ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পাইকারী বাজারে দাম কমলেও খুচরা বাজারে প্রভাব নেই

করিমুল বাশার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১১
পাইকারী বাজারে দাম কমলেও খুচরা বাজারে প্রভাব নেই

ঢাকা: রোজায় সরকার চিনির দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি ছোলার দাম। অন্যদিকে পাইকারি বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব নেই।



রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, কাঁঠালবাগান বাজার ঘুরে দেখা গেছে- পাইকারি বাজারে চাল, ছোলাসহ বিভিন্ন দ্রব্যের দাম কমেছে। তবে খুচরা বাজারে এর প্রভাব নেই। দামের এ পার্থক্যের জন্য পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী একে অন্যকে দুষছেন।

চলতি সপ্তাহে নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে- পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট (রশিদ) চাল ৪৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে ৪২ টাকায়, মিনিকেট (কুষ্টিয়ার বিশ্বাস) চাল ৪৩ টাকা থেকে কমে ৪১ টাকা ৫০ পয়সায় ও শাহসুপার চাল ৪২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে ৪১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট (রশিদ) চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়, মিনিকেট (কুষ্টিয়ার বিশ্বাস) চাল ৪৪ টাকায় ও শাহসুপার চাল ৪৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহেও প্রায় একই দরে বিক্রি হয়েছিল।

পাইকারি বাজারে চালের দাম কমার পরও খুচরা দোকানে চালের দাম না কমার কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের জনতা রাইচের মালিক কামাল উদ্দিন (৪৫) বাংলানিউজকে বলেন, ‘একদিকে রোজা, অন্যদিকে বৃষ্টি, সবমিলিয়ে কম দামে কিনতে পারলেও আনুসাঙ্গিক খরচ বেশি পড়ে যায়। যে কারণে দাম কমে না। ’

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি অস্ট্রেলিয়ান ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায় ও মিয়ানমারের ছোলা ৯০-৯৫ টাকায়।

বাজারে ছোলার দাম বাড়ার জন্য পাইকারী ব্যবসায়ীরা দুষছেন খুচরা ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীদের বক্তব্য পাইকারী ব্যবসায়ীরা ছোলায় ভেজাল দেওয়ার কারণেই বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

ছোলার দাম বাড়া প্রসঙ্গে ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফিক মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা যারা ছোলা আমদানি করি, তারা কখনই বেশি দামে বিক্রি করি না। এছাড়া রোজার শুরুতেই আমদানিকারকরা ছোলা বিক্রি করে ফেলেছে। ’

এখন বাজারে যে দাম বাড়ছে, তা খুচরা ব্যবসায়ীরাই বাড়াচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খুচরা ব্যবসায়ী লস্কর ট্রেডার্সের মালিক আব্দুল কুদ্দুস (৩২) বাংলানিউজকে বলেন, ‘ছোলার প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় থাকে দুই থেকে আড়াই কেজি ময়লা। এ কারণে বিক্রি করতে আনা ছোলা ৮৬ টাকায় আনা হলে এর দাম পড়ে যায় ৯০-৯২ টাকা। যে কারণে ছোলার পাইকারি দাম ও খুচরা দামের মধ্যে এ পার্থক্য। ’

পাইকারি ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে করেই ছোলার মধ্যে ময়লা দেয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাজারে চিনির সংকট কাটলেও তুলনামূলকভাবে ডিলারদের কাছ থেকে বেশি দামেই চিনি কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন চিনির খুচরা ব্যবসায়ীরা।

একাধিক খুচরা ব্যবসায়ীর অভিযোগ, বিক্রি করার জন্য প্রতি ৫০ কেজির বস্তা তিন হাজার ১৫০ টাকায় কিনতে হবে। অর্থাৎ প্রতি কেজি ৬৩ টাকায়। আনুসঙ্গিক খরচ প্রতি কেজি মিলে ৬৩ টাকা ৫০ পয়সা কেনা পড়ে বলে দাবি করেন তারা।

তাদের প্রশ্ন, ‘সরকারের প্রতিষ্ঠান যদি প্রতি কেজি চিনি ৬০ ও ৬২ টাকা দরে বিক্রি করে তবে আমাদের কেনো ডিলারদের কাছ থেকে এর বেশি দামে চিনি কিনতে হবে?’

বাজারে সরকার নির্ধারিত মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে খোলা তেল। এছাড়া বাজারে প্রতি কেজি মসুর ডাল (দেশি) বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়, মসুর ডাল (ক্যাঙ্গারু) ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ৪০-৪২ টাকায় বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে তা কমে ৩৬-৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুটা কমেছে রসুনের দামও।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।