ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

মবিল যমুনা ও এমআই সিমেন্টের তালিকাভুক্তি

৬ মাস পর্যন্ত শেয়ার কেনার শর্ত সরকারের

জেবুন নেসা আলো, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১১
৬ মাস পর্যন্ত শেয়ার কেনার শর্ত সরকারের

ঢাকা: স্টক এক্সচেঞ্জে মবিল যমুনা ও এমআই সিমেন্টের তালিকাভুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সরকারের জুড়ে দেওয়া শর্ত পূরণ নিয়ে এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।



নির্ধারিত মূল্যের নিচে নামলে পূর্বনির্ধারিত এক মাসের পরিবর্তে ছয় মাস পর্যন্ত শেয়ার কিনতে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে কোম্পানিগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু কোম্পানিদু’টি এ শর্ত মানতে রাজি নয়।

জানা যায়, অতিরিক্ত প্রিমিয়াম নেওয়ার অভিযোগে গত ২৩ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী বুকবিল্ডিং পদ্ধতি স্থগিত করে দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মবিল যমুনা ও এমআই সিমেন্টের আইপিও কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। কিন্তু এর আগেই আইপিওতে অংশ নেওয়া বিনিয়োগকারীদের বিপুল অর্থ কোম্পানিগুলোর কাছে আটকে পড়ে।

পরে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এসইসি এ দুটি কোম্পানিকে বাজারে আসার জন্য একটি শর্ত বেঁধে দেয়। তা হলো- লেনদেন শুরুর প্রথম ৩০ কার্যদিবস শেয়ারের দর নির্ধারিত মূল্যের নিচে নামতে পারবে না। এ শর্তে রাজি হয়েই কোম্পানিদু’টি তাদের আইপিও কার্যক্রম শেষ করে।

তবে তালিকাভুক্তির পর্যায়ে এসে নতুন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। কোম্পানির শেয়ারের দর প্রাথমিক দরের নিচে নামলে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কোম্পানি দু’টিকে কিনে নেওয়ার শর্তও দিয়েছে এসইসি। কিন্তু লেনদেনের সময় প্রাইমারি সেকেন্ডারি বিও অ্যাকাউন্ট বোঝা অসম্ভব নয়।

এমনকি ডিএসই ও সিএসইর পওে তা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে শেয়ারের দর পড়ে গেলে ঢালাওভাবে কোম্পানিকে শেয়ার কিনতে হবে। অর্থাৎ ওপেন বাই দিয়ে রাখতে হবে। ফলে ডিএসই ও সিএসইও এসইসির এই শর্তে তালিকাভুক্তি করতে রাজি হচ্ছে না।

একমাসের েেত্রই যেখানে ডিএসই ও সিএসইর দ্বিমত, সেখানে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক চিঠিতে কোম্পানি দু’টিকে ছয় মাসের জন্য শেয়ার কেনার নিশ্চয়তা দিতে বলা হয়েছে। ফলে তালিকাভুক্তি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আরও জটিলতা। আবার তালিকাভুক্ত না হলে আইপিওর টাকা বিনিয়োগকারীদের ফেরত দেওয়াও কোম্পানির জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

ইতোমধ্যে কোম্পানি দু’টি আইপিও কার্যক্রম থেকে শুরু করে প্রিমিয়ামের ট্যাক্স, ডিএসই ও সিএসইর চার্জসহ এ পর্যন্ত বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করেছে।

সরকারের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে খুব শিগগিরই এসইসি কোম্পানি দু’টির সঙ্গে আলোচনায় বসবে বলে জানা গেছে। কোম্পানি দু’টি তাদের তালিকাভুক্তির জটিলতা নিয়ে ডিএসই ও সিএসইর সঙ্গে একাধিকবার আলোচনাও করেছে। দুই স্টক এক্সচেঞ্জে আবারো কোম্পানি দু’টির তালিকাভুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসবে।

এ ব্যাপারে ডিএসইর প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী বলেন, এসইসির শর্ত অনুযায়ী কোম্পানিদুটিকে তালিকাভুক্ত করা যাচ্ছে না। আমরা এখনও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেইনি।

তিনি আরও বলেন, শর্তানুযায়ী দু’টি কোম্পানিকে বাজারে আসার সুযোগ দিলে তা একটি খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি করবে। অন্যান্য কোম্পানিও এ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। সকল স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব।

এ ব্যাপারে সিএসইর প্রেসিডেন্ট ফখরুদ্দীন আলী আহমদ বলেন, ‘এসইসির শর্তানুযায়ী প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি বিনিয়োগকারী আলাদা করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে এ দায়িত্ব আমরা নেব না। ’

এদিকে, ডিএসইর নিয়ম অনুযায়ী আইপিও আবেদন গ্রহণের তারিখ থেকে ৭৫ দিনের মধ্যে তালিকাভুক্ত হতে হবে। কিন্তু দুই কোম্পানির ক্ষেত্রে ৬০ দিন পার হয়ে গেছে। এখনো তালিকাভুক্তির ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

কোম্পানি দু’টির মধ্যে মবিল যমুনার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারে প্রিমিয়াম নেওয়া হয়েছে ১৪২ টাকা ৪০ পয়সা। কোম্পানির শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫২ টাকা ৪০ পয়সা।

এমআই সিমেন্টের ১০ টাকা ফেসভ্যালুর শেয়ারে প্রিমিয়াম নেওয়া হয়েছে ১০১ টাকা ৬০ পয়সা। কোম্পানির শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১১১ টাকা ৬০ পয়সা।

কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে এলায়েন্স ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘন্টা, ১০ মার্চ ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।