ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্যের প্রয়োজনে মুদ্রানীতি ও ঋণনীতির পাশাপাশি শিল্পবান্ধব নীতি মালা তৈরি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ লক্ষ্যে শিগগিরই ব্যাংকগুলোর নির্বাহীদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি এ কে আজাদের নেতৃত্বে ১০ পরিচালকের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় গভর্নর এ তথ্য দেন।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. নজরুল হুদা, জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী, মুরশিদ কুলী খান ও নির্বাহী পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
ড. আতিউর বলেন, শিল্প খাতে চলতি মূলধনকে আরও সহনীয় ও উদ্যোক্তাবান্ধব করার লক্ষ্যে একটি নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে।
সভায় বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সাম্প্রতিক অবস্থা এবং ঋণের সুদ হারের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করার ফলে ব্যাংকগুলো কর্তৃক পূর্বের চেয়ে কিছুটা উচ্চহারে সুদ আরোপের বিষয়টি নিয়ে আলোচিত হয় ।
তিনি বলেন, বিশ¡ব্যাপী আর্থিক মন্দার পরেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের গৃহীত নজিরবিহীন নীতি-পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের আর্থিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে । তাই বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই।
একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারকে স্থিতিশীল রাখারও আশ¡াস দেন তিনি।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে পর্যাপ্ত জাতীয় সঞ্চয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং বৈদেশিক ঋণের সহজলভ্যতা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার ও সরকারি ঋণকে একটি সীমার মধ্যে রাখা হয়েছে ।
কৃষিজীবী, উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ীসহ সর্বন্তরের জনগণের কর্মকা-ের কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সুস্থ ও বর্ধিত ধারাতে রয়েছে দাবি করে ড. আতিউর বলেন, ‘এ ধারা অব্যাহত থাকলে জিডিপির প্রকৃত প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে ৭ শতাংশের কাছাকাছি হবে।
আগামী বছর তা ৭ শতাংশ অতিক্রম করবে বলেও তিনি আশা করেন।
তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারি নীতি নির্ধারকরা ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের সহযাত্রী ও সহযোগী। কোনওভাবেই প্রতিপক্ষ নয়।
এফবিসিসিআই-এর সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদ হার বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে সার্বিক ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
ঋণের সুদ হার বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তার সঙ্গে উৎপাদন খরচও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ব্যাংকগুলো উৎপাদনমুখী বিভিন্ন খাতে সাড়ে ১৬ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত সুদে ঋণ বিতরণ করছে। অনেক সময় তারল্য সঙ্কটের কথা বলে ঋণও দিচ্ছে না।
এসব বিষয় নিয়েই গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করতে আসা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গভর্নর বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। ’
উল্লেখ, গত ৯ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সুদ হারের সর্বোচ্চ সীমা প্রত্যাহার করায় ব্যাংকগুলো আরও বেশি সুদ নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১১