ঢাকা: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চাল, ডাল ও চিনির দাম নিয়ন্ত্রিত হলেও অস্থিরতা কাটছে না সবজির বাজারে।
তবে একদিনের ব্যবধানে দ্বিগুণ হওয়া কাঁচামরিচের দাম কমে এসেছে।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কাঁঠালবাগান বাজার, মোহাম্মদপুরের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে- বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। গতকাল বিক্রি হয়েছিল ২০০ টাকা কেজি।
বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়, শসা ৪৫-৫৫ টাকায়, ঢেঁড়শ ৫০-৫৫ টাকায়, পটল ৪০-৪৫ টাকায় ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়। এসব সবজির দাম গতকালের চেয়ে উর্ধ্বমুখী। তবে গতকালের তুলনায় আলুর দাম বাড়েনি। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৮ টাকায়।
দামের উর্ধ্বমুখীর কারণ জানতে চাইলে একাধিক সবজি বিক্রেতাই বলেন, ‘অন্যান্য দিনের চেয়ে শুক্রবার চাহিদা একটু বেশিই থাকে, সে পরিমাণ যোগান নেই। তাই দাম বাড়তি। ’
আবহাওয়া যদি ভালো থাকে কয়েকদিনের মধ্যে দাম কমে আসবে বলে উল্লেখ করেছেন সবজি বিক্রেতারা।
তবে ভোক্তাদের ওই এক কথায়, দাম বাড়ছে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে।
অন্যদিকে সরকার নির্ধারিত দামে গরুর মাংস বিক্রি হলেও মুরগি ও খাঁসির মাংসের দাম বেশি। এছাড়া বাজারে চাহিদার তুলনায় যোগান কম, আর সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে মাছ বিক্রেতারা।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে- প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৪০-১৫০ টাকায় ও প্রতিটি এক কেজির দেশি মুরগি ৩০০-৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস সরকার নির্ধারিত ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৩০-৪৫০ টাকায়।
অন্যদিকে মাছের বাজারে ঢুকলেই বোঝা যায় চাহিদার তুলনায় যোগান কম। আর ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ রোজার আগের তুলনায় প্রতি কেজি মাছে দাম বাড়িয়েছে ৪০-৫০ টাকা।
বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৫০ টাকায়, যা রোজার আগে বিক্রি হয়েছিল ১৯০-২০০ টাকায়। বাজারে ইলিশ আর ওজনে বিক্রি হয় না। ছোট আকারের জোড়া ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। সেগুলোর ওজন হবে সর্বোচ্চ ৮০০ গ্রাম। এছাড়া বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়, তেলাপিয়া ১২০-১৪০ টাকায়, সরপুঁটি ২০০-২২০ টাকায় ও শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়।
রোজায় মাছের চাহিদা সে তুলনায় যোগান কম এটাকেই দাম বাড়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মধ্যে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট (রশিদ) চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, মিনিকেট (কুষ্টিয়ার বিশ্বাস) ৪৪ টাকা ও শাহসুপার চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকায়। গতকালের একই দামে মসুর ডাল (দেশি) বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায় ও মসুর ডাল (ক্যাঙ্গারু) ৯০-৯৫ টাকায়।
গতকালের চেয়ে দাম কমেনি ছোলার। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি অস্ট্রেলিয়ান ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায় ও মিয়ানমারের ছোলা ৯০-৯৫ টাকায়। তবে প্রায় সব দোকানেই সরকার নির্ধারিত দামে তেল ও চিনি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৩৮ টাকায়। দাম কমেছে রসুনের। প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। আবার সুযোগ বুঝে কোথাও কোথাও ৮০-৯০ টাকাও নেয়।
রসুনের দামের এ পার্থক্যের কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ‘বর্তমানে প্রতি কেজি রসুন কিনা পড়ে ৪৫-৫০ টাকা। কিন্তু রসুন বিক্রির জন্য কিনার পর ধীরে ধীরে শুকাতে থাকে, এতে ওজনও কমতে থাকে। তাই এটি একটু বেশি লাভেই বিক্রি করতে হয়। ’
তবে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি করলেই ব্যবসায়ীরা লাভ হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাজারের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা হাবিবুল্লাহ (৫৫) বাংলানিউজকে বলেন, ‘দাম বাড়ে ব্যবসায়ীদের কারণে। প্রতিটি বাজারেই একটি সিন্ডিকেট থাকে। আর ওই সিন্ডিকেটই বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। ’
কাঁঠালবাগান বাজারে বাজার করতে আসা হাসেম (৪৩) নামের একজনেরও প্রায় একই মত। সবজির বাজার সরকার চাইলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১১