ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

দাম বাড়ছে ডলারের, বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি কমছে রিজার্ভ

সোহেল রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১১

ঢাকা: দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে মার্কিন ডলারের দাম বাড়ছে। এতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ার পাশাপাশি কমছে রিজার্ভ।



কারণ ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় আমদানি ব্যয় যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে আমদানি করা পণ্যের মূল্যও। ফলে মুদ্রাস্ফীতির ওপর চাপ বাড়ার পাশাপাশি ভোক্তা শ্রেণীর ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ কথা জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গত জুনে অভ্যন্তরীণ বাজারে ডলার ও টাকার গড় বিনিময় মূল্য ছিল ৬৯ টাকা ৫০ পয়সা। বছর শেষে অর্থাৎ গত ৩০ ডিসেম্বর এ বিনিময় মূল্য বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ টাকা ৭৫ পয়সা। আর চলতি মাসে এ বিনিময় মূল্য আরও বেড়ে ৭১ টাকা ১৫ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।
 
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর অভ্যন্তরীণ বাজারে ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে
ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি কমে আসায় মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান হ্রাস পাচ্ছে।
 
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর ২০১০) আমদানি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ডলারেরও বেশি। এর আগের অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় তা ৩৬ শতাংশ বেশি।

অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে বিবিধ পণ্যের দাম বাড়ার কারণে এ আমদানি ব্যয় বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
 
এদিকে শুধু ডলারের বিনিময় মূল্যই বাড়েনি, বাজারে ডলারের এক ধরনের সঙ্কটও রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে যে কথাটা বাজারে চাউর রয়েছে তা হচ্ছে, শুধু আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি নয়, সম্প্রতি পুঁজিবাজার থেকে যে পরিমাণ অর্থ উধাও হয়েছে তা ডলারের মাধ্যমে বাইরে পাচার হয়ে গেছে। ডলার সঙ্কটের এটাও একটা কারণ।
 
এদিকে ডলার সঙ্কটের কারণে প্রতিনিয়তই রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোকে ডলার সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে রিজার্ভও কমে যাচ্ছে।

গত ডিসেম্বর শেষে যেখানে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১১৭ কোটি ডলার, এ মাসের ২৫ তারিখে তা নেমে এসেছে ১ হাজার ৩৯ কোটি ডলারে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এরই মধ্যে একাধিক চেম্বার ও ব্যবসায়ী সংগঠন এটাকে স্থিতিশীল রাখার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

এর মধ্যে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অভ্যন্তরীণ বৈদেশিক মুদ্রার বাজারকে ‘অস্থিতিশীল’ হিসেবে উল্লেখ করে রিজার্ভ, ডলার বিনিময় হার ও সুদের হার স্থিতিশীল রাখার জন্য সরকারের প্রতি তিন দফা অনুরোধ জানিয়েছে।  

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে ডলারের সঙ্কট হওয়ার কোনও কারণ নেই। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর চাহিদার যোগান দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যেদিন বিপিসি’র পেমেন্ট বা খাদ্য আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে হয় সেদিন একটু বেশি চাপ পড়ে।

এছাড়া ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে বাজারে ডলারের যোগান দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকেও তাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের উৎসসমূহকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।