ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরোর (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো-সিআইবি) অনলাইন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ফলে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর গ্রাহকের ঋণ তথ্য জানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে যেতে হবে না।
মঙ্গলবার রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ডিএসআইডির জ্যেষ্ঠ বেসরকারি খাত উন্নয়ন পরামর্শক ক্যাথরিন মার্টিন, আইএফসির প্রতিনিধি আয়ান ক্রস বি, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. নজরুল হুদাসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৯২ লাখ। এ বিপুল সংখ্যক ঋণ গ্রহীতার ঋণ তথ্য সংগ্রহ, সংকলন ও ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা খুবই কষ্টসাধ্য। ’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১০ অর্থবছরে সিআইবি থেকে ১০ লাখ ২ হাজার ৬ শ’ ৭৪টি প্রতিবেদন সরবরাহ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার ঋণ তথ্য যাচাইয়ের আবেদন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা হয়। ’
আতিউর রহামান বলেন, ‘অনলাইন সেবার ফলে এখন আর আগের মতো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণের তথ্য সিডির মাধ্যমে সরবরাহ করতে হবে না। অনলাইনে ডাটাবেজ থেকে এ তথ্য পাওয়া যাবে। ’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিস্টেমে প্রবেশের পর পরবর্তী ৫ সেকেন্ডের মধ্যে সিআইবি প্রতিবেদন পাবে। আগে যেখানে সময় লাগত সাত কর্মদিবস। ’
সিআইবি অনলাইন সেবা সুশৃঙ্খল ঋণ প্রদানের পরিবেশ সৃষ্টিতে এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশল হিসেবে কাজ করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এসময় তিনি বলেন, অনলাইন সিআইবি প্রতিবেদন সেবা আর্থিক খাতের জন্য একটি সন্ধিক্ষণ। এর ফলে গ্রাহকের ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া ও নিষ্পত্তির কাজ দ্রুত হবে।
জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থীর ঋণ তথ্য যাচাইয়ের এই সেবা কাজে লাগানো যেতে পাওে বলেও তিনি জানান।
এসময় ক্যাথরিন মার্টিন বলেন, আর্থিক খাত ভালো চললে দেশে দারিদ্র কমে। বিগত দশকে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। তবে দেশের উন্নয়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেটি বাংলাদেশ করছে। তবে এখাতে অর্থ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।
আয়ান ক্রস বি বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্টানগুলোকে গ্রাহকের সঠিক তথ্য দেওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব। এটি সঠিক ভাবে পালন করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকে এই সেবা চালু আছে ১৯৯২ সাল থেকে। পৃথিবীর অনেক দেশেই সিআইবি সেবা অনলাইন হলেও বাংলাদেশে সেবাটি দেওয়া হতো ম্যানুয়ালি। ২০০৯ সালের মে মাসে এই সেবা অনলাইন করার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। দুই বছর প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাই করে অবশেষে আনুষ্টানিক ভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সেবা অনলাইনে নিয়ে গেল।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১১