ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

একদিনের ব্যবধানে চিনি কেজি প্রতি বেড়েছে ৬ টাকা

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
একদিনের ব্যবধানে চিনি কেজি প্রতি বেড়েছে ৬ টাকা চিনি- ছবি ফাইল ফটো

ঢাকা: এক সপ্তাহ আগেও মিল গেটে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ৫৩ টাকায়। সপ্তাহ শেষে (শুক্রবার) যা দাড়ায় ৫৪ টাকায়। আর একদিনের ব্যবধানে শনিবারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয় ৫৯ টাকায়। এ নিয়ে সপ্তাহের মধ্যে মিল মালিকরা প্রতি কেজি চিনির দাম বাড়ালো ৬ টাকা।

গত সপ্তাহে (২২-২৮ এপ্রিল) মিলগেটে চিনির দর বেড়েছিল বস্তায় (৫০ কেজি) ৫০ টাকা। আর পবিত্র শবে-বরাত ও রমজানকে সামনে রেখে শনিবারেই (২৯ এপ্রিল) মিলগেটে চিনির দাম রেড়েছে বস্তায় দেড়শ থেকে দুইশ’ টাকা।


 
রমজান মাস আসতে আরো প্রায় এক মাস। অথচ এরইমধ্যে ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কোম্পানিগুলো কারখানা সংস্কারের নামে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। পাইকারি ব্যবসায়ী সমিতির অভিযোগ, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির পায়তারা করছে কোম্পানিগুলো।
 
রাজধানীর মৌলভীবাজারে পাইকারি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী গোলাম মওলা এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, এক সপ্তাহ আগের দামের চেয়ে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) পর্যন্ত মিল গেটে চিনির দাম বেড়েছে বস্তায় ৫০ টাকা। তবে আজকের (শনিবার) খবর এখনো জানিনা। রমজানে কি হবে এখনই বলা যাচ্ছেনা। এরইমধ্যে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের মিল সংস্কারের কথা বলে নান‍া টালবাহানা শুরু করেছে। গত বছরও এই ধরনের কথা বলে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছিলো মিল মালিকরা। এতে সব দোষ এসে পড়ে পাইকারি ব্যবসায়ীদের ওপর।
 
তিনি বলেন, সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, ঈগলু, টিকে গ্রুপ, দেশবন্ধু, এস আলমের মতো আট থেকে দশটি গ্রুপ রয়েছে, যারা দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এদের ওপর নির্ভর করে দেশের চিনি, তেল, ছোলা, ডালের বাজার। আমরা তাদের ওপর নির্ভরশীল। তারা আবার বিশ্ব বাজারের ওপর নির্ভর করেন।
 
সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা বাংলানিউজকে জানান, শনিবার মিল গেটে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ৫৮ টাকা ৫৮ পয়সা থেকে ৫৯ টাকা পর্যন্ত। পাইকারি বাজারে যা ৬২ টাকা এবং খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা থেকে ৬৮ টাকা কেজি দরে।
 
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে পর্যাপ্ত পরিমান চিনি মজুদ রয়েছে। পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা দাম না বাড়ালে চিনির দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই।
 
বিশ্বজিৎ সাহার দেওয়া হিসেবের সঙ্গে আকাশ-পাতাল পার্থক্য দেখা গেছে পাইকারি বাজারে। রমজানে বেশি দরে চিনি বিক্রির আগাম ষড়যন্ত্র হিসেবে মনে করছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
 
বিশ্বজিতের দেওয়া তথ্যমতে শনিবারে মিলগেটে চিনির দর ৫৮ টাকা প্রতি কেজি বা ২ হাজার ৯০০ টাকা প্রতি বস্তা। তবে বাস্তবে তা নয়। মৌলভীবাজারে ওইদিন চিনি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ৭৬০ টাকা প্রতি বস্তা দরে। এতে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৫৫ টাকা।
 
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, মূল্যের এই তারতম্যের প্রভাব পড়বে রোববারের পাইকারি বাজারে। মিলগেটে চিনির দর বস্তা প্রতি দেড়শ টাকা বাড়লে পাইকারি বাজারেও কেজি প্রতি তিন টাকার বেশি দাম বাড়বে।
 
রোববার (৩০ এপ্রিল) বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ে আসন্ন রমজান উপলক্ষ্যে ভোগ্যপণ্যের বাজার পর্যালোচনায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বৈঠককে কেন্দ্র করেই এই চিনির দর একদিনেই বাড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্ট‍া, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
আরএম/বিএস  

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।