ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ট্রেডমার্ক বিধিমালা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে সরকার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১১
ট্রেডমার্ক বিধিমালা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে সরকার

ঢাকা: মেধাসম্পদ রক্ষায় আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ট্রেডমার্ক আইন-২০০৯ প্রণয়ন করেছে সরকার। এজন্য শিগগিরই ট্রেডমার্ক বিধিমালা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত করা হচ্ছে।



পাশাপাশি মেধাসম্পদ সংরক্ষণে ডিআই ল’ ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ও লে-আউট ডিজাইনসহ অন্যান্য আইন প্রণয়ন করা হবে।

বুধবার সকালে ডিসিসিআই মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ মেধাসম্পদ নকলের প্রবণতা এবং জাতীয় অর্থনীতি ও ভোক্তা অধিকারের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া এসব তথ্য জানান।

ডিসিসিআইয়ের সভাপতি আসিফ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প সচিব কেএইচ মাসুদ সিদ্দিকী, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমেদ, আইপিএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফিরোজ মাহমুদ, ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার বিএম কামাল, কপি রাইট অফিস রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিচালক শরীফা খান প্রমুখ।  

শিল্প মন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া বলেন, ‘পৃথিবীর সকল সম্পদের মধ্যে মেধাসম্পদের গুরুত্ব সর্বাধিক। মেধাকে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করতে হলে, উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এজন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। ’

তিনি পাইরেসি বন্ধ করতে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘একটি সমন্বিত আইপি অফিস স্থাপনের প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে। ’

তিনি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সরকারের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।  

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘মেধাসম্পদের মালিকানা সংরক্ষণ সারা বিশ্বের জন্যই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মহাজোট সরকার দেশিয় উদ্ভাবকদের প্রাপ্য স্বীকৃতি ও রয়েলটি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। মেধাসম্পদ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ট্রেড মার্ক আইন-২০০৯ প্রণয়ন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই ট্রেড মার্ক বিধিমালা চূড়ান্ত করা হবে।

দিলীপ বড়–য়া বলেন, ‘মেধার প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের জনগণ প্রতিবেশী দেশের চেয়ে কোনোভাবেই পিছিয়ে নেই। পণ্যের নকল করতে পারলে মানসম্মত পণ্যের উৎপাদনও দেশিয় উদ্যোক্তাদের পক্ষে সম্ভব। ’

বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে হলে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য উৎপাদন করতে হবে। এক্ষেত্রে নিজস্ব স্বার্থেই পণ্যের নকল ও পাইরেসির প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। সরকার মেধাসম্পদের সুরক্ষাসহ শিল্পখাতের স্বার্থ রক্ষায় একটি শিল্প আইন প্রণয়ন করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, মেধাসম্পদের নকল ও পাইরেসির ফলে জাতীয় রাজস্ব ক্ষতির পাশাপাশি সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

তারা মেধাসম্পদের নকল প্রতিরোধে অধিকহারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং এ সংক্রান্ত আইনের কঠোর প্রয়োগের সুপারিশ করেন।

বর্তমানে বাংলাদেশে ওষুধ, সিগারেট, কম্পিউটার সফ্টওয়্যার, ইলেকট্রনিক পণ্য অধিকহারে নকল হচ্ছে উল্লেখ করে জনস্বার্থে এর প্রতিরোধে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন বলে তারা অভিমত দেন।

আইপিএবির সেক্রেটারি জেনারেল আজিজুর রহমান, এফসিএ আইপিএবির উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রম সর্ম্পকে তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, আইপিএবি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতীয় স্বার্থে ২০১১ সালের মধ্যে খাতভিত্তিক ২০টি ওয়ার্কশপ ও একটি জাতীয় পর্যায়ের সেমিনার আয়োজনে আইপিএবি একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যার প্রধান উদ্দেশ্য হবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মেধা সম্পদের ভূমিকা, চলমান সমস্যা ও এর সমাধান নির্ধারন।

শিল্প সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী বলেন, মেধাসত্বের ক্ষেত্রে কার্যকর আইন এবং এর যথাযথ প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আইপি সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করা এবং শিক্ষিত করার উপর গুরুত্ব আরেপ করেন।  

ডিসিসিআই সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম পণ্যের নকল প্রতিরোধ করার জন্য ভোক্তাদের সচেতন করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি নকল প্রতিরোধের লক্ষ্যে জোরদার প্রচার চালানোর প্রস্তাব করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মেধাসত্বের সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলোর জন্য যথাযথ আইন এবং এগুলোর কার্যকর প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরি। তিনি জানান ঢাকা চেম্বার একটি আইপি নলেজ সেন্টার স্থাপনের জন্য কাজ করছে।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, নকল পণ্য ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সর্ম্পকে জনগনকে সচেতন করার লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।


বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।