ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

হলুদের সমারোহের মাঝে মৌমাছিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮
হলুদের সমারোহের মাঝে মৌমাছিরা মাঠজুড়ে সরিষা ফুল। ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: কৃষকের ফসলি জমিতে বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে হলুদ ফুলে ভরে গেছে। চারিপাশে হলুদ আর হলুদের সমারোহের মাঝে মৌমাছিরা এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে মুহুর্তেই ছুটছে ও আহরণ করছে মধু।

কৃষকের বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে গেছে। যার সুগন্ধে প্রাণ জুড়ায় পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।

ফসলি জমিতে হলুদ ফুলে ছেয়ে যাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে খুশির হাসি।  এমন চিত্র এখন ধানের দেশ হিসেবে পরিচিত উত্তরের জেলা দিনাজপুরের ফসলি জমিতে অবস্থিত সরিষা ক্ষেতে। গত মৌসুমে সরিষা চাষ করে কৃষকেরা ভালো লাভবান হয়। তাই এবার গত মৌসুমের চেয়ে বেশি সরিষা চাষ হয়েছে। এজন্য দিন দিন দিনাজপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সরিষা চাষ। কম সময়ে ও স্বল্প পুঁজি ব্যয়ে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে ঝুকছে। অধিকাংশ কৃষক সরিষাক্ষেতে মৌমাছি চাষ করছে। মৌমাছি সরিষা ফুল থেকে মধু আহরণ করে ফলন বাড়ার পাশাপাশি কৃষকের হচ্ছে বাড়তি আয়।

দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীরবন্দর এলাকার কৃষক মো. আফজালুর রহমান মানিক বাংলানিউজকে জানান, গত বছর বিঘাখানেক জমিতে সরিষা চাষ করে বেশ লাভবান হয় তিনি। গত মৌসুমে লাভবান হওয়ায় চলতি মৌসুমে তার পাঁচ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছে। মাটির সঠিক মান বজায় রেখে এখন সরিষা চাষ লাভ জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করলে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা হয়। এজন্য কৃষি বিভাগ সরিষা চাষিদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে আসছে। মধু আহরণে ব্যস্ত মৌমাছি।  ছবি: বাংলানিউজবিভাগের সহযোগিতায় কৃষকেরা বর্তমানে সরিষা চাষে লাভবান হচ্ছে। সরিষা চাষে তেমন খরচ হয় না। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষাক্ষেতে পানি সরবরাহ কম লাগে। তাই সেচ কাজেও তেমন অর্থ ব্যয় হয় না। চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের মতো এবারও সরিষার বাজার দর ঠিক থাকলে এবারও লাভবান হবে কৃষক।

আফজালুর রহমান মানিক আরো জানান, সরিষা চাষের পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকরা মৌমাছির মাধ্যমে হলুদ ফুল থেকে মধু আহরণ করছে। এতে সরিষা চাষের পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকরা বাড়তি টাকা আয় করছে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. তৌফিক ইকবাল জানান, গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে সরিষা চাষ বেড়েছে। এবার জেলার প্রায় সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চলতি মৌসুমে ১৩ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে। চলতি মৌসুমে প্রচন্ড শীতকে উপেক্ষা করে কৃষকেরা সরিষা চাষ শুরু করেন। তবে এবার প্রতিকূল আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে।

তিনি জানান, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। আধুনিক পদ্ধতিতে সরিষা চাষ করলে মাটির গুনগত সঠিক মান ও মাটির সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকে সঠিক পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে । আগামীতে কৃষক ঘরে সরিষা তোলা পর্যন্ত কৃষি বিভাগ সার্বিক সহযোগিতা করবে। কৃষকেরা সরিষার পাশাপাশি মৌমাছির মাধ্যমে মধু আহরণ করে বাড়তি আয় করছে। সরিষা চাষে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন সরিষা চাষে ঝুকছে। গত বছরের মতো চলতি মৌসুমেও ন্যায্য মূল্য পেলে আগামীতে স্থানীয় কৃষকরা সরিষা চাষে আরো বেশি করে ঝুকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।