ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সিএসই’র রোড শো এখন খুলনায়

এসএম গোলাম সামদানী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০০ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১০
সিএসই’র রোড শো এখন খুলনায়

খুলনা: শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সহজ করার লক্ষ্যে ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেন পদ্ধতি চালু করেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। এ পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করে তুলতে দেশব্যাপী রোড শো শুরু করেছে সিএসই।



আজ শনিবার খুলনার একটি হোটেলে চলছে রোড শোর দ্বিতীয় পর্ব।

গত ২২মে সিলেট থেকে এ রোড শো শুরু হয়। রোড শো রাজশাহী, বরিশাল, কুমিল্লাসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতেও আয়োজন করা হবে।

খুলনায় সিএসই সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা দেন, সিএসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এম এ মামুন, সিএসইর পরিচালক মোহাম্মদ ফখরুদ্দীন এবং খুলনার বিভাগীয় প্রেসকাবের সভাপতি মোহাম্মদ লিয়াকত আলী। খুলনার বিনিয়োগকারী ও বিনিয়োগে আগ্রহীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এতে ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেনের কলাকৌশল ও পদ্ধতির বিবরণ তুলে ধরা হয়।

সিএসই নেতারা বলেন, দেশের ভেতরের এবং বাইরের সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছে লেনদেন সুবিধা আরও সহজলভ্য করে তুলতে তারা ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেনে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন।
 
এছাড়াও বাজারে বিদ্যামান চাহিদার বিপরীতে শেয়ার সরবরাহ বাড়াতে তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ।  

অনুষ্ঠানে সিএসই সভাপতি ফখর উদ্দীন আলী আহমেদ বলেন, দেশের অর্থনীতিতে খুলনার গুরুত্ব রয়েছে। এক সময়ের শিল্পনগরী খুলনায় বিনিয়োগে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এখানে প্রচুর অলস অর্থ জমে আছে। এই অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনীতির মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। তাই এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বিনিয়োগের সুবিধা করে দেওয়ার ল্েয সিএসই খুলনাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রাহকদের তথ্যসমৃদ্ধ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সিএসই। দেশের দুটি স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেনের মধ্যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে। লেনদেনের এই ভারসাম্যহীনতা কমিয়ে আনতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

সিএসই সভাপতি বলেন, যতদ্রুত সম্ভব খুলনায় সিএসইর অফিস উদ্বোধনের চেষ্টা করা হবে।

বক্তারা বলেন, দেশের অর্থনীতির আকার এবং সম্ভাবনার তুলনায় আমাদের পুঁজিবাজার এখনও অনেক ছোট ও অপরিণত। তাই এই বাজারের বিকাশকে উৎসাহ দিতে হবে। সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে বাজারকে আরও বড় করে বিচ্ছিন্নভাবে থাকা ুদ্র ুদ্র বিনিয়োগকে অর্থনীতির প্রধান স্রোতে নিয়ে আসতে হবে। এই অবস্থায় বাজারের জন্য প্রয়োজন নানা ধরনের প্রণোদনা।

লিয়াকত আলী বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতার অভাবে খুলনা শিল্পনগরীতে স্থবিরতা নেমে এসেছে। খুলনা বন্দরেকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। এ অঞ্চল থেকে অনেক ব্যবসা বাণিজ্য স্থানান্তর হয়েছে। এসব কারণে এ অঞ্চলে প্রচুর অসল অর্থ জমা হয়েছে। এই অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।  
 
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ পর্যন্ত সিএসইর ২১টি ব্রোকারেজ হাউজকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে লেনদেনের শুরুও অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আরও বেশ কিছু ব্রোকারেজ হাউজ অনুমতির জন্য আবেদন করেছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন বিনিয়োগকারী নিয়মিত এই সেবা গ্রহণের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেন।

যেভাবে করবেন ইন্টারনেটে শেয়ার লেনদেন
ইন্টারনেটে লেনদেন করতে হলে প্রথমে একজন বিনিয়োগকারীকে সিএসইর অনুমোদিত ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সিএসই জানায়, এ পর্যন্ত  ২১ ব্রোকারেজ হাউজ এবং এদের সাব ব্রোকারগুলোকে ইন্টারনেটে লেনদেনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনলাইনে লেনদেনের জন্য দুইভাবে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। ব্রোকারেজ হাউজে গিয়ে অথবা অনলাইনেও রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন।  


রেজিস্ট্রেশন: লেনদেনের জন্য প্রথমে www.bangladeshstockmarket.com এই ওয়েব সাইটে প্রবেশ করতে হবে। ওয়েব সাইটের ওপরেই Register নামে একটি অপশন রয়েছে। এখানে কিক করলে আরও দুটি অপশন পাওয়া যাবে। একটি হল Permitted broker list অন্যটি Register with a broker.

এই তালিকা থেকে কোনো ব্রোকারেজ হাউজে লেনদেন করবেন, ওই হাউজের কোড এবং সাব ব্রোকার কোড জেনে নিতে হবে। ওয়েব সাইটে দেওয়া ব্রোকারেজ হাউজের তালিকায় কোম্পানির নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল নম্বরসহ কমর্কতাদের নাম উল্লেখ আছে। তাই এখান থেকে ফোন নম্বর নিয়ে পছন্দের হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।

এরপর Register with Broker. কিক করলে গ্রাহকের নাম, ব্রোকার কোর্ড, ব্যবহারকারীর  আইডি, পাসওয়ার্ড, মেইল নম্বর এবং মোবাইল নম্বর চাইবে। এই ফরমটি পূরণ করে submit দিলে গ্রাহকের মেইলে রেজিস্ট্রেশনের কনফারমেশন লেটার চলে যাবে।

অন্যদিকে হাউজে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে চাইলে-তালিকা থেকে একটি ব্রোকারেজ হাউজ বাছাই করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্রোকার কোড এবং সাব ব্রোকার কোড জেনে নিতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করে পছন্দের ব্রোকারেজ হাউজে লেনদেন করতে পারেন। এজন্য গ্রাহককে একটি আইটিএস অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। তাছাড়া আরও একটি ছাপানো ফরমে পুরণ করে তা ব্রোকারেজ হাউসে জমা দিতে হবে। ফরম জমা দেওয়ার পর গ্রাহকের সঙ্গে একটি চুক্তি করবে ওই ব্রোকারেজ হাউস। চুক্তিতে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। কোনো ভাবেই চুক্তির চেয়ে বেশি পরিমাণে শেয়ার ক্রয় অথবা বিক্রি করা যাবে না। তবে প্রয়োজনে ব্রোকারেজ হাউসের সঙ্গে কথা বলে সীমা বাড়ানো কিংবা কমানো যাবে।

চুক্তির পর ব্রোকার গ্রাহকের নামে একটি ইলেট্রনিক ফরম তৈরি করবে। ফরমটি পাসওয়ার্ড দিয়ে সংরতি থাকবে। এই পাসওয়ার্ডই গ্রাহকের নিরাপত্তা। কারণ এই নম্বরটি কেউ জানলে অ্যাকাউন্টে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিতে পারবে। তবে প্রতিটি ব্রোকারেজ হাউজেই সহায়তা দেওয়ার জন্য পরামর্শক রয়েছে। লেনদেন শেষে গ্রাহকের ই-মেইলে ব্রোকারেজ হাউজগুলো থেকে একটি কমফারমেশন ম্যাসেজ পাঠানো হবে।

অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ফরমের সঙ্গে এক কপি ছবি এবং শেয়ার কিনতে চাইলে প্রয়োজনীয় টাকা এবং বিক্রির জন্য শেয়ার অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘন্টা, জুলাই ৩১,২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।