ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে নিল সরকার, চালের দাম কমার আশ্বাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে নিল সরকার, চালের দাম কমার আশ্বাস ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দাম কমাতে চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের সব দাবি-দাওয়া মেনে নিয়েছে সরকার। তবে এতে চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা করে কমবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

আর কম দামে চাল দিতে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ে খোলাবাজারে চাল বিক্রির (ওএমএস) কর্মসূচি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।  

চালের দাম কমাতে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে তিন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেলা ১২টা থেকে দুইটা পর্যন্ত চাল ব্যবসায়ী, আড়তদার, চালকল মালিকদের সভা অনুষ্ঠত হয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এই বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।  

ব্যবসায়ীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী এবং চাল সংক্রান্ত বিভিন্ন সংগঠনের মাঠ পর্যায়ের নেতারা।

সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেন, চাল আমদানি এখন টপ মোস্ট প্রায়োরিটি। বাজার সমস্যা সমাধানে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব কমিয়ে আনার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে যেভাবে পারেন চাল নিয়ে আসেন, কেউ বাধা দেবে না।  
 
চটের ব্যাগে আমদানির কারণে টনপ্রতি অতিরিক্ত ১২ ডলার খরচ হয় জানালে বাণিজ্যমন্ত্রী আগামী তিন মাস আমদানি, রফতানি ও সরবরাহ সংক্রান্ত সকল কাজে প্লাস্টিকের ব্যাগের ব্যবহারের অনুমতির কথা জানান। চলমান আমদানি প্রক্রিয়ায় এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানান মন্ত্রী।
 
ভারত থেকে আমদানির জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর দিয়ে অন্যান্য সকল পণ্য অনুমতি থাকলেও চালের অনুমতি না থাকায় খরচ বেশি হচ্ছে জানালে তোফায়েল আহমেদ ওই স্থলবন্দর দিয়ে চাল আনার ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। ট্রেনে চাল আনার ক্ষেত্রেও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

চালের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে মজুদ ঠেকাতে জেলা প্রশাসকদের অভিযান চালানোর যে নির্দেশনা ছিল তা শিথিল করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যাতে কোনো ব্যবসায়ী হয়রানির শিকার না হয় তাই এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।  

ভারত থেকে চাল আমদানি তিন মাস বন্ধ- এমন গুজবে ২/৩ দিনের মধ্যে চালের দাম বেড়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, এটা অস্বাভাবিক।  

 খাদ্য পরিস্থিতি তুলে ধরে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে খাদ্যের কোনো সঙ্কট নেই। বিভিন্ন কারণে চালের দাম বেড়েছে। তবে আমাদের এক কোটি মেট্রিকটন চাল মজুদ আছে। যে পরিমাণ সঙ্কট রয়েছে সেগুলো সরকারি ও বেসরকারিভাবে আমদানি করে পূরণ করা হবে।

দাম কমাতে বুধবার থেকে সারা দেশে উপজেলা পর্যায়েও ওএমএস কর্মসূচি চালু করা হবে বলে জানান কামরুল ইসলাম।  
তবে তিনি এও বলেন, আপাতত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বন্ধ থাকবে। বুধবার থেকে ১০ টাকা কেজিতে বিক্রির জন্য খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি চালু করার কথা ছিল।  

 গত রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে ওএমএস পদ্ধতি চালু করেছে সরকার। এবার ওএমএস-এ দেওয়া হচ্ছে আতপ চাল, যার মূল্য দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 গত কয়েক দিনে প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে চালের দাম। মোটা চালের কেজি ৫০ টাকা ও চিকন চালের মধ্যে নাজিরশাইল ও মিনিকেটের মূল্য হয়েছে ৭০ টাকা পর‌্যন্ত। চালের দাম কমাতে নানা উদ্যোগের মধ্যে দেশের মাঠ পর‌্যায় পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসে সরকার।    

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এক ট্রাক চাল ঢাকা নিয়ে আসতে মোট ১৮ হাজার টাকা খরচ হওয়ার কথা থাকলেও বঙ্গবন্ধু সেতুতে অতিরিক্ত টোল নেওয়ায় তা পড়ে ২৫ হাজার টাকা। এই খরচ চালের উপর পড়ে। এতে দাম বেড়ে যায়।  
 
বন্যা ও ব্লাস্ট রোগে ফসল ক্ষতিগ্রস্তের পর বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা না করে দাম ঠিক করা হয়েছে জানিয়ে ব্যবসায়ীরা আগামী আমন মৌসুমে আলোচনা করে ধান সংগ্রহের পরামর্শ দেন।

সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ বলেন, সরকারের উদ্যোগের পর চালের দাম কমবে ২-৩ টাকা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
এমআইএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।