ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

মোবাইল ফোন অপারেটরদের নতুন অডিট ফার্ম নিয়োগের নির্দেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১১
মোবাইল ফোন অপারেটরদের নতুন অডিট ফার্ম নিয়োগের নির্দেশ

ঢাকা: মোবাইল ফোন ও পিএসটিএন অপারেটরদের নিরীক্ষা কাজের জন্য বিটিআরসির অডিট ফার্ম নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
 
এ আদেশ নিয়ে বেঞ্চ বলেছেন, বিটিআরসি যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অডিট ফার্ম নিয়োগ করেছে, তা নিয়ে সিপিটিইউর রিভিউ প্যানেলের আপত্তি রয়েছে।

সেটি আমলে এনে তারা এটি বাতিল করছেন। একইসঙ্গে নতুন করে অডিট ফার্ম নিয়োগ করে নিরীক্ষা কাজ করার জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে।
 
বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফরিদ আহমদ ও শেখ  হাসান আরিফের একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন বলে মামলার আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ জানান। তিনি বলেন, আদালত বলেছেন, ফ্রেশ বিডিং করে নতুন নিয়োগ দিতে। পুরনো সব নিয়োগ ও কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে।
 
এতে করে গ্রামীণ ও বাংলালিংকে যে অডিট করা হয়েছে তারও বৈধতা রইল না বলে তিনি জানান। তবে এ বিষয়ে বিটিআরসির কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
 
গ্রামীণ ফোন ও বাংলালিংক থেকে জানানো হয়েছে তাদের প্রতিষ্ঠানে অডিট অব্যাহত রয়েছে।
 
কে এম আলম অ্যান্ড কোম্পানি অডিট ফার্ম নিয়োগে পিপিআর অনুসরণ না করার অভিযোগ তুলে ধরে আদালতে প্রতিকার চেয়ে আরজি জানালে ২৩ জুন আদালত গ্রামীণ ফোন ও বাংলালিংক মোবাইল ফোন অপারেটরের নিরীক্ষা কাজ চার মাসের জন্য স্থগিত করতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসি এবং  সিপিটিইউর চেয়ারম্যানের কাছে অনিয়মের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে, তা দাখিলের জন্য এক মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
 
এরপর বিটিআরসি এ বিষয়ে আপিল আবেদন করলে আদালত আগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে। বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ রায় দিয়ে আদালত বলেছে অডিট ফার্ম নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিটিআরসি সঠিক পথে ছিল না।

বিটিআরসি গত বছরের শেষের দিকে মোবাইল ফোন অপারেটর ও পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন) কোম্পানিগুলোর হিসাব নিরীক্ষার জন্য অডিট ফার্ম নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল।  
 
এরপর কে এম আলম অ্যান্ড কোম্পানি অভিযোগ আনে যে, বিটিআরসি যে প্রক্রিয়া অনুরসণ করে অডিট ফার্ম নিয়োগ করেছে, সেটি সরকারের পিপিআর অনুসরণ  করে হয়নি। তারা এ বিষয়ে বিটিআরসি ও সিপিটিইউর কাছে নালিশ করে। এ বিষয়ে গঠিত একটি রিভিউ প্যানেল কে এম আলমের অভিযোগ সত্য বলে কবুল করে, বিটিআরসি পুনরায় পিপিআর অনুসরণ করে অডিট ফার্ম নিয়োগের জন্য বলেছিল।
 
ওই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার জন্য বিটিআরসিকে গত ২৪ মে এক চিঠিতে জানায় টেলিকম মন্ত্রণালয়। ২৬ মে ফিরতি চিঠিতে বিটিআরসি জনস্বার্থে নিরীক্ষা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়। ওই ঘোষণাকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে কে এম আলম অ্যান্ড কোং।
   
মোবাইল ফোন অপারেটরদের হিসাব নিরীক্ষা করার জন্য বিটিআরসি এপ্রিল মাসের গোড়ার দিকে দুটো অডিট ফার্মকে নিয়োগ দিয়েছিল। তারা গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে এ বিষয়ে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরপর ১৭টি অডিট ফার্ম তাদের ডাকে সাড়া দেন। সেখান থেকে ৬টি ফার্মের একটি শর্র্টলিস্ট করা হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে এটি করা হয়।
 
গত ৫ এপ্রিল থেকে প্রাথমিকভাবে দুটো কোম্পানিকে দেশের অন্যতম প্রধান দুটো অপারেটরের হিসাব নিরীক্ষা করে দেখার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের রেটিংয়ে বি-গ্রেডের ফার্ম  এম এ ফজল অ্যান্ড  কোংকে দেওয়া হয় দেশের সবচেয়ে বৃহৎ মোবাইফোন অপারেটর গ্রামীণের নিরীক্ষার কাজ।
 
অন্যদিকে, বাংলালিংকের নিরীক্ষা কাজ দেওয়া হয় প্রথমে আহমেদ জাকের অ্যান্ড কোংকে।   পরে তাদের বদল করে বিটিআরসি। তবে  ওই প্রতিষ্ঠানের আহমেদ জাকের বলেছেন, তারা নিজেরাই বিটিআরসির হয়ে নিরীক্ষা কাজটি করতে চাননি। তাই নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
 
আহমেদ জাকের অ্যান্ড কোম্পানি বাংলালিংকের নিরীক্ষা কাজ শুরু করে তা শেষ না করে চলে আসার পর বিটিআরসি শর্টলিস্ট করা অন্য একটি ফার্ম আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরীর ফার্মকে এ জন্য নিয়োগ দিয়েছেন। তারা এখন বাংলালিংকের নিরীক্ষা কাজ করছে।  
 
বিটিআরসি ৫ এপ্রিল থেকে দুটো অপারেটরের হিসাব নিরীক্ষার কথা বললেও গ্রামীণ ফোন সূত্র জানিয়েছে তাদের অডিট শুরু হয়েছে ১৭ এপ্রিলে।    
 
বিটিআরসি জানিয়েছে, ২০০১ সালের টেলিযোগাযোগ আইনের ধারা ৩১ (জ) এবং ৩১ (ঝ) মতে  টেলিকম অপারেটরদের স্থাপনা পরিদর্শন, পরিচালনা পদ্ধতি ও আর্থিক তথ্যাবলী নিরীক্ষা  কার্যক্রম পরিচালনা কমিশনের এখতিয়ারাধীন।   তাই তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।   পর্যায়ক্রমে অন্য সব অপাটেরের হিসাবও নিরীক্ষা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।