ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যবসা মানেই ‘মুনাফাখোরি’ নয়: বাণিজ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১০
ব্যবসা মানেই ‘মুনাফাখোরি’ নয়: বাণিজ্যমন্ত্রী

ঢাকা: ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান বলেছেন, কতিপয় মুনাফাখোরের কারণে পুরো ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সুনাম ক্ষুন্ণ হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘শুধু মুনাফা করাই ব্যবসার উদ্দেশ্য নয়, এর মাধ্যমে দেশেরও উপকার করা যায়।

ব্যবসা মানেই ‘মুনাফাখোরি’ নয়। ’

রোববার বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সুশাসন সূচক (ইজিআই) ২০১০ প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে এশিয়া ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন, ইউকেএইড ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট কাইমেট ফান্ড’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বদরউদ্দিন আহমেদ কামরান, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আফতাব উল ইসলাম, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।  

বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের গুরুত্ব তুলে ধরে আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে রাজনীতিকরা অনেক সময়ই ব্যবসাকে গুরুত্ব দিতে চান না। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে ব্যবসায়ীরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকেন। তারা নিজ সম্পদ বা অর্থ ব্যাংকে বন্ধক রেখে অর্থ সংগ্রহ করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করেন। তারা লাভ করে সরকারকে কর দেন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেন। তাই ব্যবসায়ীদের খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। ’

চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজগুলোর পরিচালনা পর্যদে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ নারী ব্যবসায়ী প্রতিনিধি রাখার ওপরও গুরুত্ব দেন ফারুক খান।

নারীদের জন্য পৃথক চেম্বারগুলো যেন কয়েকজন সদস্যের একটি সংগঠনে পরিণত না হয় সেদিকে নজর রাখার আহবান জানান তিনি।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যবসা শুরু ও পরিচালনায় সুবিধার জন্য ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে একটি নির্দেশিকা তৈরির কাজ চলছে বলেও জানান ফারুক খান।

তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসা শুরু করতে কি প্রয়োজন এবং কোথায় সমাধান হবে তা জানা যাবে। ’

এ বছর ১৯টি জেলার ওপর ভিত্তি করে ইজিআই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে সরকারের প্রশাসনযন্ত্র ও ব্যবসায়ীদের সম্পর্ককেও গুরুত্ব দেওয়া হয়।  

ইজিআই প্রণয়নে তথ্য সংগ্রহকৃত জেলাগুলো হলো: ফরিদপুর, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, সিলেট, কক্সবাজার, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রংপুর, পটুয়াখালি, ঢাকা, যশোর, খুলনা, বগুড়া, পাবনা, নোয়াখালি, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম. বরিশাল ও রাজশাহী।

১০টি বিষয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ইজিআই সূচক প্রণীত হয়। বিষয়গুলো হলো: ব্যবসার প্রারম্ভিক খরচ, সম্পত্তির স্বত্ত্বাধিকার, তথ্য প্রাপ্তির স্বচ্ছতা, আইনগত বিধি মেনে চলতে সময় ব্যয়, ঘুষ বা অনানুষ্ঠানিক ব্যয়, নীতিমালা প্রণয়নে অংশগ্রহণ, অপরাধ ঠেকানো, কর প্রশাসনের স্বচ্ছতা, নানাবিধ বিরোধ মেটানো, স্থানীয় অবকাঠামো সুবিধা।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, ফরিদপুর, দিনাজপুর ও কুষ্টিয়া জেলা যথাক্রমে ৭৫ দশমিক ৬৮, ৭৪ দশমিক ২৫ ও ৭৩ দশমিক ২৭ পয়েন্ট নিয়ে চলতি বছরের সূচকে এগিয়ে রয়েছে। রাজশাহী, বরিশাল ও চট্টগ্রাম যথাক্রমে ৫৩ দশমিক ০২ , ৫৪ দশমিক ১৫ ও ৫৪ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার নিচের দিকে অবস্থান করছে।

৬০ এর নিচের পয়েন্ট পাওয়া জেলাগুলো হলো- ঢাকা ৫৯ দশমিক ৫১, যশোর ৫৯ দশমিক ৪৭, খুলনা ৫৯ দশমিক ৪৩, বগুড়া ৫৮ দশমিক ৮৯, পাবনা ৫৮ দশমিক ৮০, নোয়াখালী ৫৭ দশমিক ১৩, টাঙ্গাইল ৫৫ দশমিক ৭১, চট্টগ্রাম ৫৪ দশমিক ৭৯, বরিশাল ৫৪ দশমিক ১৫ ও রাজশাহী ৫৩ দশমিক ০২।  

অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, এই সূচক তৈরিতে ওই জেলা শহরগুলোর মধ্যস্থলের ৩ কিলোমিটার এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিপের আওতায় আনা হয়েছে। এরফলে অনেক জেলার প্রকৃত তথ্য হয়তো পাওয়া যায়নি। তিনি ভবিষ্যতে পুরো জেলার সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিপের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।