ঢাকা: রোজার শুরুতে বাজারে সবজির দাম ওঠানামা করলেও রোজার মাঝামাঝিতে এসে দাম শুধু বাড়ছেই। অন্যদিকে গরুর মাংস সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হলেও বেড়েই চলেছে মুরগি ও মাছের দাম।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিউমার্কেট, হাতিরপুল ও কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে- চলতি সপ্তাহে প্রতিটি সবজিতে কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা। এছাড়া গরুর মাংস সরকার নির্ধারিত দাম প্রতি কেজি ২৭০ টাকায় বিক্রি হলেও বেড়েছে মুরগি, খাসির মাংস ও মাছের দাম।
সবজি বিক্রেতারা দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বৃষ্টি, বন্যাকেই দুষছেন। সেই সঙ্গে রমজানে বেশি চাহিদাও দাম বাড়ার আর একটি কারণ বলে উল্লেখ করছেন তারা। তবে ভোক্তাদের এক কথা, ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণেই দাম বাড়ছে।
এছাড়া মাপে কম দেওয়া, পচা জিনিস গছিয়ে দেওয়া, গরু বলে মহিষের মাংস গছিয়ে দেওয়াসহ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ভোক্তাদের।
নগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে- বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ টাকায়, বেগুন ৫০-৬০ টাকায়, শসা ৫০-৫৫ টাকায়, ঢেঁড়শ ৫০-৬০ টাকায়, পটল ৪০-৪৫ টাকায় ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।
এছাড়া কাঁচামরিচের দাম দ্বিগুণ হওয়ার পর গত সপ্তাহে কমে এসে প্রতি কেজি ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এখন তা আবার বেড়ে প্রতি কেজি ১৬০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একবারে দ্বিগুণ হলে মানুষের চোখে পড়ে, তাই সুকৌশলে ব্যবসায়ীরা এ দাম বাড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করলেন কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা ঈসমাইল হোসেন।
অন্যদিকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি হলেও মুরগি ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে। তবে গরুর মাংস বলে কিসের মাংস গছিয়ে দিচ্ছে এ নিয়েও সন্দেহ ভোক্তাদের।
নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে- প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫৫-১৬০ টাকায় ও প্রতিটি এক কেজির দেশি মুরগি ৩২০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে।
বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ২৭০ টাকা ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪২০-৪৪০ টাকায়।
বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকায়, ছোট আকারের জোড়া ইলিশ ৪০০-৫০০ টাকায়, পাঙাশ ১০০-১৩০ টাকায়, তেলাপিয়া ১২০-১৪০ টাকায় ও সরপুঁটি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২২০ টাকায়। গত সপ্তাহেও প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছিল এসব মাছ।
সবজির দাম না কমার কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা ছিদ্দিক (২৫) বাংলানিউজকে বলেন, ‘বৃষ্টির পনিতে সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। যে কারণে দাম বেড়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘শসা ঢালু জায়গার ফসল, যে কারণে বৃষ্টিতে কোনো ক্ষতি হয়নি। তাই শসার দাম তেমন বাড়েনি। তা না হলে রোজায় শসার যে চাহিদা এর দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকারও বেশি হতো। ’
অন্যদিকে মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে মাছের চাহিদা বেশি কিন্তু যোগান কম। তাই দাম বাড়ছে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে ভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাদের বিভিন্ন অভিযোগ।
হাতিরপুল বাজারে বাজার করতে আসা হানিফ (৪০) নামের একজন বলেন, বাজারে যে জিনিসের দাম একবার বাড়ে, তা আর সহজে কমে না। ’ ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণেই এ দাম কমে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা তৌহিদ (৪৫) বলেন, ‘বাজারে গরুর মাংস সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করছে ঠিকই, কিন্তু এগুলো কি গরুর মাংস নাকি মহিষের মাংস কে জানে?’
আবার গরুর মাংস হলে বাসায় নিয়ে মাপলে দেখা যাবে এক কেজি মাংস ৮০০ গ্রাম হয়ে গেছে। অর্থাৎ কোনো না কোনোভাবে ব্যবসায়ীরা আমাদের ঠকায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১১