ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

দুই মন্ত্রণালয়ের কঠোর সমালোচনা

লিবিয়া ফেরত বাংলাদেশিদের সাহায্যে ফান্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে এফবিসিসিআই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১১
লিবিয়া ফেরত বাংলাদেশিদের সাহায্যে ফান্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে এফবিসিসিআই

ঢাকা: লিবিয়া ফেরত বাংলাদেশিদের সাহায্যে তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে ব্যবসায়ীদের বৃহত্তর সংগঠন এফবিসিসিআই। এ জন্য সরকারকে প্রস্তাবও দিয়েছে তারা।



বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ব্যবসায়ীদের বৃহত্তর সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত ‘উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমান প্রোপটে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সংগঠনের সভাপতি একে আজাদ এ কথা জানান।

একে আজাদ বলেন, ‘লিবিয়ায় বাংলাদেশিদের সাহায্যে ব্যবসায়ী সকল সংগঠন মিলে একটি ফান্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে সরকারকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সরকারের কাজ আমাদের এ উদ্যোগের কথা শুধুমাত্র তাদের কাছে পৌঁছানো।

এদিকে লিবিয়ায় আটকে পড়া অভিবাসী বাংলাদেশিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন। একই সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনার পর তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছে।

আলোচনা সভায় লিবিয়ার ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করে তারা বলেন, ‘লিবিয়া থেকে এ পর্যন্ত যতো লোক দেশে ফিরেছেন তারা নিজেদের উদ্যোগে ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে এসেছেন। সরকার নিজ উদ্যোগে এখনো একটি লোকও নিয়ে আসতে পারেনি। ’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

সিপিডি’র ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন,  ‘লিবিয়ার এ দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বেশ প্রভাব পড়বে। ইতিমধ্যে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। রেমিট্যান্স আগের মাসের চেয়ে ফেব্রুয়ারিতে অনেক কম এসেছে। বাংলাদেশের গত বছর রেমিটেন্স এসেছিল ১১ মিলিয়ন ডলার। বর্তমানে সরকারের প্রথম কাজ হচ্ছে লিবিয়ার দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য শক্তিশালী ও বাস্তব কিছু উদ্যোগ নেওয়া। ’

এরজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেরও আহ্বানও জানান তিনি।

বিজিএমইএ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘লিবিয়ায় ৬০ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। এখন পর্যন্ত দশ হাজার দেশে পৌঁছেছেন। সরকার যদি সকলকে  দেশে ফিরিয়ে আনতে পারে তবে আমরা বিজিএমই এর প থেকে অন্তত ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারি। তবে এখন সবেচেয়ে বেশি প্রয়োজন যারা দেশে ফিরেছেন তাদের আর্থিক সহায়তা করা। বিদেশে যাওয়ার আগে কল্যাণ তহবিলে তারা কিছু টাকা রেখে যান। সেই কল্যাণ তহবিল থেকে সরকার অন্তত ছয় মাস তাদের চলার ব্যস্থা করতে পারে। ’

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার প্রতিনিধি আসিফ মুনির বলেন, ‘কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা লিবিয়ার ভেতরে কাজ করতে পারছে না। তারা বর্ডার এলাকায় কাজ করছে। লিবিয়ার ভেতরে কেউ যেতে পারছে না। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারকে লিবিয়ার ভেতরে কাজ করতে হবে। অভিবাসী বাংলাদেশিদের অবস্থানের খোঁজখবর নিতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার প থেকে ১ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত ছয় হাজার ৫৫৬ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আগামী ২১ মার্চের মধ্যে ১৯ হাজার ২৫৭ জনকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে বিমানবন্দরের ধারণ মতা কম হওয়ায় প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার লোক নিয়ে আসা যাচ্ছে। ’

অন্যান্যের মধ্যে ফজলুল আজিম এমপি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা তপন চৌধুরী, সিপিডি’র ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিপিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. জাফরউলাহ চৌধুরী, বিজিএমইএ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, বায়রা’র সভাপতি মুহাম্মদ আবুল বাসার, বায়রা’র মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী, এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি এমএ কাশেম, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কাশেম আহমেদ, বর্তমান পরিচালক মনোয়ারা হাকিম আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।