ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষি

নান্দনিকতা বাড়ে আহ্লাদী অর্কিডে

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৮
নান্দনিকতা বাড়ে আহ্লাদী অর্কিডে অর্কিড ফুল আকর্ষণ বাড়াচ্ছে বৃক্ষমেলায় আগত দর্শনার্থীদের। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: শ্রাবণের আকাশে সাদা-কালো মেঘের ওড়াউড়ি করলেও তা বৃষ্টি হয়ে ঝরতে ঝরতে ধানমণ্ডির বাসিন্দা তানজিন অন্তির কেনা হয়ে গেছে আহ্লাদী মেয়ের মতো অনিন্দ্য সুন্দর ফুল অর্কিড গাছটি। সাদা-গোলাপি আর নীলের সংমিশ্রিত ফুলের এ গাছটি স্থান নেবে তার নিজ হাতে সাজানো গোছানো ঘরের কোণটিতে।

সোমবার (২৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বৃক্ষমেলায় বাংলানিউজের কথা হয় প্রকৃতিপ্রেমী অন্তির সঙ্গে। নিজের গোছানো ঘর ও বারান্দায় ছোট্ট বাগানটিকে আরও নান্দনিক করে সাজানোর জন্য তিনি বৃক্ষমেলায় এসেছিলেন বিভিন্ন গাছের চারা কিনতে।

অর্কিড ফুল আকর্ষণ বাড়াচ্ছে বৃক্ষমেলায় আগত দর্শনার্থীদের।  ছবি: বাংলানিউজকথা হলে অন্তি বাংলানিউজকে বলেন, ফুলের রাজ্যে অর্কিড এক অনিন্দ্য সুন্দর ফুল। এর খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। এর আগেও আমি বেশ কিছু অর্কিড কিনেছিলাম। সেগুলোকে আহ্লাদী মেয়ের মতো করে আস্তে আস্তে বড় করে তুলেছি। আর সম্প্রতি সেগুলো আমার যত্নের উপহার হিসেবে ফুলে ভরিয়ে তুলেছে আমার বারান্দার ছোট্ট বাগানটি। তাই আবারও কয়েকটি অর্কিড বেছে নিলাম, এগুলো এবার ঘরের কোণে রাখবো।

তিনি আরও বলেন, যেকোনো স্থানের নান্দনিকতা বাড়াতে সুন্দরী এ ফুলগুলোর জুড়ি মেলা ভার। কেননা অন্য ফুল যেখানে কয়েকদিনেই শুকিয়ে যায়, সেখানে এগুলো ছয়মাস পর্যন্তও থাকে। আর জায়গাও যেমন অল্প লাগে, তেমনি টবটা সুন্দর হলে বারান্দা বা ছাদ বাগানের পাশাপাশি মানিয়ে যায় অফিসেও।

বর্ণ ও বৈচিত্র্যে বিশ্বের সর্বাধিক আকর্ষণীয় ফুল অর্কিড। অনেকের কাছে নামটি নিজেই একটি মাধুর্য। সৌন্দর্য, আনন্দ, পরিচর্যা, নান্দনিক রসবোধ এবং সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে এ ফুলটিকে বিবেচনা করেন অনেকেই। আর কেনই বা করবে না? এ ফুল যে কামোদ্দীপ্ত করতেন স্বয়ংপ্রেম ও সৌন্দর্যের দেবী ‘ভেনাস’কে। অর্কিডের বিশেষ গঠনের প্রতি তার ছিল খুবই আসক্তি। গাছ দেখছেন অন্তিসহ অন্যরা।  ছবি: বাংলানিউজগ্রিক পুরাণ মতে, এক উৎসবের রাতে মতিভ্রস্ট হয়ে অর্কিড এক সন্ন্যাসীনীকে আক্রমণ করেছিলেন। এতে মঠের অন্যান্য সন্ন্যাসীরা রেগে গিয়ে অর্কিডকে মেরে টুকরো টুকরো করে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়। অর্কিড তখন দেবতা জিউসের কাছে প্রার্থনা জানালে তিনি অর্কিডের দেহের শেষ অংশ থেকে সৃষ্টি করেন অর্কিড ফুল। আর এ ফুলের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, প্রজাপতির মতো এ ফুলটিকেও ভাগ করা যায় দু'টি সমান ভাগে। তবে প্রজাপতির মতো সুন্দর অর্কিডের বেচাকেনা এখনও সেভাবে শুরু হয়নি জাতীয় বৃক্ষমেলায়।

এ প্রসঙ্গে ডানকানস অর্কিড নার্সারির প্রতিনিধি শাহ আলম কিরণ বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম সপ্তাহ পার হয়নি বলেই হয়তো অর্কিডের গাছটা বিক্রি এখনও কম। তবে আশা করছি এবার অর্কিডের বিক্রি বাড়বে। এর প্রতি অনেকের ভালোবাসা জন্মাবে।

বৃক্ষমেলা ঘুরে দেখা গেছে, এবারের মেলায় প্রায় ২০ প্রজাতির অর্কিড পাওয়া যাচ্ছে। গাছ এবং ফুলের মানের উপর ভিত্তি করে এগুলোর মূল্য ধরা হয়েছে ২০০ থেকে ৮০০ টাকা। আর প্রতিটি চারাগাছ পাওয়া যাবে ১০০ টাকা করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৮
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।