ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সেমুতাংয়ের গ্যাস সেপ্টেম্বর থেকেই সরবরাহ সম্ভব: তৌফিক-ই ইলাহী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১১
সেমুতাংয়ের গ্যাস সেপ্টেম্বর থেকেই সরবরাহ সম্ভব: তৌফিক-ই ইলাহী

চট্টগ্রাম: গ্যাস সংযোগ পাইপ  লাইনের কাজ শেষ হলে সেমুতাং গ্যাসক্ষেত্র থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি নাগাদ গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী।

সোমবার দুপুরে সেমুতাং গ্যাস ক্ষেত্র পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।



এ সময়ের মধ্যে সেমুতাং থেকে  চট্টগাম নগরীর অক্সিজেন পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপ লাইন নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সেমুতাং এবং সুন্দলপুরের গ্যাস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চট্টগ্রামের বিদ্যুৎকেন্দ্র, সারকারখানা এবং শিল্প কারখানায় সরবরাহ করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিদ্যুৎ  প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক , জ্বালানি সচিব  মেজবাহউদ্দিন,  পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর  এ সময় তার সাথে ছিলেন।
 
এর আগে সকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্র পরিদর্শনের পর সরাসরি হেলিকপ্টাারযোগে দুপুর ১টা ৩৫মিনিটে তারা সেমুতাংয়ে পৌঁছান।

তৌফিক-ই-ইলাহী সাংবাদিকদের বলেন, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় গ্রীডে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট এবং ২০১২ সালে দুইশ থেকে আড়াইশ মিলিযন ঘনফুট গ্যাস জাতীয়  গ্রীডে যোগ হবে। এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে চট্টগ্রামে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে।

এ সময় সেুমতাং গ্যাস প্রকল্পের পরিচালক ও পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক শহদিুজ্জামান খান জানান, সেমুতাং গ্যাস ক্ষেত্রে ১৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। প্রতি দিন এ গ্যাস ক্ষেত্র থেকে ২০ মিলিয়ন করে গ্যাস উত্তোলন করা হলেও ২০ বছরেও এর মজুদ শেষ হবেনা।

চট্টগ্রামে বর্তমানে গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে কেজিডিসিএল সরবরাহ করতে পারে মাত্র ২৪০ মিলিয়ন ঘনফুট। সেমুতাং থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হলে চট্টগ্রামের গ্যাসের সংকট কিছুটা কাটলেও ঘাটতি থেকে যাবে আরও ১৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

এদিকে, পর্যাপ্ত গ্যাস না থাকায় ২০০৯ সাল থেকে চট্টগ্রামে সব ধরনের আবাসিক, বাণিজ্যিক, ও শিল্প গ্রাহককে গ্যাস সংযোগ প্রদান বন্ধ রয়েছে। গ্যাসের অভাবে হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগে স্থাপিত প্রায় শতাধিক শিল্প কারখানা উৎপাদনে যেতে পারছেনা।

কর্নফুলী গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) জনসংযোগ কর্মকর্তা তৈয়বুল ইসলাম তুহিন বাংলানিউজকে জানান, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর এই গ্যাসক্ষেত্রটি গ্যাস বিতরণের সক্ষমতা অর্জন করবে। তবে অক্টোবর থেকে পুরোপুরি গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে।

এর আগে গ্যাস সরবরাহের জন্য নির্মিত পাইপ লাইনের আশপাশের যেসব শিল্প কারখানায় গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে সেগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থায় গ্যাস দেওয়া হবে। অক্টোবর নাগাদ এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে চট্টগ্রামে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ইতিমধ্যে পাইপ লাইন নির্মাণের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলেও তিনি সাংবাদিকদের জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা এবং ফটিকছড়ি সীমান্তবর্তী এই গ্যাসক্ষেত্রটি আবিস্কৃত হয়।   কিন্তু  তখন ওই অঞ্চলে গ্যাসের চাহিদা না থাকায় গ্যাসক্ষেত্রটি খনন করা হয়নি। কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলনের পূর্ণাঙ্গ কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাপেক্সকে এই গ্যাস উত্তোলনের দায়িত্ব দেয়। অন্যদিকে উত্তোলিত গ্যাস চট্টগ্রামে সরবরাহের জন্য পাইপলাইন নির্মাণ শুরু করে কেজিডিসিএল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।