ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিজিএমইএ-ইউএসটিআর বৈঠক: আলোচনায় কাজের পরিবেশ ও মজুরি

আনোয়ারুল করিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১০
বিজিএমইএ-ইউএসটিআর বৈঠক: আলোচনায় কাজের পরিবেশ ও মজুরি

ঢাকা: তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ, ন্যূনতম মজুরি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্যের কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের বিষয়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়েছে।

মঙ্গলবার কারওয়ানবাজারে বিজিএমইএ ভবনে এ বৈঠক হয়।



প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের কোটামুক্ত সুবিধার ভাগ্য অনেকাংশেই নির্ভর করছে।

সফররত যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ ও আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক ব্যুরোর এ প্রতিনিধিদলটি সোমবার বাংলাদেশ সফরে আসে। আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত তারা দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখবেন।

এরই অংশ হিসেবে রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি খাতের উৎপাদন ও প্যাকেজিং পদ্ধতি এবং শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ দেখতে বুধবার খুলনা যাচ্ছে তারা।

এ প্রতিনিধিদলে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ দপ্তরের (ইউএসটিআর) ডেপুটি অ্যাসিসটেন্ট ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ কার্লোস এইচ রোমিও ও যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম দপ্তরের (ইউএসডিএল) ট্রেড পলিসি ও নেগোসিয়েশন বিভাগের আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদ মাইকেল ও’ডনোভান।

মঙ্গলবারের বৈঠকে বিজিএমইএ’র পক্ষে নেতৃত্ব দেন সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান।

বৈঠক শেষে কার্লোস এইচ রোমিও বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বৈঠক প্রসঙ্গে বলেন, ‘জিএসপি ও শ্রম ইস্যু নিয়ে বিজিএমএই’র সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ’

অবশ্য বিজিএমইএর সঙ্গে আগেও এসব ইস্যু নিয়ে বৈঠক হয়েছে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবারের বৈঠককে ‘সন্তোষজনক’ উল্লেখ করে কালোর্স রোমিও জানান, বৈঠকের বিস্তারিত এখনই প্রকাশ করা যাবে না। এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে তাদের দপ্তরে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

বিজিএমইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘দুইটি বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কারখানায় কাজের পরিবেশ এবং ন্যূনতম মজুরি বিষয়ে আমাদের অবস্থান তারা জানতে চেয়েছে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘এ দলটি খুবই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন। তাদের প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্রে বেশ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। ’

ফারুক হাসান আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, তৈরি পোশাক প্রস্তুত কারখানায় সর্বনিম্নের ৬ ও ৭ নম্বর গ্রেডের শ্রমিকদের বেতন ছাড়া অন্য গ্রেডগুলোতে আশেপাশের দেশের চেয়ে আমরা অপেক্ষাকৃত বেশি বেতন দিচ্ছি। একেবারেই নতুন ও অনভিজ্ঞ শ্রমিকরা ৬ ও ৭ নম্বর গ্রেডে যোগ দেয়। কিছুদিন কাজ শেখার পর তাদের বেতন পরবর্তী গ্রেডে চলে যায়। ’

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরের জন্য খুব লাভজনক কিছু নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কারণ সেদেশে মোট রপ্তানিকৃত পণ্যের মাত্র দশমিক ৬ শতাংশ কোটামুক্ত সুবিধার আওতায় রপ্তানি হয়। বাকি পুরোটাই যায় অন্যদেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে। ’

তবে কার্লোস এইচ রোমিও বলেন, ‘জিএসপি সুবিধা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য প্রবেশের জন্য শ্রমমান যেকোনো দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ’

যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রতিনিধিদলের সফর সম্পর্কে ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শ্রম অধিকার সংগঠন সলিডারিটি সেন্টারের আবাসিক প্রতিনিধি ডেভিড জন ওয়ালেস জানান, বাংলাদেশ নতুন করে জিএসপি সুবিধা পেতে যে আবেদন করেছে সে ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত নিতে উচ্চ পর্যায়ের এ প্রতিনিধি দল ঢাকা এসেছে।

তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাকশিল্প ও চিংড়িখাতে শ্রমিকের প্রাপ্য  মজুরি ও অন্যান্য ন্যায্য অধিকার কতটা নিশ্চিত করা হচ্ছে তা সরেজমিন দেখে তার ভিত্তিতেই প্রতিবেদন দেবে প্রতিনিধিদলটি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, ২৭ জুলাই ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।