ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

মেঘনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ 

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৮
মেঘনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ  ধরা পড়া ইলিশ। ছবি: বাংলানিউজ

ভোলা: দেরিতে হলেও ভোলার মেঘনায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। আর এই ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে সরগরম হয়ে উঠেছে মাছের আড়ৎ।

ক্রেতা-বিক্রেতা, আড়তদার, পাইকার আর বেপারীরা ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। জেলেদের মুখেও ফুটেছে হাসি।

সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় জাল-নৌকা নিয়ে রাত-দিন নদীতে মাছ শিকার করছেন জেলেরা।  

জানা গেছে, জাটকা বড় হয়ে পরিণত হওয়ায় সাগর থেকে নদীতে চলে আসছে সে কারণেই জেলেদের জালে ধরা পড়ছে এসব ইলিশ।  

উজানের ঢল আর বৃষ্টিপাত বেড়ে গেলে মাছের উৎপাদন আরো বেড়ে যাবে বলে মনে করছে মৎস্য বিভাগ।
  
এদিকে, ইলিশ ধরা পড়লেও অভিযান নিয়ে কিছুটা চিন্তিত জেলেরা। তারা বলছেন, গত কয়েক মাস নদীতে ইলিশের আকাল ছিলো। কিন্তু এমন সময় ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে যে-আর কিছুদিন পরেই ইলিশের প্রজনন মৌসুম শুরু হবে। তাই নদীতে মাছের পরিমাণ আরো বাড়লে পুরোপুরি লাভবান হবেন তারা।

ভোলার খাল মাছঘাট ঘুরে দেখে গেছে, নদী থেকে ঘাটে ভীড়ছে ট্রলার, ফিশিং বোট ও নৌকা। জেলেদের আহরণকৃত মাছ আড়তে তুলে ডাক দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত দামে সেসব মাছ কিনে নিচ্ছেন বেপারীরা। এরপর ঝুড়িতে প্যকেটজাত ও সংরক্ষণ করা হচ্ছে।  জেলেদের হাত থেকে আড়তদার সেখান থেকে পাইকার এবং বেপারীদের হাত ঘুরে এসব মাছ চলে যাচ্ছে ঢাকা, চাঁদপুর ও বরিশালের বিভিন্ন আড়তে।  

আহরণকৃত ইলিশ ট্রলার থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে।  ছবি: বাংলানিউজ ভোলার বিভিন্ন আড়ৎ থেকে এক কেজি ওজনের প্রতি হালি ইলিশ ২৮০০ টাকা, ৫০০ গ্রামের মাছ ১২০০/১৫০০ টাকা, ৩০০ গ্রামের মাছ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, ভেল্কা ২৫০ টাকা এবং জাটকা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এসব মাছ ঢাকা বরিশালে আরো চড়া দামে বিক্রি হয়।

ভোলা সদরের শিবপুর এলাকার জেলে মো. আলী বলেন, দুইদিন ধরে নদীতে মাছ ধরা পড়ছে, সকালে ৪ ঝুড়ি মাছ আড়তে বিক্রি করেছি।

মো. হোসেন মাঝি বলেন, দুইদিনে ৩০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছি, আগের চেয়ে মাছের পরিমাণ অনেক বেশি।

জেলে মোসলেউদ্দিন বলেন, এতোদিন নদীতে মাছ ছিলো না, তাই আমরা অনেক হতাশার মধ্যে ছিলাম। অনেক ঋণ হয়েছে, আশা করি এবার মাছ বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।

জেলে ওমর ফারুক এবং লোকমান বলেন, গত ৩দিন ধরে মাছের পরিমাণ বেড়েছে, এ ধারা অব্যাহত থাকলে জেলেদের সংকট দূর হবে নয়ত আবারো বিপর্যয়ের মুখে পড়বে জেলেরা। কারণ এক মাস পরেই ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা আসবে।

আহরণকৃত ইলিশ।  ছবি: বাংলানিউজভোলা খালের আড়তদার মো. হারুন ভূয়া বলেন, আগে অলস সময় কাটাতাম এখন বসে থাকার সময় নেই, কারণ ইলিশ ধরা পড়ায় মৎস্যজীবীদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে।
 
তিনি আরও বলেন, এ ঘাটে ১৭টি আড়ৎ রয়েছে, প্রতিদিন এখান থেকে কয়েক লাখ টাকার মাছ ঢাকা বরিশাল যাচ্ছে। প্রতিটি আড়তেই এখন মাছ কেনা-বেচার ধুম। আড়তদাররাও খুশি জেলেরাও খুশি।

ভোলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ইলিশ বয়সে পরিণত হয়েছে তাই সাগর থেকে নদীর দিকে চলে আসছে। কিছু মাছ আবার ডিম ছাড়তে আসে। তাই জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে জেলায় ৩ হাজারের বেশি মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। শুধু জেলা সদরে উৎপাদন হয়েছে ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad