ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকে সম্প্রতি চালু হওয়া গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে (হেল্প ডেস্ক) চালু করা হচ্ছে ই-১ প্রযুক্তি। বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও বেশি গ্রাহক বান্ধব করতে এই প্রযুক্তি বসানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ দেশের সব ধরনের ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা ঠিক মতো সেবা পাচ্ছেন কিনা অথবা তাদের কোন অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে গত জুন মাসে চালু করা হয় হেল্প ডেষ্কটি। বর্তমানে এটিকে গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষা কেন্দ্র (কাস্টমার ইন্টারেস্ট প্রোটেকশন সেন্টার) নামে নামকরণ করা হয়েছে।
এখানে একজন গ্রাহক ঋণ থেকে শুরু করে লেনদেন, ব্যাংকের অনিয়ম, কর্মকর্তাদের অনিয়মসহ সরকারি, বিশেষায়িত, বেসরকারি বাণিজ্যিক এবং বিদেশি ব্যাংকের যেকোন শাখা সম্পর্কে অভিয্ােগ তুলতে পারছেন।
এদিকে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি কোড নম্বর বরাদ্ধের জন্য বিটিআরসির কাছে প্রাথমিক আবেদন নিয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু বিটিআরসি তাদের পুরো প্রকল্পের নকশাসহ আবেদনের পরামর্শ দিয়েছে। তবে এরইমধ্যে সংযোগ পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এ আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এস এম মনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক সরাসারি গ্রাহক সংশ্লিষ্ট নয়। আমাদের গ্রাহক হচ্ছেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে তাদের গ্রাহকরা সার্বিকভাবে আমাদের গ্রাহক। তাদের স্বার্থ রক্ষা করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্রাহক সেবাকে আরও জোরদার করতে ই-১ প্রযুক্তি স্থাপন করা হবে। যাতে করে যেকোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোন ব্যাংক সম্পর্কে তার অভিযোগ সরাসরি সহজে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানাতে পারে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০ জন ব্যক্তি বিভিন্ন ব্যাংক সম্পর্কে তাদের কাছে অভিযোগ করছেন। এসব অভিযোগ কোনটি ডাক বিভাগের মাধ্যমে লিখিত, ইমেইল অথবা ফ্যাক্সের মাধ্যমে আসে।
সূত্র জানায়, চালুর পর থেকে আগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত প্রায় চার হাজার ব্যক্তি তাদের অভিযোগের কথা বাংলাদেশ ব্যাংকে জানিয়েছেন।
আর সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা সেই অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে অভিযোগ সম্পর্কে অভিযুক্ত ব্যাংকের কাছে জানতে চায়। এবং তা সমাধানের নিদের্শ দেওয়া হয়। ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এই সেবা পাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাচ্ছে এই সেবাকে আরও বেশি জনপ্রিয় করতে। যাতে করে দেশে-বিদেশি অবস্থানকারি যেকেউ কোন ধরনের হয়রানি না হয়ে দ্রুত তার বক্তব্য তুলে ধরতে পারে। আর এজন্য বসানো হচ্ছে ই-১ প্রযুক্তি।
জানা গেছে, বিটিআরসি অনুমোদন দিলে তাতে একসঙ্গে ৩০টি ডেস্ক থেকে গ্রাহকের বক্তব্য শোনা যাবে। যেখানে বতর্মানে কাজ করছেন ৪জন। কোন গ্রাহক যখন সংশ্লিষ্ট কল সেন্টারের ঐ নির্দিষ্ট নম্বরটিতে টেলিফোন করবেন। একজন ব্যস্ত থাকলে তা আরেক কর্মকর্তা রেসপনন্স করতে পারবেন। ফলে গ্রাহককে আর অপেক্ষা করতে হবে না। তাছাড়া একটি মাত্র নম্বরে মাধ্যমে এই সেবা পাওয়া যাবে।
তবে রাত-দিনের ব্যবধানের কারণে রাতে সেবা দিতে বর্তমানের মোবাইল সেবা অব্যাহত থাকবে। থাকবে ফ্যাক্স ও ই মেইল সেবাও।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিদিন যারা অভিযোগ করেন বা পরামর্শ চান তাদের ঐ দিনই সর্বশেষ তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয়। বিদেশ থেকে অনেক গ্রাহক অভিযোগ করছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে বর্তমানে একটি উপ পরিচালক ও তিনজন সহকারী পরিচালক সরাসরি গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছেন। আর সেবা কার্যক্রম নিশ্চিত করতে বিষয়টির সরাসরি তদারকি করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক গর্ভনর ড. আতিউর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১১