ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শেয়ারবাজার

পুঁজিবাজার বিমুখ হচ্ছেন বিদেশিরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৮
পুঁজিবাজার বিমুখ হচ্ছেন বিদেশিরা

ঢাকা: চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকেই প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির ‘হিড়িক’ পড়ে। কমতে থাকে শেয়ার কেনার প্রবণতা। এ কারণে পাল্লা দিয়ে কমে লেনদেন ও প্রকৃত বিনিয়োগের পরিমাণও। ঠিক এ অবস্থায় জুলাই মাসের পর আগস্টে আরেক দফা কমে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগ। যা ‘বেশ শঙ্কার’ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, দরপতনে পুঁজি হারানোর ভয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও দেশের সার্বিক অবস্থার পাশাপাশি পুঁজিবাজার নিয়ে আস্থা সংকটের কারণে বাজার ছাড়ছেন বিদেশিরা। ফলে জুলাইয়ের তুলনায় আগস্ট মাসে বিনিয়োগকারীদের লেনদেন কমেছে পাঁচশ’ কোটি টাকা।

প্রকৃত বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ কমেছে অর্ধেক।

অন্যদিকে বিদেশিদের দেখাদেখি দেশীয় প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, আগস্টে প্রবাসী ও বিদেশিদের মোট লেনদেন হয়েছে ৩৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার ২০৭ টাকা। এর আগের মাস জুলাইয়ে প্রবাসী ও বিদেশিদের মোট লেনদেন হয়েছিলো ৮৫৬ কোটি ৭৯ লাখ ২ হাজার ২৬৪ টাকা। জুনে লেনদেনের পরিমাণ ছিলো ১ হাজার ৯৯ কোটি ৮৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫৫১ টাকা।

সে হিসেবে জুলাই মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে লেনদেন কমেছে ৪৯৯ কোটি ৭১ হাজার ৬৫৬ টাকা। আর জুনের তুলনায় জুলাই মাসেও কমেছে ২৪৩ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ২৮৭ টাকা।

শুধু জুন, জুলাই মাস নয়, এর আগের মাস মে ও এপ্রিল থেকে ক্রমাগতভাবে বিদেশিদের লেনদেন কমে আসছে। লেনদেন কমায় মুনাফাবঞ্চিত হয়েছে ব্রোকারেজ হাউজ। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় বঞ্চিত হয়েছে সরকার।

ডিএসইর সর্বশেষ তথ্য মতে, চলতি বছরের আগস্টে ডিএসইতে জুলাই মাসের চেয়ে ৪৯৯ কোটি টাকা কমে লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৩৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৩০ হাজার ৬০৭ টাকা। শেয়ার বিক্রি আগের মাসের চেয়ে ২৬২ কোটি টাকা কমেছে। পাশাপাশি প্রবাসী ও বিদেশিরা শেয়ার কিনেছেন প্রায় আড়াই’শ কোটি টাকা কম।

এই টাকার মধ্যে বিদায়ী মাসে বিদেশিরা শেয়ার কিনেছেন ১৭৬ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার ১৮৪ টাকার। তার বিপরীতে বিক্রি করেছেন ১৮১ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ৪২৩ টাকার। এর আগের মাস জুলাইয়ে বিদেশিরা শেয়ার কিনেছেন ৪১২ কোটি ৪ লাখ ১৯ হাজার ৪৫১ টাকার। তার বিপরীতে বিক্রি করেছেন ৪৪৪ কোটি ৭৪ লাখ ৮২ হাজার ৮১৩ টাকার। তারও আগের মাস জুনে ৪৪৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৮ টাকার শেয়ার বিক্রির বিপরীতে ৬৫৩ কোটি ২৯ লাখ ৩ হাজার ৯৬০ টাকার শেয়ার কিনেছিলেন তারা।

এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পুঁজিবাজারের প্রতি বিদেশিদের আস্থা কমেছে। পাশাপাশি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে তারা বিনিয়োগ করছেন। কেউ কেউ বাজার থেকে চলেও যাচ্ছেন। আশা করছি, নতুন সরকার গঠনের পর বিনিয়োগ বাড়বে।

এ বিষয়ে ডিএসই’র পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাজারের অস্থিরতার কারণে বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। শেয়ার বিক্রির চাপে বাজারে দরপতনও হচ্ছে। কারণ বাজারটা এখন দুর্বল। এই দুর্বল অবস্থায় বাজার চাপ সামলাতে পারছে না’।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৮
এমআইএফ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।