ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

জনপ্রিয়তা বাড়ছে ব্যাংক কার্ডের, বাড়ছে ঋণের পরিমাণ ও প্রতারণাও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১১
জনপ্রিয়তা বাড়ছে ব্যাংক কার্ডের, বাড়ছে ঋণের পরিমাণ ও প্রতারণাও

ঢাকা: দেশে বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ব্যাংকের কার্ড। দিন দিন এর চাহিদাও বেড়েছে।

তবে পৃথকভাবে কার্ডের সুদের হার হওয়ায় গ্রাহক হয়রানীও বাড়ছে।

ব্যাংক ভেদে এ সূদের হার ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়া কার্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে কার্ডভেদে চার্জ ধরা হয়। বছরে ২৫০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে এ চার্জ।

ব্যাংকগুলো যে সব কার্ড ছাড়ছে তার মধ্যে রয়েছে ডেবিট কার্ড, এক্সপ্রেস কার্ড, এটিএম কার্ড, গিফট কার্ড, মাস্টার কার্ড, ট্রাভেল কার্ড, ভিসা কার্ড, ক্রেডিট কার্ড এবং প্রি-পেইড কার্ড।

তবে দেশে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড।

মধ্যাম আয়ের মানুষ এর বেশিরভাগ গ্রাহক। এসব কার্ডের বিনিময়ে ব্যাংকগুলো ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে। ফলে কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়ছে। সেই সঙ্গে কার্ড ব্যবহারের েেত্র অনেকেই আবার প্রতারণার শিকার হতে হচ্ছে, এমন অভিযোগ কার্ড ব্যবহারকারীদেরই।

এদিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, কখনো কখনো কার্ডের অনৈতিক ব্যবহারের মাধ্যমে একটি সংঘবদ্ধ চক্র তুলে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় এটিএম বুথে নেটওয়ার্ক না থাকা বা টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে গ্রাহকদের সমস্যায় পড়তে হয়।

বাংলাদেশের কার্ডের ইতিহাসে প্রথম কার্ডের সূচনা করে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। গ্রিনলেজ ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের কর্তৃত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রায় এক দশক আগে দেশে কার্ডের ব্যবহার গ্রাহকদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলে।

পরে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকসহ অন্যান্য অনেক ব্যাংকই এ সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়।

দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের কার্ডের গ্রাহক রয়েছে প্রায় ২ লাখ। ব্র্যাক ব্যাংকের রয়েছে ৫০ হাজার গ্রাহক। সিটি ব্যাংক এবং ইস্টার্ন ব্যাংকেরও রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার করে গ্রাহক।

এছাড়াও ঢাকা ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংকও তাদের মার্কেট শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। প্রথম ৫-৬ বছর কার্ডের চাহিদার প্রবৃদ্ধি ছিল অনেক। বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড বিভাগ সূত্রে জানা যায়, যে ব্যাংকগুলো আগে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার ক্রেডিট কার্ড সরবরাহ করতে পারত তারা এখন মাত্র ১ হাজার সরবরাহ করতে পারছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশে অর্থনৈতিক মন্দায় কার্ডের ভূমিকা অনেক। কারণ কার্ড ব্যবহারের কারণে মানুষ অতিরিক্ত ঋণের আওতায় পড়ে যায়। অনেক সময় দেখা যায়, গ্রাহক তার আয়ের থেকে অতিরিক্ত ঋণ করে যা একটি দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো নয়। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, গ্রাহকের যখন ঋণ নেয়ার সুবিধা থাকে এবং এতে কোনো তদারকি না থাকে তখন স্বাভাবিকভাবেই মানুষ অতিরিক্ত ঋণ করে থাকে।

ভিসা কার্ড: ভিসা কার্ডের গ্রাহকরা এ কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বিশ্বের যে কোনো জায়গার ভিসা লোগো সম্বলিত বুথ থেকে টাকা কিংবা ডলার তোলা এবং কেনাকাটা করা যায়।

ক্রেডিট কার্ড: ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক এ কার্ডের বিনিময়ে ব্যাংকভেদে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারে। এেেত্র প্রতি মাসে সুদের হার ২ শতাংশ। ক্রেডিট কার্ডের বিনিময়ে গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে টাকা না থাকলেও সে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারে। ব্যাংকগুলো বিভিন্ন নামে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। যেমন গোল্ড কার্ড, সিলভার কার্ড, ক্রিকেট কার্ড, পিকচার কার্ড এবং ইন্টারন্যাশনাল কার্ড।

ডেবিট কার্ড: এ কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহক তার জমা রাখা অর্থ এটিএম বুথ থেকে সহজেই তুলতে পারে। এ কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকদের টাকা তুলতে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। এ ধরনের কার্ডের সূচনার আগে গ্রাহকদের অনেক সময় অপো করে টাকা তুলতে হতো। ফলে টাকা তোলার কাজ সহজ করতে এ কার্ডের ভূমিকা অনেক। তাছাড়া কেনাকাটার ক্ষেত্রেও এ কার্ডটি ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে গ্রাহক একসঙ্গে ব্যাংকভেদে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত তুলতে পারে এবং কেনাকাটার ক্ষেত্রে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারে। ডেবিট কার্ডের মধ্যে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ডেবিট কার্ড, ফ্যামিলিংক এড অন কার্ড, ট্রাভেল কার্ড, লাইফ স্টাইল কার্ড, প্রি-পেইড কার্ড।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad