তিনি বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স, লিস্টেড কোম্পানি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের ইকোনমিতে যথেষ্ট অবদান রাখছে।

বিশেষ করে আমরা যখন স্টক এক্সচেঞ্জে গিয়েছি দেখেছি ইনভেস্টমেন্টের একটি বিরাট ক্ষেত্র। যে দেশের স্টক এক্সচেঞ্জ যত বড় সে দেশের ইনভেস্টমেন্ট বেশি। সেই বিবেচনা রেখে আপনারা যখন চায়নার একটি কোম্পানির কাছে শেয়ার বিক্রি করেছিলেন তখন আমরা একটা ট্যাক্স মওকুফ করেছিলাম। তবে সেখানে একটি শর্ত ছিল যে, সেই টাকা ক্যাপিটাল মার্কেটে ৩ বছরের জন্য থাকবে। সেটা আছে কি না এনবিআর চেয়ারম্যান স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে জানতে চান।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আরো বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখন ইনভেস্টমেন্ট ওয়েতে এগুতে চায়। কিন্তু আমার একটা অনুরোধ থাকবে আপনাদের কাছে যতটুকু সরকার প্রাপ্য হবে ততটুকু যেন সঠিকভাবে পায়। এখানে যেন কোনো কায়দা করে কোনো ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা যাতে না হয় সেই জিনিসটা খেয়াল রাখবেন।

চেয়ারম্যান বলেন, পেইড অব ইনভেস্টমেন্টে যদি উন্নতি হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আমরা ট্যাক্স পাবো। আমরা চাচ্ছি ইনকাম ট্যাক্সের আওতাটা যাতে আরো উন্নতি করা হয়। টিআইএনধারী না হলে আপনারা পলিসি করাবেন না। টিআইএন বাধ্যতামূলক করেন। কেননা যারা ইন্স্যুরেন্স করেন নিশ্চয়ই তাদের সেভিংস আছে, সুতরাং টিন ছাড়া কাউকে পলিসি করাবেন না।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংকার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স সার্ভেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, আইডিএলসি ও বিএলএফসিএ’র প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠকে মার্চেন্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ইন্টারমিডিয়ারিজ হিসেবে মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে। বর্তমানে বিদ্যমান কর্পোরেট ট্যাক্সের হার মার্চেন্ট ব্যাংক ৩৭.৫%, ব্রোকারেজ হাউজ ৩৫% এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ১৫%, যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। মার্চেন্ট ব্যাংক আইপিও, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট, আন্ডাররাইটিং এবং  কর্পোরেট অ্যাডভাইজরি সার্ভিস সরবরাহ করে পুঁজিবাজারে নতুন নতুন কোম্পানি আনয়নের ক্ষেত্রে (আইপিও এর মাধ্যমে) এবং বিদ্যমান কোম্পানির সার্বিক কর্মকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে।

বৈঠকে স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের বিদ্যমান কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা, নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি সমূহের আয় তিন বছর করমুক্ত রাখা, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এসএমই প্রথম তিন বছর শূন্য শতাংশ এবং পরবর্তী বছরে ১০ শতাংশ হারে কর হার নির্ধারণ করা, করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ২৫,০০০ টাকা থেকে ১,০০,০০০ টাকা করা, কোম্পানি করদাতা কর্তৃক অপর তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ আয়ের ওপর কর মওকুফ, জিরো কুপন বন্ডসহ সকল প্রকার তালিকাভুক্ত এবং অতালিকাভুক্ত বন্ডের সুদের ওপর করদাতা নির্বিশেষে কর অব্যাহতি প্রদান, বন্ড লেনদেনের ওপর কর প্রত্যাহার, অল্টারনেট ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) এ তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের কর সুবিধা ও স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের কাছ থেকে উৎসে আয়কর কর্তনের হার বিদ্যমান ০.০৫ শতাংশ থেকে পূর্ববর্তী ০.০১৫ শতাংশে পুনঃনির্ধারণের দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৯
এসএমএকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।