ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

৪ নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে এসইসি

পবন আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১১
৪ নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে এসইসি

ঢাকা: রাইট শেয়ার ইস্যু, প্লেসমেন্ট শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও অগ্রাধিকার সংক্রান্ত নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।

চলতি মাসেই এসব নীতিমালার খসড়া প্রকাশ করে বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত আহ্বান করা হবে।



এদিকে বুকবিল্ডিং পদ্ধতি সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করে স্টক হোল্ডারদের মতামতের জন্য সোমবার সকলের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রাইভেট প্লেসমেন্ট নিয়ে অনেকদিন ধরেই অনৈতিক বাণিজ্য চলে আসছিল। এ প্রবণতা বন্ধের লক্ষে ২০০৯ সালের মে মাসে এসইসির মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রাইভেট প্লেসমেন্টের ইউনিটের ওপর লক ইন আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে ওই বছরের ১৩ অক্টোবর বিধি সংশোধন করে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য ৬ মাসের লক ইন আরোপ করা হয়। ফলে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট বরাদ্দ নিলে যে কোন সময় তা বিক্রির সুযোগ থাকায় এ নিয়ে অনৈতিক বাণিজ্য বহাল ছিল।

এ ধরনের প্রবণতা বন্ধে বিধিমালা সংশোধন করে গত ১১ মার্চ ব্যক্তির ক্ষেত্রেও এক বছরের লক ইন দেয় এসইসি।

এদিকে কোম্পানির শেয়ারের প্রাইভেট প্লেসমেন্ট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে একটি নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এসইসি। সে সময় সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পাবলিক ইস্যু বিধিমালা সংশোধন করে আইপিওর ক্ষেত্রে ১৫০ কোটি টাকার কম পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানির জন্য প্রাইভেট প্লেসমেন্ট বন্ধ করা হয়।

এছাড়া প্রাথমিকভাবে আইপিও প্রক্রিয়ার আগে কোম্পানির মূলধন সংগ্রহের জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের ওটিসি মার্কেটকে কাজে লাগানোর চিন্তা করা হয়েছিল। এজন্য স্টক এক্সচেঞ্জের সংশ্লিষ্টদের মতামত চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জের নেতারা এ চিন্তাকে অবাস্তব বলে মত দেন। পরে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়নি। এরপর থেকেই প্লেসমেন্টের নীতিমালা তৈরির কার্যকম থমকে যায়।

তবে এসইসি পুনর্গঠনের পর অন্যান্য বিধি সংস্কারের সঙ্গে প্লেসমেন্ট সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই এই নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই এটি জনমত গ্রহণের জন্য প্রকাশ করা হতে পারে।

অন্যদিকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় রাইট শেয়ার ছাড়ার যোগ্যতা না থাকলেও কোন কোন কোম্পানি বিকল্প হিসেবে অগ্রাধিকার শেয়ারের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পথ বেছে নেয়। এমনকি লোকসানের কারণে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হলেও অগ্রাধিকার শেয়ার ছেড়ে অর্থ সংগ্রহ করেছে একাধিক কোম্পানি। অগ্রাধিকার শেয়ারকে সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে বাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়।

এ কারণে অগ্রাধিকার শেয়ার নিয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

২০১০ সালের আগস্টে এসইসি এ সংক্রান্ত একটি একটি গাইডলাইন দেয়। ওই গাইডলাইন অনুযায়ী সকল রূপান্তরযোগ্য ইস্যুকে পুনঃগণপ্রস্তাবের (আরপিও) বিধান অনুসারে আসতে হবে। তবে পুঁজিবাজার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অগ্রাধিকার শেয়ারের জন্য একটি পৃথক নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করছে এসইসি।

এসইসির সদস্য অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, ‘নীতিমালা না থাকার কারণে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট, প্রেফারেন্স ও রাইট শেয়ার ইস্যু নিয়ে নানা অনিয়ম হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এসব ক্ষেত্রে অনিয়ম সংঘটিত হতে না পারেÑ সেজন্য প্রতিটি বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ণ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই এটি প্রকাশ করা হবে। এছাড়া প্রেফারেন্স শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও রাইট শেয়ারের নীতিমালা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। চলতি মাসেই এসব নীতিমালা প্রকাশ করে বাজার সংশিষ্টদের মতামত গ্রহণ করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad