ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি: চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১১
উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি: চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা

ঢাকা: দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক উন্নয়নে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে অভিমত দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা বন্দার নায়েক কুমারাতুঙ্গা।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ব্যাক সেন্টারে ‘দক্ষিণ এশিয়ার দারিদ্র দূরীকরণে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন’ শীর্ষক গোলটেবিলে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।



কুমারাতুঙ্গা বলেন, সব ধরনের বৈষম্য ভুলে এ অঞ্চলের দেশসমূহ কেবল একসঙ্গে কাজ করলেই কেবল টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।

অনুষ্ঠানে সকল উন্নয়নে যেকোন দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সকলের অংশ গ্রহণ জরুরি বলেও মত দেন তিনি।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

গোল টেবিলে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, বিরোধী দলীয় নেতার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা শমসের মবীন চৌধুরি, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরি, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজজ্জামান মিয়া, সিপিডির সম্মানীত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি আনিসুল হক, নিজেরা করির নির্বাহী পরিচালক খুশি কবির, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

কুমারাতুঙ্গা বলেন, উন্নয়নের পূর্ব শর্ত গণতন্ত্র, গণতন্ত্র ছাড়া কোনো দেশের উন্নয়ন হয় না। গণতন্ত্র ছাড়া টেকসই উন্নয় হয় না, টেকসই উন্নয়নের জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া জরুরী। তবে গণতন্ত্র হতে হবে সবাইকে নিয়ে। কোন ধরনের বৈষম্য থাকবে না।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতির মতে, ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগত বৈষম্য ভুলে সবাই মিলে একযোগে কাজ করলেই কেবল গণতন্ত্র ও টেকসই উন্নয়ন হবে।

তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্রে অনেক ঘাটতি রয়েছে। আমরা অনেকেই পশ্চিমা গণতন্ত্র চর্চা করতে চাই। ভুল চর্চার কারণে মানুষের গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা কমছে বলেও মনে করেন তিনি। ’

এ সময় কুমারাতুঙ্গা বলেন, যেকোনো দেশের উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলিতা জরুরী। রাজনৈতিক স্থিতিশীলিতা ছাড়া কার্যকর গণতন্ত্র চলতে পারে না। আর রাজনৈতিক স্থিতিশীলিতার জন্য সরকারসহ সকল রাজনৈতিক অংশকে অবদান রাখতে হবে।

তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে ছয় বছর শ্রীলঙ্গার ক্ষমতায় থাকা এই রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নয়নের জন্য সরকার ও জনগণকে এক হয়ে কাজ করতে হয়। এখানে কোনো ধরনের বৈষম্য যেমন থাকতে পারে না। আবার কোন ক্ষুদ্র অংশকে বাদ দেওয়া যাবে না। নেতা, রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকতে হবে।

কুমারাতুঙ্গা বলেন, একটি ভালো সরকারে দুটি গুণ জরুরি। এক উন্নয়ন পরিকল্পনা, দুই, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।

তিনি বলেন, অনেক দেশ আজ উন্নত হচ্ছে তাদের দেশে কোনো বিভেদ না থাকার কারণে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক কর্মীদের মধ্যে আগে গণতন্ত্র থাকতে হবে। তাদের মধ্যে সমঝোতার চর্চা থাকতে হবে।

তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে গণতন্ত্র কাজ করছে না। বিভিন্ন অঞ্চলে বৈষম্য প্রত্যক্ষ করছি। যা উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করছে।  

ড. গওহর রিজভী আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, মানুষের গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা কমছে না। আস্থা কমছে যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছে তাদের প্রতি। সুষম বণ্টন ছাড়া গণতন্ত্র টেকসই হতে পারে না বলেও মত দেন এই উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।