ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

চামড়া ভালো হলে দাম আছে, ক্ষতির সম্ভাবনাও কম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৮
চামড়া ভালো হলে দাম আছে, ক্ষতির সম্ভাবনাও কম আমিনবাজার পাইকারি আড়ত/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা (সাভার): ‘ভালো চামড়ার ভালো দাম। টাকা খাটিয়ে ব্যবসা করবো, না বুঝে চামড়া কিনবো তাতো হয়না। কিছু ব্যবসায়ী আছে যারা না বুঝেই টাকার গরমে সব ধরনের চামড়া কিনে, তারাতো ক্ষতির সম্মুখীন হবেই। কারণ ভালো চামড়া দেখে কিনলে এবং ঠিকমতো লবণজাত করতে পারলে ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা নাই’।

এভাবেই বাংলানিউজকে তার অভিজ্ঞতার কথাগুলো বলছিলেন রাজধানী সংলগ্ন আমিনবাজার পাইকারি আড়তের ব্যবসায়ী সানোয়ার হোসেন।

প্রায় ৩০ বছর ধরে চামড়ার ব্যবসা করে আসা সানোয়ার হোসেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন লেদার সেক্টর বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (এলএসবিপিসি) আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায়ও অংশ নিয়েছেন।

সেখানে কাঁচা চামড়ার গুণগত মান রক্ষায় লেস্-কাট নিয়ন্ত্রণ এবং সঠিক পদ্ধতিতে চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও পরিবহন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছেন সানোয়ার।  

সানোয়ার হোসেন বলেন, এবার ঈদে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার চামড়া কিনেছি। প্রতিটি চামড়া এক হাজার থেকে পনের’শ টাকায় কেনা হয়েছে। এসব চামড়া প্রতি লবণ লাগানোসহ সংরক্ষণে ব্যয় হয়েছে আরও তিন’শ টাকা করে। এভাবে ১০-১৫ দিন চামড়াগুলো রাখলে তা শক্ত হয়ে যাবে, যা পরবর্তীতে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই না বুঝে চামড়া কিনে লবণজাত না করায় চামড়া পঁচিয়ে ফেলছে। পরে সেগুলো আর বিক্রি করতে পারছেনা। কারণ পয়সা দিয়েতো আমি কখনই পঁচা চামড়া কিনবো না।

অপর ব্যবসায়ী শ্রী নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, আমি সারা বছর ধরেই চামড়ার ব্যবসা করি। এখানে আমার মতো প্রায় শতাধিক ব্যবসায়ী রয়েছে যারা সারা বছর ধরেই চামড়া কেনা-বেঁচা করে। ঈদে আমাদের আলাদা কোনো প্রস্তুতি নেই। তবে ঈদের সময় একসঙ্গে অনেক চামড়ার আমদানি হয় আমিনবাজারে। এসময় প্রত্যেক ব্যবসায়ী দুই থেকে তিন হাজার করে চামড়া কিনে লবণজাত করে। পরে সেগুলো বিভিন্ন ট্যানারিতে বিক্রি করা হয়।  

তিনি আরও বলেন, সরকার এবার ৪০-৪৫ টাকায় প্রতি ফুট চামড়ার দাম নির্ধারণ করলেও আমরা যে চামড়া কিনেছি তা লবণজাতসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৬০-৬৫ টাকা খরচ পড়বে। অ্যাপেক্স ট্যানারির সঙ্গে আমি ব্যবসা করি। কিছুদিনের মধ্যেই তারা আমাদের চামড়া নিয়ে ‘ওয়েট ব্লু ’ করবে। এসময় চামড়ার কোয়ালিটি বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিলিয়ে একটা রেট দিবে এবং আমাদের বিল পরিশোধ করবে। ঈদের কিছুদিন আগেও আমি অ্যাপেক্স ট্যানারিতে চামড়া দিয়েছি, যার রেট পেয়েছিলাম ৭০-৭৫ টাকা ফুট। তাই এবারও দাম ভালোই পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন অভিজ্ঞ এ ব্যবসায়ী।  

সিন্ডিকেটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কথাটা সত্য নয়। যারা সত্যিকারের ব্যবসায়ী তারা কখনও সিন্ডিকেট করবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম কিছুটা কমে যাওয়ায় ট্যানারি মালিকরাও চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না।

চামড়ার পোরী কবির হোসেন জানান, চামড়া শুধু কিনলেই হবেনা এর যত্নও করতে হবে। আমরা দেখে শুনে দাম দিয়ে হলেও ভালো চামড়া কিনি। যা সঠিকভাবে গুদামজাত করে যে ট্যানারিতে সুবিধাজনক দাম পাই সেখানেই বিক্রি করে দেই।

অ্যাপেক্স ট্যানারির মহা-ব্যবস্থাপক মির্জা আনোয়ারুল কবির বাংলানিউজকে বলেন, চামড়ার বাজারে যে সিন্ডিকেটে বাণিজ্যের যে অপবাদ উঠেছে সেটি আমি কোনভাবেই বিশ্বাস করিনা। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আমরা চামড়া ক্রয় করে থাকি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৮
ওএফ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad