ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাঞ্ছারামপুরে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ

রিয়াজ রায়হান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০১১
বাঞ্ছারামপুরে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুর্গারামপুর গ্রামে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের পল্লী ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের আওতায় ৩০০জন উপকারভোগীর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ১৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।

দুর্গারামপুর গ্রামে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার এ ঋণ বিতরণ করা হয়।



এ ঋণ বিতরণ করেন বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স)
ময়নাল হোসেন চৌধুরী।

ঋণ গ্রহণকারী ৩০০ জন উপকারভোগীর মধ্যে পুরাতন ১০৬ জনের মাঝে জনপ্রতি ৭ হাজার ৫০০টাকা করে মোট ৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং নতুন ১৯৪ জনকে ৫ হাজার টাকা করে ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

এ ঋণের উপকারভোগীরা সবাই নারী।

ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে ময়নাল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘এ ঋণ দেওয়া হয়েছে অতিদরিদ্র মানুষকে আর্থিকভাবে সচ্ছল করতে। এ ঋণ নিয়ে কেউ যদি একমুঠো ভাত ভালোভাবে খেতে পারেন তাতেই এই ঋণ বিতরণের সার্থকতা। ’

তিনি ঋণ গ্রহণকারী সকল মাদের আহ্বান জানান মাদকের ছোবল থেকে তারা যেনো তাদের সন্তানদের দূরে রাখেন।

ময়নাল হোসেন চৌধুরী জানান, এঋণ আদায়কৃত অর্থ পুনরায় দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন ওই অর্থ গ্রহণ করে না।

তিনি জানান, ভবিষ্যতে ঋণের পরিধি বাড়ানোর চিন্তা আছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পায়রাকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গনি তালুকদারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকরা।

বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের এ প্রকল্পের আওতায় বিতরণকৃত ঋণ আদায়ের হার শতভাগ।

উল্লেখ্য, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের বর্তমান মূলধন ৪৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। ঘুর্ণায়মান পদ্ধতিতে ২০১০ এর ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩হাজার ১৫৮জন উপকারভোগী দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের মধ্যে ৩৩ প্রকার স্কিমের আওতায় ১ কোটি ৭৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের এই ঋণ বিতরণ কর্মসূচি দেশের দরিদ্রদের মাঝে একমাত্র সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ কার্যক্রম। ঋণ নেওয়ার প্রথম তিন মাসে কোনো কিস্তি আদায় হয় না। চতুর্থ মাস থেকে কিস্তি আদায় হয়। ওই কিস্তির অর্থই আবার ঋণ আকারে দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন তা গ্রহণ করে না।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ৩ হাজার ৪৫৮জন দরিদ্র ও অতিদরিদ্র লোকদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্ব^ী করতে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ৫২টি গ্রামে এ ঋণকার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

এদিকে ঋণ পেয়ে আনন্দিত ৩০০ উপভোগী নারী। ঋণ পাওয়ার আনন্দে প্রতিক্রিয়া তারা সাবই বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সাফল্য কামনা করেন।

মিরপুর গ্রামের সাফিয়া খাতুন জগন্নাথপুর গ্রামের আয়েশা বেগম, সদর ইউনিয়নের করুনা রানী, ঋণ পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বাংলানিউজকে বলেন, ঋণের জন্য অনেক জায়গায় গিয়েছি। কোথাও সুদ ছাড়া ঋণ পাইনি। সবাই চড়া সুদে ঋণ দিতে চায়। কিন্তু বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন বিনা সুদে ঋণ দিচ্ছে। সুদ না থাকায় আমরা পুরো টাকাই কাজে লাগাতে পারবো। ফলে স্বাবলম্বী হতে এ টাকা আমাদের অনেক কাজে লাগবে।

এর আগে, এ ফাউন্ডেশেনের আওতায় উপজেলার পাহাড়িয়া কান্দি এবং দুর্গারামপুর গ্রামে দরিদ্র মানুষের মাঝে ২০০টি স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি লেট্রিন বিতরণ করা হয়।

এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ফ্রি ফাইডে ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎক দিয়ে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়।

২০০৫এ ফাউন্ডেশ ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে। মঙ্গলবার ২২তম ঋণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হলো।

বাংলাদেশ সময় ১৪২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।