ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

জনবল বাড়ানোর অনুমোদন পেল এসইসি

জেবুন নেসা আলো, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১১
জনবল বাড়ানোর অনুমোদন পেল এসইসি

ঢাকা : দীর্ঘ ১১ বছর অপেক্ষার পর অবশেষে জনবল বাড়ানোর অনুমোদন পেল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। গত সপ্তাহে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে জনবল বাড়ানোর অনুমোদন দিয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এরই প্রেক্ষিতে এসইসি ৮টি পদে ৪৯ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে বলে এসইসি সূত্রে জানা গেছে।
 
জানা যায়, এসইসির জনবল কাঠামো অনুযায়ী ৮টি পদে ৪৯ জনকে নিয়োগ দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। এর মধ্যে নির্বাহী পরিচালক পদে ২ জন, পরিচালক পদে ৬ জন, উপ-পরিচালক পদে ৯ জন, সহকারী পরিচালক পদে ২০ জন, ব্যক্তিগত সহকারী পদে ৮ জন, স্টোর কিপার ১ জন, হিসাব রক্ষক ১ জন ও গাড়ি চালক ২ জন।

বর্তমানে এসইসিতে নির্বাহী পরিচালক রয়েছে ৬ জন। এর মধ্যে ওএসডি রয়েছেন এক জন। পরিচালক রয়েছেন ৯ জন। উপ-পরিচালক রয়েছেন ১৪ জন ও সহকারী পরিচালক রয়েছেন ১৪ জন। এরই মধ্যে এসইসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার সার্কুলার দিয়েছে এবং পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পরিচালক পদে দায়িত্বরত দুই জনকে নির্বাহী পরিচালক পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। পদোন্নতি প্রক্রিয়া শেষ হলে খালি পদগুলোতে পর্যায়ক্রমে নিয়োগ দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে এসইসির নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদ বলেন, ‘অর্থমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর দ্রুত গতিতে এসইসি জনবল নিয়োগের কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

জানা যায়, বাজারে অস্বাভাবিক পতন শুরু হলে গত ১৯ জানুয়ারি বাজার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পদ্মায় একটি বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে বাজারের এ পরিস্থিতির জন্য এসইসিকে দায়ী করা হয়। এক্ষেত্রে এসইসির জনবল সংকটকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী এসইসির জনবল দ্বিগুণ করার ঘোষণা দেন। গত ২৪ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রণালয় থেকে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে এসইসির জনবল দ্বিগুন করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে এসইসির জনবল বাড়ানোর সুপারিশ অনুমোদন করা হয়। ৎ
 
এসইসি সূত্রে জানা যায়, ২০০৯-২০১০ সালে পুঁজিবাজার সবচেয়ে বেশি সম্প্রসারিত হয়েছে। অধিকাংশ জেলায় ব্রোকারেজ হাউজের শাখা চালু হওয়ায় বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। সেই সঙ্গে এসইসির নজরদারির জায়গাও বেড়েছে। ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে মনিটরিং কার্যক্রম বাড়ানোরও প্রয়োজন হয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় এসইসি সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পালন করতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। প্রচুর তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু লোকবল সংকটের কারণে তদন্ত কার্যক্রম খুব সংক্ষিপ্ত সময়ে সম্পন্ন করতে হয়েছে। এতে অনেক ত্রুটি থাকলেও তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি।

দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে তদারকি করতে বর্তমানে চেয়ারম্যানসহ ও তিন জন সদস্য ও মাত্র ৬ জন্য নির্বাহী পরিচালককে নিয়ে চলছিল প্রধান কার্যক্রম। এর মধ্যে বিভিন্ন অনিয়মো অভিযোগে গত ১১ জানুয়ারি সদস্য মনসুর আলম অর্থমন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পদত্যাগ করেন। পরে ২৫ জানুয়ারী নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কবীর ভুঁইয়াকে ওএসডি করা হয়। ফলে এখন দুই জন সদস্য ও ৫ জন নির্বাহী পরিচালককে নিয়ে চলছে এসইসির কার্যক্রম।

গত ২০০০ সাল থেকে এসইসিতে লোকবল বাড়ানোর জন্য বিভিন্নভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এসইসির চেয়ারম্যান এমএ সাইদ থাকার সময় থেকেই লোকবল বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। বারবার এসইসির লোকবল বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হলেও কোনো সরকারই এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাজার যখন সবচেয়ে বেশি সম্প্রসারিত হতে শুরু করে তখন এসইসির লোকবল বাড়ানোর সুপারিশ করা হলেও নজর দেয়নি সরকার। অবশেষে বাজারে বিপর্যয় নেমে আসলে দীর্ঘ ১১ বছর পর এসইসির জনবল বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে টনক নড়েছে সরকারের।

তবে শেষ সময়ে এসে সরকারের এ উদ্যোগকে রোগী মারা যাওয়ার পর ডাক্তার আসিল বলে মন্তব্য করেছেন এসইসির একাধিক কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময় : ২১৪২ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।