ঢাকা: সরকার ঘোষিত তৈরি পোশাক শ্রমিকদের জন্য ন্যুনতম মজুরি কাঠামো মেনে নিয়েছে অধিকাংশ রেজিস্টার্ড শ্রমিক সংগঠন।
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি আমিরুল হক আমিন দাবি করেছেন ৩০টি রেজিস্টার্ড শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে ২২টি সংগঠনই ঘোষিত মজুরি কাঠামো মেনে নিয়েছে।
তবে এই কাঠামো বাস্তবায়নের সময়সীমা এগিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
তারা বলছেন, ২০০৬ সালের গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ন্যুনতম মজুরি কাঠামো নির্ধারণ ভুল ছিল। ১২ বছর পর সেসময় বেতন নির্ধারণ করা হলেও মাত্র ১০ শতাংশ বেড়েছিল। তখন সঠিকভাবে কাঠামো নির্ধারিত হলে বর্তমান সংকট সৃষ্টি হত না বলে মনে করেন তারা।
২০০৬ সালের কাঠামো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি দাবি করে নেতারা বলেন, এখনও ১৪ শতাংশ বাস্তবায়নের বাকি রয়েছে। এবারের বেতন কাঠামো যা ঘোষিত হয়েছে তা ক্ষেত্রভেদে ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাত্র চার বছরের ব্যবধানে এই কাঠামো খারাপ নয়। তবে এর দ্রুত ও সঠিক বাস্তবায়ন জরুরি।
অন্যদিকে নতুন মজুরি কাঠামোর বিরোধীতাকারী বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, ‘শ্রম আইন অনুযায়ী রেজিস্টার্ড নয় এরকম শ্রমিক সংগঠন শ্রমিকদের জন্য দরকষাকষি করতে পারে। সে হিসেবে প্রায় ৫০টি সংগঠনের মধ্যে অধিকাংশই এই কাঠামোর বিরোধিতা করছে।
তিনি জানান, সম্প্রতি পোশাক শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত মজুরি কাঠামো ও তা দেরিতে বাস্তবায়ন দু’টিই অমানবিক। এই কাঠামো শ্রমিকরা মেনে নেয়নি।
বাংলাদেশ ন্যাশানাল কাউন্সিল (বিএসি) অব টেক্সটাইল গার্মেন্টস অ্যান্ড লেদার ওয়ার্কার্স সম্পাদক রায় রমেশ চন্দ্র বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘আমরা সরকার ঘোষিত মজুরি কাঠামোকে সমর্থন জানিয়েছি। তবে কাঠামো বাস্তবায়নের ঘোষিত তারিখ যুক্তিযুক্ত পর্যায়ে এগিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ’
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, ‘সরকারের কাছে দ্রত বাস্তবায়নের আহবান জানিয়ে ঘোষিত কাঠামো আমরা মেনে নিয়েছি। ’
ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এ শিল্পের জন্য সুখকর নয় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যারা বিরোধিতা করছে তাদের প্রতি আহবান, তারা এমন কোনো কর্মসূচী যাতে না দেয় যা শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ায়। ’
শর্তসাপেক্ষে নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নে কালক্ষেপণই শুক্রবারের শ্রমিক বিক্ষোভের কারণ বলে মনে করেন সংযুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাইনুদ্দিন মন্ডল।
শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি তিন হাজার টাকা না করে সাড়ে তিন হাজার টাকা করা উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি।
তিনি জানান, তৈরি পোশাক মালিক ও শ্রমিকদের একসঙ্গে আলোচনা করে বর্তমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
বাংলাদেশ সময় ১৬৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১০