ঢাকা: বিদ্যুৎ খাতের সেবা প্রদানকারী সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে অভিন্ন হিসাব পদ্ধতি চালু করছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
বৃহস্পতিবার কমিশন কার্যালয়ে এ বিষয়ে এক গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
বিদ্যুতের দাম নির্ধারণসহ এ খাতে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে এ পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিশন।
শুনানি শেষে প্রস্তাবিত অভিন্ন হিসাব পদ্ধতি নীতিমালা’র উপর মতামত দেওয়ার জন্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৩০ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়। আগামী রোববার থেকে ৩০ কার্যদিবস গণনা শুরু হবে। ওই মতামতের ভিত্তিতে নীতিমালা চূড়ান্ত করে কমিশন আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে তা জারি করবে।
একই সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ১৫টি সংস্থাকে বিষয়টি অবহিত করতে চিঠি দেওয়া হবে।
শুনানিতে কমিশনের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এমদাদুল হক ও ড. সেলিম মাহমুদসহ সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কমিশন চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন বলেন, ‘এ পদ্ধতি চালু হলে এ খাতে স্বচ্ছতা আসবে। বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রেও অভিন্ন হিসাব পদ্ধতি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ’
তিনি বলেন, ‘এই পদ্ধতির ফলে সবগুলো প্রতিষ্ঠান জাতীয় আয় ও ব্যয় একই খাতে রেকর্ড করবে। ফলে কমিশনের পক্ষে তাদের আয়, ব্যয়, দায়-দেনা ও সম্পত্তির তুলনামূলক বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা সম্ভব হবে। ’
কমিশনের সদস্য সালাহ উদ-দীন-আহমেদ বলেন, ‘অভিন্ন হিসাব পদ্ধতি না থাকায় অতীতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নানা সমস্যা হয়েছে। এখাতে বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত রোড শোগুলোতেও বিনিয়োগকারীরা এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ফলে দ্রুত এ পদ্ধতি চালু করা জরুরি। ’
ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এর প্রেসিডেন্ট ড. জামালউদ্দিন আহমেদ এফসিএ বলেন, ‘ যুক্তরাষ্ট্রে গত একশ বছর ধরে এ পদ্ধতি চালু রয়েছে। অন্য সব উন্নত দেশেও এ পদ্ধতি বিদ্যমান। আমাদের দেশে বিদ্যমান হিসাব পদ্ধতি একেক প্রতিষ্ঠানে একেক রকম এবং তা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নয়। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা আমাদের হিসাব পদ্ধতির উপর আস্থা রাখতে পারেন না বলে এখাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হন না। ’
কমিশনের পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়সহ বিদ্যমান হিসাব পদ্ধতির ফলে যখন তারা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় তখন প্রস্তাবিত দাম যথার্থ কিনা তা তুলনা করা যায় না। অভিন্ন হিসাব পদ্ধতি চালু হলে এ তুলনা করা সম্ভব হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১০