ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়মিত সুবিধার বাইরে রাখার দাবি ব্যবসায়ীদের, বিবেচনার আশ্বাস অর্থমন্ত্রীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১০

ঢাকা: বিশ্বমন্দা মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত দ্বিতীয় দফা প্রণোদনা প্যাকেজের যথাযথ বাস্তবায়ন ও এ প্যাকেজকে নিয়মিতভাবে দেওয়া সুবিধাগুলোর বাইরে রাখার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।



মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠকে তিনটি ব্যবসায়ী সংগঠনের (এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ) নেতারা এ দাবি জানান।

ব্যবসায়ীদের বক্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রী তাদের বক্তব্য বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘এসব বিষয়ে এখনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব নয়। আলোচনার মাধ্যমে আগামী এক মাসের মধ্যে এসব বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেওয়া হবে। ’

ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানো প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারও চায় সুদের হার কমাতে। কিন্তু ঋণের সুদের হার কমালে একই সঙ্গে আমানতের সুদের হারও কমাতে হবে। তাই এ মূহুর্তে সুদের হার কমানো সম্ভব নয়।
 
বৈঠকে ব্যবসায়ীরা সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের কোনো সুফল এখনো পাচ্ছেন না, উল্লেখ করে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এরই মধ্যে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান ব্যবসায়ী নেতারা। এছাড়া ব্যবসায়ীরা বৈঠকে উৎসে কর দশমিক ২৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা, ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানো ও জ্বালানি তেলে ভর্তুকি প্রদানের পরিবর্তে বিপিসি’র আমদানি মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহের প্রস্তাব করেন।
 
বৈঠকে অর্থ সচিব ড. মোহাম্মদ তারেক, বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ডেপুটি গভর্নর জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী, এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ, বিজিএমইএ সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী ও বিকেএমইএ সভাপতি নাসিম ওসমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
 
বৈঠকে পোশাক শিল্পের নতুন বাজার সম্প্রসারণে ৫ শতাংশ নগদ ভর্তুকি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট মোকাবেলায় ২০০৮-০৯ অর্থবছরে সাড়ে ৩ মিলিয়ন ডলারের সম-পরিমাণ রফতানি করেছে এমন কারখানাগুলোকেও  ৫ শতাংশ নগদ ভর্তুকি, এক কেভির অধিক ক্যাপটিভ জেনারেটর ব্যবহারকারী কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ উৎপাদন নবায়ন ফি মওকুফ, ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল ব্যবহারকারী কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ বিলের ওপর ১০ শতাংশ রিবেট, উদ্যোক্তা উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) সুদের হার কমানোসহ বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
    
এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ বৈঠকে বলেন, ঢাকার বাইরে মফস্বল শহরগুলোতে তেমন কোনো শিল্প-কারখানা গড়ে না ওঠায় লোকজন সব ঢাকামুখী হচ্ছে। এ কারণে ঢাকার ওপর জনসংখ্যার চাপ যেমন বাড়ছে তেমনি যানজটও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ঢাকামুখী জনস্রোত রোধ করার জন্য তিনি অবিলম্বে মফস্বল শহরগুলোতে শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা এবং এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলেন।

এছাড়া উৎস কর দশমিক ২৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা, ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানো ও জ্বালানি তেলে ভর্তুকি প্রদানের পরিবর্তে বিপিসি’র আমদানি মূল্যে ব্যবসায়ীদের জ্বালানি তেল সরবরাহের প্রস্তাব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
 
বিজিএমইএ সভাপতি সালাম মুর্শেদী বৈঠকে বলেন, সাধারণভাবে রফতানিকারক পোশাক শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা যেসব সুবিধা (বন্ডেড ওয়্যার হাউজ/ক্যাশ ইনসেনটিভ/ ডিউটি ড্র ব্যাক) পান প্রণোদনা প্যাকেজকে এর বাইরে রাখা উচিত।

তিনি বলেন, প্রতি বছর ব্যাংকগুলো সরকারকে যে কর দেয় এর একটা উল্লেখযোগ্য অংশ আসে পোশাক শিল্প খাত থেকে। সুতরাং এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
 
বিকেএমইএ সভাপতি নাসিম ওসমান বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে কোনো দয়া দাক্ষিণ্য চাই না। সরকার শুধু ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমিয়ে দিক। ’

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় : ১৬৪৮ ঘন্টা, ১৭ আগস্ট ২০১০   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।