ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যাংকগুলোতে আবারও তারল্য সংকট, কলমানি চড়া

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১১
ব্যাংকগুলোতে আবারও তারল্য সংকট, কলমানি চড়া

ঢাকা: ব্যাংকিং খাতে আবারও তারল্য (নগত টাকার) সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়া নজরদারির পরও বৃহস্পতিবার কলমানির সুদের হার ওঠে ২০ শতাংশে।

 

ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগ, ঈদের কেনা কাটার জন্য ব্যাংক থেকে টাকা তোলা এবং অদক্ষ ফান্ড ম্যানেজমেন্টের কারণে এ সংকট দেখা দিয়েছে বলে অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও সাধারণ গ্রাহকরা মনে করছেন।

বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রায় সব ধরনের গ্রাহকরা তাদের ডিপোজিট মানি (জমা) তুলে নিচ্ছেন।

একই সঙ্গে ব্যাংকগুলো দক্ষতার সঙ্গে তাদের ফান্ড ম্যানেজমেন্ট করতে না পারায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়।

বুধবার কলমানির সুদের হার ছিল প্রায় ১২ শতাংশ।

তারল্য সংকট থাকলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কলমানির সুদের হার সবোর্চ্চ ১২ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়ার ফলে তারল্য সংকট থাকলেও কলমানি নির্ধারণ করায় তা বোঝা যায় না।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দুয়েকটি ব্যাংকসহ অধিকাংশ প্রাইভেট ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গ্রাহকদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে লাইন ধরে টাকা তুলতে হচ্ছে।

টাকা তুলছেন এমন গ্রাহকের সংখ্যা ছিল অসংখ্য। এতেও কিছুটা তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। কলমানির মাধ্যেমে ধার করে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের বিদায় করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঈদের আগে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের নগদ টাকার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া একাধিক ব্যাংক অনেক আগেই তার ডিপোজিট গ্রোথের চেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে। একই সঙ্গে ঋণ বিতরণে পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী  এখনও ঋণ বিতরণ করতে হচ্ছে। এর ফলেও কিছু সংকট দেখা দিচ্ছে। ’

তবে ঈদ উপলক্ষে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দেখা দিলেও অল্প দিনের মধ্যে এ সংকট কেটে যাবে বলে মনে করছেন রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঈদের সময় ব্যাংক থেকে সকলেই টাকা তুলে বিভিন্নভাবে খরচ করেন। এসব কারণেই প্রতি বছর ঈদ এলেই ব্যাংকের উপর আর্থিক চাপ পড়ে। তখনই তারল্য সংকট দেখা দেয়। তবে এটা সাময়িক। ’

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র মতে, কয়েক মাস আগেই কলমানির সুদের সর্বোচ্চ ১৭০ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল।

এ সময় ব্যাকিং খাতে বড় ধরনের একটি অস্থিরতা বিরাজ করে। ওই সংকট মেটাতে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে ধার করে উচ্চ সুদে টাকা গ্রহন করে। এ কারণে কয়েকটি ব্যাংককে শাস্তিও প্রদান করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

পাশাপাশি কলমানির সুদের হার ১৭০ থেকে কমিয়ে পর্যায়ক্রমে ১৬০, ১৫০, ১৪০, ১১৫ এবং সর্বশেষ ১২ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এটিই এখন বলবৎ রয়েছে।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ এলে এমনিতেই ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা বেশি করে টাকা তুলে। এছাড়া ব্যাংকগুলোর কিছু ভুলত্রুটির কারণে তারল্য সংকটের সৃষ্টি হয়। তবে আমার মনে হয় এই সংকট বেশি দিন থাকবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad