ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বুক বিল্ডিং পদ্ধতি সংশোধনের চূড়ান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১১
বুক বিল্ডিং পদ্ধতি সংশোধনের চূড়ান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত

ঢাকা: দীর্ঘদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তির জন্য শেয়ারের প্রাথমিক মূল্য নির্ধারণের লক্ষ্যে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি সংশোধনের চূড়ান্ত বৈঠক বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) কার্যালয়ে সকাল ১১টায় আয়োজিত এ বৈঠকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জসহ বাজার সংশিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।



ডিএসইর ডিজিএম শফিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ‘বুক বিল্ডিং পদ্ধতি সংশোধনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে স্টক হোল্ডারদের কাছ থেকে মতামত নেওয়া হয়েছে। ’

এসইসির কমিশন সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক আগে থেকেই সফলভাবে বুকবিল্ডিং পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। দেশের পুঁজিবাজারে এই পদ্ধতি চালু করার জন্য গত বছরের ৯ মার্চ বিধিমালা জারি করে এসইসি।

প্রচলিত পদ্ধতির নির্ধারিত মূল্যের (ফিক্সড প্রাইস) পাশাপাশি বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারের দর নির্ধারণের লক্ষ্যে ২০০৬ সালের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) আইনে  প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়।

বুক বিল্ডিং পদ্ধতি চালু হলেও প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি না থাকায় এটি প্রয়োগ করতে সময় লেগেছে এক বছর।

২০১০ সালের মার্চে এই পদ্ধতির প্রয়োগ শুরু হয়।

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বুকবিল্ডিং পদ্ধতির অংশ হিসেবে দর প্রস্তাবের (বিডিং) মাধ্যমে বরাদ্দ পাওয়া শেয়ার বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার (লক ইন) মেয়াদ খুবই কম হওয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বেশি দরে শেয়ার বিক্রি করে বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই শেয়ারের দর কমে যায়। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।

সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নির্ধারিত মূল্য (ফিক্সড প্রাইস) পদ্ধতির ক্ষেত্রে কোনো কোম্পানির  শেয়ারের দর মৌলভিত্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন হলে এসইসি তা কাঁটছাট করতে পারে।

কিন্তু বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে সুনির্দিষ্টভাবে সেই সুযোগ নেই। আইনের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যোগশাজস করে শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্য নির্ধারণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুঁজিবাজারে বড় ধরনের বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে গত ২২ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারের অতি মূল্যায়নের বিষয়টি আলোচনায় আসে।

বৈঠকে বলা হয়, বুকবিল্ডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেক কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসার আগেই শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্য নির্ধারণ করছে। এর ফলে বাজার থেকে অতিরিক্ত অর্থ স্থানান্তরিত হয়ে যাচ্ছে। এই পদ্ধতি মূল্য নির্ধারণের পর প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বিপুল অংকের অর্থ জমা হওয়ায় শেয়ারবাজারে বর্তমান অর্থ সংকট বেড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বুকবিল্ডিং পদ্ধতি স্থগিত রাখার প্রস্তাব করা হয়।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ প্রস্তাবে সম্মতি প্রকাশ করে বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা না ফেরা পর্যন্ত বুকবিল্ডিং পদ্ধতি স্থগিত রাখার পরামর্শ দেন। এর ভিত্তিতে এসইসি বুকবিল্ডিং পদ্ধতি স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।