ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

বোরো নিয়ে আতঙ্কে কৃষি বিভাগ!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
বোরো নিয়ে আতঙ্কে কৃষি বিভাগ! ডুবে যাওয়া ধানের মাঠে তবু কিছু পাওয়ার আশায় হতাশ কৃষক! ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: বৈরী আবহাওয়ায় বিপর্যয়ের ‍ঝুঁকিতে পড়েছেন কৃষকেরা। আগাম বৃষ্টিতে পানিতে ডুবে গেছে জমির ধান। ঝড়ো হাওয়ায় ধানগাছ লুটিয়ে পড়েছে মাটিতে। পচে নষ্ট হচ্ছে সোনা রঙের ধান। রোগাক্রান্ত ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। মাঠের ধান ঘরে তোলার পুরোপুরি উপযোগী হতে আরও অন্তত বিশ দিন সময় লাগবে। তবেই ধান কেটে মাড়াইয়ে নামতে পারবেন কৃষকেরা।

এমন পরিস্থিতিতে ফসল নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা। তাদের সঙ্গে কৃষি বিভাগও রয়েছে আতঙ্কে।

 

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকারের সঙ্গে আলাপকালে তার কণ্ঠেও আতঙ্কের আভাস পাওয়া গেল।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ১২টি উপজেলায় বোরোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বাড়তি আরও ৬৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো চাষ করা হয়। এরমধ্যে বিআর-২৮, ২৯, ৪৮, মিনিকেট, কালো বোরো জাতের ধান অন্যতম।

প্রতুল চন্দ্র বাংলানিউজকে জানান, সোমবার (২৪ এপ্রিল) পর্যন্ত মাঠের ১ হাজার ৭২০ হেক্টর জমির ধান পানিতে ডুবে রয়েছে। পুরো জেলায় মাত্র এক শতাংশ ধান কাটতে পেরেছেন কৃষকরা।  

বর্তমানে থোড় অবস্থায় রয়েছে দুই শতাংশ, ফুল অবস্থায় দশ শতাংশ, নরম দানা অবস্থায় পঞ্চাশ শতাংশ, শক্ত দানা অবস্থায় ত্রিশ শতাংশ, পাকা অবস্থায় রয়েছে সাত শতাংশ বোরো ধান। এসব ধান মাড়াইয়ের উপযোগী হতে কমপক্ষে ১৫-২০ দিন সময় লাগবে। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কৃষির জন্য বড় হুমতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

ডুবে যাওয়া ধানের মাঠে তবু কিছু পাওয়ার আশায় হতাশ কৃষক! ছবি: আরিফ জাহানতিনি আরও জানান, ধুনট, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা উপজেলার যমুনা নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলে লাগানো কালো বোরো ধান কাটা হয়েছে। এছাড়া সীমিত আকারে পানিতে তলিয়ে যাওয়া কিছু ধান কেটেছেন বেশ কয়েকটি উপজেলার কৃষকরা। এসব ধানে ৭-৮ মণ হারে ফলন এসেছে।  

বোরোর ফলনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবকিছুই আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করছে। এ মুহূর্তে কোনো কিছুই সঠিক করে বলা সম্ভব না। সামনে যে কয়েকটি দিন রয়েছে তা বোরো আবাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  ক্ষয়ক্ষতির হিসাব জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।  

তবে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকের সঙ্গে মাঠে রয়েছেন। এরপরও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় কৃষি বিভাগও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে বলে স্বীকার করেন এই কর্মকর্তা।  

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, বিআর-২৯ জাতের ধান সাধারণত দেরিতে লাগান কৃষকরা। এ জাতের ২০ শতাংশ ধান এখনও ফুল অবস্থায় রয়েছে।  দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে সিংহভাগ ধান নষ্ট হয়ে যাবে।  

তিনি বলেন, অনেক ক্ষেতের ফসল রোগে আক্রান্ত হয়েছে। কৃষক পর্যাপ্ত কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো ফল  পাচ্ছেন না। এর প্রভাবে রোগাক্রান্ত ক্ষেতের ধান চিটায় পরিণত হয় হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৫১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআর/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।